কিংবদন্তি গীতিকার, সুরকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। আজ রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টায় রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পুত্রবধূ শাহানা মির্জা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তার মৃত্যুর সংবাদে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরইমধ্যে বেশ কয়েকজন অভিনয়শিল্পী ও গায়ক-গায়িকা এবং সাধারণ জনগণ সোশ্যাল মিডিয়ায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি প্রয়াত গীতিকারের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন তারা।
চিত্রনায়ক ওমর সানী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার বাবা আর শ্বশুরের ইন্তেকালের পর আমি একজনকে বাবা বলে ডাকতাম, শ্বশুর বলে ডাকতাম। বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় নক্ষত্র, একজন বাংলাদেশ, গাজী মাজহারুল আনোয়ার ইন্তেকাল করেছেন।’
চিত্রনায়ক শাকিব খান লিখেছেন, বাংলা গানে এক অনন্য-অসাধারণ গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার আঙ্কেল আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পরম শ্রদ্ধেয় এই মানুষটির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। বর্ণিল কর্মময় জীবনে গাজী আঙ্কেল গানের বাইরে বিকশিত হয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাণ, চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক হিসেবেও। শিল্প সংস্কৃতির প্রায় প্রতিটি সেক্টরে তিনি রেখেছেন বিস্ময়কর সব সাফল্য। মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, প্রকৃতি, জীবনবোধ, প্রেম, বিরহ, স্নেহ; বৈচিত্রময় সব অনুভূতি প্রকাশে এদেশের মানুষের হৃদয়ে মনিকোঠায় আজীবন ভীষণ প্রিয় হয়ে থাকবে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের অমর সব সৃষ্টি।
কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা লিখেছেন, ‘আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় গীতিকবি, চলচ্চিত্র পরিচালক, সাংস্কৃতিক জগতের মহীরুহ গাজী মাজহারুল আনোয়ার আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর লিখেছেন, ‘দেশবরেন্য কিংবদন্তি গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গাজী চাচার আত্মার শান্তি কামনা করছি। মহান আল্লাহ গাজী চাচার পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দিন।’
এ আর মোল্লা নামে একজন লিখেছেন, তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। মহান আল্লাহ যেনো এ গুণি মানুষটাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।
শহিদুল শিবলী নামে একজন লিখেছেন, ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মহান আল্লাহ তাআলা যেন তাকে বেহেশত নসীব করেন।
ফারুক হোসাইন নামে একজন লিখেছেন, তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। মহান আল্লাহ যেনো এ গুণি মানুষটাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।
লিন্টু মুন্সী নামে একজন লিখেছেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। বাংলাদেশের একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র ঝরে গেলো।
তারেক খন্দকার নামে একজন লিখেছেন, তার গানের কথার মাধ্যমে মানুষকে সব সময় দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আল্লাহ পাক তাকে মাফ করে দিয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুক আমিন।
অনন্ত দেবনাথ নামে একজন লিখেছেন, উনার শুন্যতা অপূরণীয়, আমরা একজন গুণীজন হারালাম, তাঁর আত্মার চির শান্তি কামনা করছি।
জানা যায়, গাজী মাজহারুল আনোয়ার স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণাগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালে ২১ বছর বয়সে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ার প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান লেখেন ১৯৬৭ সালে। ওই চলচ্চিত্রের নাম ছিল ‘আয়না ও অবশিষ্ট’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন