বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে প্রকাশ্য দিবালোকে হুমায়ুন কবির নামের এক আ.লীগ নেতাকে মারধর করে জখম করেছে একই দলের তার প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনার অনেকগুলো ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
সোমবার এমন ঘটনার নিন্দা, প্রতিবাদ ও ঘটনার বিচারের দাবি জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করতে দেখা গেছে অনেককে। এরআগে রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চৌমুহনী ডিবি সড়কে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত হুমায়ন কবির বর্তমানে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, চৌমুহনী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আ.লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করা নিয়ে পৌর আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক মনির হোসেন, তার সমর্থক সোহান, লুৎফুল লাহীম মাজেদ প্রকাশ তেল রাসেল, রায়হান, বাহার ও অপুদের নিয়ে সমালোচনা করেন আ.লীগ নেতা হুমায়ুন কবির। এর জের ধরে রোববার বিকেলে হুমায়ুন কবির ডিবি রোড দিয়ে যাওয়ার পথে সোহানের দোকানের সামনে তার গতিরোধ করে মনিরও তার লোকজন। এক পর্যায়ে তারা কবিরকে সড়কে ফেলে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। হামলাকারিরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন কবিরকে উদ্ধার করে প্রথমে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আ.লীগ ও যুবলীগের একাধিক নেতা জানান, হুমায়ুন কবির দলের দূঃসময়ের কান্ডারী ও আ.লীগের নিবেদিত প্রাণ। কিন্তু দেখা গেছে সম্প্রতি বিএনপি থেকে কিছু লোকজন আ.লীগের যোগ দিয়ে দলের নিবেদিত প্রাণদের জায়গা দখলের চেষ্টা করছে। যারা হুমায়ুন কবিরকে মারধর করেছে তাদের মধ্যে সোহান, ফাহাদ শিকদার সদ্য বিএনপি থেকে আ.লীগে যোগ দেয়। এছাড়া অপুসহ অপরাপরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সথে জড়িত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চৌমুহনী পৌরসভা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক মনির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। মনির পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, একসময় দলের কার্যক্রমে হুমায়ুন কবির সক্রিয় থাকলে বর্তমানে তার ওই অবস্থা নেই। কিছুদিন ধরে তিনি আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন অশালিন পোস্ট করেন। এসব বিষয়ে আমি চট্টগ্রামের আদালতে হুমায়ন কবিরের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দায়ের করি। মামলা দেওয়ায় তিনি আমার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এর প্রেক্ষিতে গত ৩১ আগস্ট ১৪৪ধারা চলাকালিন সময় স্থানীয় সাংসদ মামুনুর রশিদ কিরনের ভাই স্বপনসহ আমি চৌমুহনী পাবলিক হলে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন হুমায়ন কবির তার লোকজন নিয়ে আমার ওপর অর্তকিত হামলা করে। এ হামলার ঘটনায় আমি বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি।
তিনি আরও বলেন, রোববার বিকেলে হুমায়ন কবিরের ওপর হামলার সময় আমি গ্লোবের বিস্কুট কারখানায় ছিলাম, যার সিসি টিভি ফুটেজ আছে। আমার দলের সোহান মাইজদীতে ছিলো। হুমায়ন কবিরের ওপর হামলার ঘটনায় আমি বা আমার কোন লোকজ জড়িত নেই বলেও দাবী আ.লীগ নেতা মনির।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, ৩১ আগস্ট আ.লীগ নেতা মনির হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি হুমায়ন কবিরের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। রোববার হুমায়ন কবিরকে পিটিয়ে জখমের ঘটনায় তিনিও থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন