শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) ভিসি বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে সংহতি জানানো ও দাবির অংশ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটির ক্যাফেটেরিয়া ‘ছিনিয়ে’ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে সে ক্যাফেটেরিয়া পুনরায় ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে শরীরে স্প্লিন্টার নিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে দাঁড়িয়েছে ১৬ জানুয়ারির ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী সজল কুন্ডু। ক্যাফেটেরিয়া ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি ভবনের সামনে ‘পেটে লাথি মারা বন্ধ হোক এবং সহানুভূতি নয় অধিকার চাই স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে চাই’ লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেন তিনি।
সজল কুন্ডু বলেন, “আমার আজকে এখানে অবস্থান নেয়ার পিছনে একটা ১৬ জানুয়ারি আছে। ১৬ জানুয়ারির ঘটনার প্রেক্ষিতে যে দাবিগুলো তোলা হয়েছিল, যেগুলোর আশ্বাস দেয়া হয়েছিল মূল দাবিসহ কোনোটাই তো পূরণ হয় নাই। বর্তমান এবং সাবেকদের নামে যে মামলা দেয়া হয়েছিল সেগুলোও উঠানো হয় নাই। ওই আন্দোলনের আমিও একটা অংশ ছিলাম। আমি এখন আশঙ্কা করতেছি যেকোনো সময় মামলা চালু হলে পরে আমার ওপর মামলা আসতে পারে। সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ তারা যে আশ্বাস দিয়েছিল যে দাবিগুলো বাস্তবায়িত হবে, সে দাবিগুলো বাস্তবায়িত করা হোক। পাশাপাশি আমার সাথে যে অন্যায়গুলো হয়েছে সে অন্যায়গুলো বন্ধ হোক, আমার রুটিরোজির যে ক্যান্টিন ছিল সেটা আমাকে ফিরিয়ে দেয়া হোক।”
সজল আরও বলেন, “এ বছরের জানুয়ারিতে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ক্যাফেটেরিয়ার বরাদ্দ পেয়েছিলাম। ১৫ দিনের মাথায় ১৬ জানুয়ারি আমার গুলি লাগে এবং আমার অসুস্থতা ও ক্যাম্পাসের অচলাবস্থার কারণে ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ হয়ে যায়। অপারেশনের পর ক্যাম্পাস সচল হলে আমি পুনরায় ২৪ ফেব্রুয়ারি ক্যাফেটেরিয়া ওপেন করি। ওপেন করার পরে আমি লক্ষ্য করি, যারা আমার কাজের প্রতি অনেক সন্তুষ্ট ছিলেন হঠাৎ করে তাদের কি যেন হল! নতুন-নতুন নিয়ম কানুন ও বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি হতে থাকে। কারণে অকারণে আমাকে শাসানো হতে থাকে আর বলা হতে থাকে আমি এইখানে থাকতে পারব না, আমাকে এখান থেকে বের করে দেয়া হবে। আমি সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকতাম, এই বুঝি কোন একজন স্যার আসবেন আর আমাকে শাসাতে শুরু করবেন।”
সজল বলেন, “রোজার ঈদের সময় সিকিউরিটির বিষয় দেখিয়ে প্রশাসন আমার কাছ থেকে ক্যাফেটেরিয়ার চাবি নিয়ে নেয়। ঈদের পর চাবি দেওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন তালবাহানা, নতুন নিয়ম নীতি দেখানো শুরু করে। গত ২৮ মার্চ ক্যান্টিনের পুরাতন নীতিমালা বাতিল করে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করে যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং সঠিক ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পক্ষে বেশ সাংঘর্ষিক। আমি মার খাইলাম,গুলি খাইলাম, মানসিক নির্যাতনের শিকার হইলাম। আমাকে যর্থাথ চিকিৎসা দেওয়া হল না, ক্ষতিপূরণ দেওয়া হল না, একটা চাকরি দেওয়ার কথা ছিল সেটাও দেয়া হল না। উল্টো আমার জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম, শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এই অন্যায়ের বিচার আমি কার কাছে চাইব?”
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন