বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

ধোঁয়াহীন তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং জরুরি

কর্মশালায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৫৮ পিএম

বাংলাদেশে বর্তমানে ধোঁয়াহীন তামাক সেবন করেন প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ। যা তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণকারীদের মধ্যে প্রায় ৫৮ শতাংশ! অথচ জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিবেচনা করে সিগারেট ও বিড়ি গ্রহণের হার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে যেমন গুরুত্ব দেয়া হয় ধোঁয়াহীন তামাকজাত দ্রব্যকে তেমন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। ধোঁয়াহীন তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে অতিদ্রুত স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং জরুরি।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) আর্ক ফাউন্ডেশন, ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্ক ও হেলথ ইকোনোমিকস রিসার্চ নেটওয়ার্ক (হার্ন) আয়োজিত রাজধানীর সিক্স সিজনস হোটেলে ‘বাংলাদেশে ধোঁয়াবিহীন তামাক নিয়ন্ত্রণে সম্ভাব্য নীতিমালা’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের হেলথ সায়েন্স বিভাগের গ্লোবাল পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ড. কামরান সিদ্দিকী। এসময় বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ধোঁয়াহীন তামাকের ব্যবহার ও প্রকোপ অনেক বেশি। বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে সিগারেট ও বিড়ি ব্যবহারকারীদের হার কিছুটা কমে আসলেও ধোঁয়াহীন তামাক সেবনের হার প্রায় অপরিবর্তিত আছে। ফলে এ খাতটি নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।

এসময় তিনি ধোঁয়াহীন তামাকজাত দ্রব্যে নিয়ন্ত্রণে বিশকিছু সুপারিশ করেন। যেমন, ধোয়াহীন তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ফ্লেভারের প্রচলন বন্ধ এবং উপাদান নির্ধারণ ও পর্যবেক্ষণ করা; খুচরা বিক্রিতে লাইসেন্সের প্রচলন কিংবা বিকল্প উপায় বের করা; অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্রি ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; অপ্রাপ্ত বয়স্কদের কাছে বিক্রি ও সেবন নিষিদ্ধ করা; এবং কর হার বাড়িয়ে সিগারেটের দামের সাথে সামঞ্জস্য করা যাতে যেটা ন্যূনতম ২০ শলাকা সিগারেটের সমপরিমাণ হয়।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক অধ্যাপক ড. শাকিল আহমদ। প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ড. সৈয়দ মাহফুজুল হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার সাবেক পরিচালক ড. খালেদা ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আর্ক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. রুমানা হক।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ধোঁয়াহীন তামাকজাত দ্রব্যের ৮৪ শতাংশ প্যাকেটে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা নেই। যদি থেকেও থাকে তাহলে সেগুলো খুবই ছোটো অক্ষরে লেখা হয়। আর ৩০ শতাংশ প্যাকেটে কোনো ধরনের স্বাস্থ্য সতর্কবার্তাই নেই। অথচ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে এ হার মাত্র ৭ শতাংশ।

তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে যক্ষ্মা রোগীদের ১৬ শতাংশ তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ করেন। ফলে তামাক সেবন নিয়ন্ত্রণ করলে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।

কর্মশালার একপর্যায়ে মোবাইল বার্তার মাধ্যমে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের একটি ট্রায়েলের প্রটোকল উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. রুমানা হক। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞগণ, জনস্বাস্থ্যবিদ, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, উন্নয়ন কর্মী, সাংবাদিক এবং গবেষকগণ উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন