মাঠ দখলের লড়াই চলছে সরকার দল আ’লীগ ও বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য নব পর্যায়ে আন্দোলন শুরু করেছে বিএনপি। তার সঙ্গে শামিল হয়েছে আরো কয়েকটি দল। অন্যদিকে নিষ্ক্রিয় কিছু দল সরকারি দলের দোসর। বিরোধী দলগুলো যুগপৎভাবে চূড়ান্ত আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য মাঠ দখল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা। সম্প্রতি তাদের মিছিল-মিটিংয়ে প্রচুর লোক হচ্ছে। আ’লীগ বলছে, মাঠে আমরাও আছি। সার্বক্ষণিকই দখলে রাখবো। খেলা হবে রাজপথে। তখন তারা পালানোর পথ খুঁজে পাবে না। অবশ্য, খেলা চলছে বহুদিন থেকেই। তবে, সেটা অভ্যন্তরীণ। প্রায়ই কোথাও না কোথাও অভ্যন্তরীণ হানাহানি হচ্ছে আওয়ামীদের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের বাধা ও গ্রেফতার না করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তা পালিত হচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করছে আওয়ামীরা। কোথাও কোথাও তাদের বাড়ি ভাঙচুর করছে। এমনকি রাতেও। পুলিশও তাদের মিছিল-মিটিংয়ে বাধা ও আক্রমণ করছে। বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আ’লীগাররা মিলিতভাবে বিএনপির মিছিল-মিটিং ও অফিসে ব্যাপক আক্রমণ করছে, লাঠি, ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে। তাতে অনেক লোক আহত হচ্ছে। এর সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে মিডিয়ায়। এছাড়া, যেখানে বিএনপি সমাবেশ ডাকছে, সেখানে পাল্টা সমাবেশ ডাকছে আ’লীগাররা। পুলিশ সেটা বন্ধ না করে ১৪৪ ধারা জারি করছে। এরূপ ঘটনা প্রতিদিনই হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। উপরন্তু অনবরত বিরোধী দল সম্পর্কে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। নৈরাজ্য বিস্তারে ছাত্রলীগের ভূমিকা সর্বাধিক! অবশ্য, এটা নতুন করে ছাত্রলী-আওয়ামী লীগের কর্মীদের অধিকাংশই চরম উগ্র। তাই মারপিট, ভাঙচুর ও জ্বালাও-পোড়াওয়ে বেপরোয়া। আওয়ামীদের অনেকের ভাবসাব দেখে মনে হয়, তারা বঙ্গবন্ধুর চেয়েও বড় আ’লীগার। তাই তারা নিজ দলের চেয়ে বিএনপি নিয়ে কথা বলে বেশি। কেউ কেউ বিএনপিকে নিষিদ্ধ করারও দাবি করছে! তবুও বিএনপি আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে ও তীব্রতর করছে।
অবশ্য, বর্তমান লড়াইয়ে আ’লীগ একটু প্লাস পয়েন্টে আছে। কারণ, সমগ্র প্রশাসন তার করতলগত। উপরন্তু প্রশাসনের সব গুরুত্বপূর্ণস্থানের কর্তৃত্বে আছে হেলমেট বাহিনী ও একটি বিশেষ গোষ্ঠী। সর্বোপরি ইসিও গঠন করা হয়েছে অনুগত লোকদের দিয়ে। তাই বিরোধী দলের ও নাগরিক সমাজের বেশিরভাগই ইভিএমের চরম বিরোধিতা এবং অধিকাংশ ভোটার ইভিএমে ভোট দিতে অনভিজ্ঞ হওয়া সত্ত্বেও ইসি ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আ’লীগ তাকে স্বাগত জানিয়েছে। আমজনতার আশংকা, ইভিএমের কারসাজিতেই আ’লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে। কারণ, যে ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে, সেগুলো হবে যেখানে বিএনপির অবস্থা ভালো সেখানে। তাতে সবটিতেই আ’লীগ অটোমেটিক জয়ী হবে। এছাড়া, কিছু আসন আ’লীগের ফিক্সড রয়েছে। সব মিলে তারা পুনরায় ক্ষমতায় আসবে। তাই ইসির প্রতি মানুষের যেটুকু আস্থা ছিল, তাও শেয় হয়ে গেছে। দ্বিতীয়ত: নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দল এলেও নির্বাচন হবে, না এলেও নির্বাচন হবে। হ্যাঁ, প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে না এলেও নির্বাচন আইনসিদ্ধই হবে। তবে সেটা হবে গত দু’টি জাতীয় নির্বাচনের মতো ভোটারবিহীন ও অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন। আ’লীগের আরো প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে, বন্ধু দেশ ভারত, যা তার শক্তির প্রধান উৎস। এছাড়া, দীর্ঘকাল একনাগাড়ে ক্ষমতায় থেকে অবাধে লুটপাট করে ব্যাপক অর্থের মালিক হয়েছে অনেকেই, যার কিয়দংশ আগামী নির্বাচনে ব্যয় হবে।
বিএনপি দেড় দশক যাবত ব্যাপক হামলা-মামলা, জেল-জুলম, নির্যাতন, গুম-খুনে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে! বর্তমানেও চলছে ব্যাপক নির্যাতন। প্রধান কাণ্ডারির অনুপস্থিতি তো রয়েছেই। তবুও দলটি দমেনি। উপরন্তু তাদের প্রধান শক্তি হচ্ছে, সাধারণ মানুষ। পণ্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে তাদের ঘরে চলছে চরম হাহাকার! অনেকেই সম্পদ বিক্রি করে/ঋণ করে সংসার চালাচ্ছে। সে ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে অনেকেই আত্মহত্যা করছে, কেউবা সন্তান বিক্রি করছে। তাই দল-মত নির্বিশেষে সকলের এক কথা, দাম কমাও, মানুষ বাঁচাও। সর্বোপরি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, ভয়াবহ বেকারত্ব, বিদ্যুতের ব্যাপক লোডশেডিং ও গ্যাস সংকটে মানুষ চরম অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ফলে তারা চরম ক্ষুব্ধ হয়েছে সরকারের উপর, যা যেকোন সময়ে প্রচন্ডভাবে বিস্ফোরিত হতে পারে। শ্রমিকরাও ক্ষুব্ধ, তাদের অনেকেই অবিলম্বে বেতন/মজুরি বাড়ানোর দাবি তুলেছে। এটা সম্মিলিতভাবেও শুরু হতে পারে অচিরেই। পণ্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে যতটা যৌক্তিকতা আছে, তার চেয়ে বেশি আছে ব্যবসায়ীদের বাটপারি! তবুও বাজার নিয়ন্ত্রণের কোনো তৎপরতা নেই!
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সাফ কথা, নিরপেক্ষ ও সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, মানবাধিকার রক্ষা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জাতিসংঘও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের ব্যাপারে সরব রয়েছে। সম্প্রতি সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ঢাকা সফর শেষে ব্যাপক গুম-খুনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে এসবের ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্ত ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দিয়েছেন। গত ৩০ আগস্ট গুম দিবসে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশে গুমের অভিযোগগুলো গভীরভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের উচিত গুমের অভিযোগগুলোর স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের আন্তর্জাতিক আহ্বানে সাড়া দেয়া। গুমের শিকার হওয়া পরিবারের সদস্যরা এবং বিএনপি জাতিসংঘের মাধ্যমে গুমের তদন্তের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু এটা যুক্তিসংগত নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তাই এ ব্যাপারে বড় রকমের সংকট সৃষ্টি হতে চলেছে। ইতোপূর্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে যুক্তরাষ্ট্র র্যাব ও তার ৭ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে!
যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের খড়গের ভয়ে এবং ভবিষ্যতে চাকুরি রক্ষার স্বার্থে প্রশাসন বাধ্য হয়ে নিরপেক্ষ হতে পারে। মিডিয়াও অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে নিরপেক্ষ হতে পারে। এসব হলে আওয়ামীদের মাঠ দখল করা সহজ হবে না। এ আশঙ্কায় আ’লীগের শরীকদের কেউ কেউ সরে গেছে। তারা বলছে, সরকারের ব্যর্থতার দায় নেব না আমরা। তবুও আ’লীগ বিরোধী দলের প্রধান দাবি, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে নারাজ। কারণ, সেটা হলে আগামী নির্বাচনে তাদের লজ্জাকর ভরাডুবি হতে পারে। তাই তারা সংবিধানের দোহাই দিয়ে নিজেদের অধীনেই পূর্বের ন্যায় কলঙ্কিত নির্বাচন করে পুনরায় ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে। নিশ্চিত হতে না পেরে বন্ধুদেশকে অনুরোধ করেছে, সহায়তা করার জন্য, যা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন প্রকাশ্যে বলেছেনও। অবশ্য, তিনি না বললেও ভারত তা করার চেষ্টা করবে। কারণ, দেশটি ভালো করেই জানে, বর্তমান আ’লীগ সরকারের কাছ থেকে একতরফাভাবে যে সুবিধা নিয়েছে তারা, তা থাকবে না সরকার পরিবর্তন হলে। তাই ভারত আপন ইচ্ছাতেই আ’লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনার চেষ্টা করবে। কিন্তু তাদের শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের শক্তির চেয়ে অনেক কম। তাই তাদের পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে, যা আন্দোলনকারীদের বড় প্লাস পয়েন্ট।
আগামীতে ক্ষমতায় যারাই আসুক, তাদের দেশ চালানো কঠিন হবে। কারণ, দেশ এখন ব্যাপকভাবে ঋণগ্রস্ত হয়েছে। অর্থ বিভাগের বুলেটিন মতে, গত মার্চ পর্যন্ত সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ ১২,৪৯,২৬৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩১.৪২%। অতঃপর ৫ মাস গত হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের ঋণ আরো বেড়েছে। বেসরকারিভাবেও বিপুল ঋণ রয়েছে। খবরে প্রকাশ, গত মার্চ পর্যন্ত দেশের বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ২৪.৯৮ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া, দেশীয় ঋণ তো রয়েছেই। সব মিলে দেশের ঋণের পরিমাণ জিডিপির প্রায় ৪৫% দাঁড়িয়েছে। অথচ আইএমএফ’র ‘টেকসই ঋণ কাঠামোর মানদণ্ড অনুযায়ী জিডিপির ৫৫% ঋণ ঝুঁকিপূর্ণ, যার প্রায় কাছে গেছে দেশ। তবুও সরকার আরো ৮-৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নেওয়ার চেষ্টা করছে দাতাদের কাছ থেকে। তন্মধ্যে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার আইএমএফ থেকে। আইএমএফ’র প্রাক্তন কর্মকর্তা ড. রেজা কিবরিয়া বলেছেন, কেউ চরম বিপদে না পড়লে আইএমএফের কাছে যায় না। যা’হোক, সরকারের বর্তমান চাহিদা মাফিক বিদেশি ঋণে অনেক কঠিন শর্ত থাকবে! আইএমএফ ঋণ প্রদানের আগেই কৃষি ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি হ্রাস, ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমানো ও কর জিডিপির হার ১৫%-এ উন্নীত করার পরামর্শ দিয়েছে। তাই ইতোমধ্যেই সার ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে অনেক। তাতেই মানুষের নাভিঃশ্বাস উঠেছে। এখন বাকি আছে অন্যগুলো। বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হবে অচিরেই।এটা হলে পণ্যমূল্য আরো বাড়বে। ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখন সর্বোচ্চ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক রিপোর্ট মতে, বর্তমানে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১.২৫ লাখ কোটি টাকা। কিন্তু কেউ তা বিশ্বাস করছে না। অধ্যাপক মইনুল ইসলাম বলেছেন, দেশে এখন প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকার অধিক। কিন্তু খেলাপি ঋণের পরিমাণ যেটাই হোক, তার অধিকাংশ আদায় হবে না।কারণ, এটা ভুয়া কাগজ দিয়ে নেওয়া হয়েছে সরকারের লোকদের তাগিদে। তাই দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা ছাড়া মামলা করেও কোন লাভ হবে না। অন্যদিকে, সম্প্রতি ব্যাংকের আমানত ক্রমান্বয়ে কমছে। ইতোমধ্যেই ১০টি ব্যাংক চরম সংকটে পড়েছে। এ সংখ্যা আরো বাড়বে অচিরেই। শেয়ার বাজারের অবস্থাও তথৈবচ। কর-জিডিপির হারও ১৫%-এ উন্নীত করা কঠিন। কারণ, বর্তমানে এই হার মাত্র ১০%, যা এই অঞ্চলের মধ্যে নিম্ন। তাই হুট করে ৫% বৃদ্ধি করা দুঃসাধ্য। কিন্তু সেটা যতদিন না হবে, ততদিন সরকারের ঋণ বাড়তেই থাকবে। আগামী ১০-১৬ অক্টোবর আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন হবে। তাতে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল যোগদান করবেন। তখন তিনি ঋণের আলোচনা শুরু করার জন্য আইএমএফকে অনুরোধ করবেন।
চলতি অর্থবছরে ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধের জন্য ৮৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগামী বছর থেকে মেগা প্রকল্পের ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধ শুরু হবে। সব মিলে ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধের পরিমাণ বর্তমানের চেয়ে ৪-৫ গুণ বেড়ে যাবে। অন্যদিকে, পদ্মাসেতু ছাড়া মেগাপ্রকল্পগুলোর রিটার্ন হবে শম্ভুক গতিতে। অপরদিকে, গত অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে প্রায় ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। স্বল্প দিনের মধ্যেই টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ১২%। এছাড়া, গত এক যুগে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় ৪০%। কিন্তু এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল সম্প্রতি বলেছে, বাংলাদেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন চলতে থাকলে মূল্যস্ফীতির চাপ ও বৈদেশিক ঋণ পরিষেবাব্যয় বাড়বে। এদিকে, রেমিটেন্স ও রিজার্ভও কমছে। গার্মেন্টের অর্ডারও ২৫% হ্রাস পেয়েছে। মূল্যও কমিয়ে দিচ্ছে ক্রেতারা।
টিআইবি সম্প্রতি বলেছে, চালান জালিয়াতির মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ এ পর্যন্ত ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি হয়েছে। অর্থ পাচার দেশের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ। বাজুস সম্প্রতি বলেছে, অবৈধভাবে দেশে স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে প্রতিবছর প্রায় ৭৩ হাজার কোটির টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী মরহুম মুহিতও বলেছিলেন, আগে হতো পুকুর চুরি, এখন হয় সাগর চুরি! তাই আর্থিক বৈষম্য সর্বোচ্চ হয়েছে দেশে! তবুও অপকর্মগুলো বেড়েই চলেছে সুশাসনের অভাবে। উপরন্তু জ্বালানি, কৃষি, শিল্প, দক্ষতা, যোগাযোগ, পরিবহন, দূষণ, দখল, বেকারত্ব, দারিদ্র্য, চিকিৎসা, ন্যায় বিচার, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও কর্মমুখী শিক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, দুর্ঘটনা, যানজট, নারী নির্যাতন ও বৈষম্য, মাদক, বিনিয়োগ, পর্যটন, নীল অর্থনীতি, অধিক জনসংখ্যা, আঞ্চলিক বৈষম্য, নদী ভাঙ্গন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইত্যাদি সংকট প্রকট। এলডিসি উত্তরণের সংকটও সন্নিকটে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
sardarsiraj1955@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন