বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি বা কোনো ছোটখাট দোকানে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যার নাস্তা সারছি। কিন্তু স্বস্তিতে একটু দাঁড়াবো বা খাবো সে পরিবেশ নেই। চারপাশ থেকে ভেসে আসছে নিকোটিনের ধোঁয়া। ভাবলেশহীনভাবে ধূমপান করে যাচ্ছেন তারা। অধূমপায়ী হয়েও একপ্রকার বাধ্য হয়েই গ্রহণ করতে হচ্ছে সিগারেটের বিষাক্ত নিকোটিন। আমার মতো ডাস্ট আ্যলার্জির রোগীর জন্য তা অত্যন্ত অস্বস্তিকর ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণ। পাবলিক প্লেসে ধূমপানে অনধিক ৩০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান থাকলেও তার কোনো কার্যকারিতা দৃশ্যমান নয়। এতে প্রায় প্রতিদিনই শিশু, নারী, বৃদ্ধাসহ সববয়সের অধূমপায়ীরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি এক গবেষণায় ধূমপানের কারণে বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার খবর উঠে এসেছে। জনগণের স্বাস্থ্যরক্ষায় ও পাবলিক প্লেসকে সবার জন্য উপযোগী করার লক্ষ্যে পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জরিমানা একহাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হোক এবং এ আইন বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের ১০০ গজের মধ্যে সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যাদি বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক। নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গে বড় অংকের জরিমানা নির্ধারণ করা হোক। তামাকজাত দ্রব্য সহজলভ্য হওয়ায় অল্পবয়সেই শিক্ষার্থীরা তামাকে অভ্যস্থ যেমন হচ্ছে, তেমনি তামাকের টাকা যোগাড়ে নানা অপরাধেও জড়াচ্ছে। বর্তমান বাস্তবতায় কিশোর গ্যাং নামক সামাজিক অপরাধ সংঘের ভিত্তিই রচিত হয় দলবদ্ধ সিগারেট সেবন থেকে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, কিশোর গ্যাং নিমূর্লের উদ্যোগে সফলতা অর্জন করতে হলে এই দুইয়ের ভিত্তি ধূমপানকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পাশাপাশি মানুষকে ধূমপানের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কথা জানিয়ে সচেতন করতে সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের নব্বই শতাংশ জুড়ে তামাকের ক্ষতিকর দিকটি তুলে ধরার উদ্যোগ নিতে হবে। পাবলিক প্লেসসহ সর্বত্র ধূমপান রোধে সরকারের আন্তরিক পদক্ষেপ সময়ের দাবি।
মুহাম্মদ মিজানুর রহমান
মিরপুর, ডিওএইচএস, ঢাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন