নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় স্ত্রী ও আড়াই বছরের কন্যা সন্তানকে ধারালো ছুরি দিয়ে হত্যার পর নিজের পেটে ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন জিয়ারুল ইসলাম(৩০) নামে এক ব্যক্তি। বুধবার দুপুরে উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নিমোজখানার হরতকিতলা নামকস্থানে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে তার ১ মাস বয়সী শিশু সন্তান ইয়াছিন তার শাশুড়ি বিলকিস বেগম ও ঘাতক জিয়ারুল নিজেই। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত তিনজনকে উদ্ধার করে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতরা হলেন জিয়ারুলের স্ত্রী রত্না বেগম(২৫) ও আড়াই বছর বয়সী মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার। ঘাতক জিয়ারুল ইসলাম উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের চান্দিনাপাড়া এলাকার সুমারু মামুদের ছেলে। সে তার শশুরবাড়ী নিমোজ খানার হরতকী তলায় ৪ বছর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে স্বামী জিয়ারুলের সাথে তার স্ত্রী রত্না বেগমের পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া লাগে। ঝগড়ার এক পর্যায়ে জিয়ারুলের স্ত্রী রত্না বেগম তার আড়াই বছরের কন্যা সন্তান ইয়াছমিনকে নিয়ে বাড়ীর বাইরে চলে আসেন। এ সময় রত্না বেগমের মা বিলকিস বেগমও তার এক মাস বয়সী নাতীকে কোলে নিয়ে বাড়ীর বাইরে হরতকি তলার রাস্তায় আসেন। এ সময় জিয়ারুল বাড়ী থেকে ধারালো ছুরি নিয়ে তার শাশুড়ির কোলে থাকা শিশু সন্তানকে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেন। এ সময় তার শাশুড়ি শিশুটিকে আনার জন্য এগিয়ে গেলে জিয়ারুল ছুরি দিয়ে তার শাশুড়িকে কোপাতে থাকেন। এ সময় তার শাশুড়ির বা গালে ও পিঠে ছুড়ির কোপ লাগে। তার শাশুড়ি দৌড়ি জমিতে নেমে বাচ্চাটিকে পানির ভিতর থেকে উদ্ধার করেন। এ সময় জিয়ারুলের হাতে থাকা ধারালো ছুড়ি দিয়ে সে তার আড়াই বছর বয়সী মেয়ের পেটের ভিতরে ছুরি ঢুকায় দিয়ে তার নারী-ভুঁড়ি বের করে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সেই ছুরি দিয়ে তার স্ত্রীকে হত্যা করেন। স্ত্রীকে হত্যার পর জিয়ারুল ইসলাম ছুরিটি তার নিজের পেটে ঢুকায় আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তবে ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে আছেন। তার পেটের নারী-ভুরি বের হয়ে রাস্তায় পড়ে তিনি কাতরাতে থাকেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত বিলকিস বেগম তার নাতী ইয়াছিন ও ঘাতক জিয়ারুলকে উদ্ধারকে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় হরতকী তলার রাস্তার এক ধারে মা ও মেয়ের লাশ পড়ে রয়েছেন। পাশেই শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে রক্তাত্ব অবস্থায় কাতরাচ্ছেন নিহত রত্নার মা বিলকিস বেগম। রাস্তার মাঝখানে পড়ে রয়েছেন ঘাতক জিয়ারুল। এ সময় তার পেটের নারী-ভুঁড়ি বের হয়ে তিনিও কাতরাচ্ছেন। মা ও মেয়ে হত্যার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে আশে পাশের অসংখ্যক নারী-পুরুষ সেখানে ভীড় করেন।
ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদ উন নবী স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা চেষ্টা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলে তার নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্স কাজ করছে। আহত অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কি কারণে এই হত্যাকান্ড তার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন