বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত কক্সবাজারের মূল ভুখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন বঙ্গপসাগরে বুকে গড়ে উঠা বহুল পর্যটন সম্ভাবনাময় ও প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া। এখানে প্রায় দুই লক্ষ মানুষের বসবাস। সারাদেশে উন্নয়নের সুনামি বয়ে গেলেও কুতুবদিয়াবাসী এখনও সেই উন্নয়নের সুবিধা থেকে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। যাতায়াত, চিকিৎসা, নিরাপদ পানির সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে চরম ভোগান্তির পরও দ্বীপবাসীর মনে অস্তিত্ব হারানোর আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে বেড়িবাঁধ না থাকায়। চরম বৈরী পরিবেশ মোকাবিলা করে জীবনধারণ করে অভ্যস্ত দ্বীপবাসী। কিন্তু টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় অনেক স্থান দিয়ে সমুদ্রের লোনা পানি প্রবেশ করে। এর ফলে সাগরের পানিতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া। স্বাধীনতার পর এর আয়তন ছিল ৩২ বর্গ কিলোমিটার। সাগরে বিলীন হতে হতে বর্তমানে এর আয়তন ১৭ বর্গ কিলোমিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে এর ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে সব দিকেই ভাঙন ধরেছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধ নিমার্ণ করা হলেও নানাবিধ অনিয়মের কারণে বছর না যেতেই সাগরের পানিতে তা বিলীন হয়ে যায়। এর ফলে সাগরের লবণাক্ত পানি প্রবেশ করার কারণে চাষাবাদ, মাছচাষ, বাড়িঘর ভাঙ্গন, নিরাপদ পানিসহ নানান সমস্যায় ভুগছে দ্বিপবাসী। এই বহুল প্রাকৃতিক সম্পদের আধার চারণভূমিটিসহ এর মাটি ও মানুষকে বাঁচাতে হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রয়োজন। অন্যথায় এখানে বাঁধ সংস্কারের জন্য প্রতিবছর বাজেট দিতে হবে। বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে বাঁধ নিমার্ণে ব্যয় না হওয়ায় দ্বীপবাসীকে কড়া মাশুল দিতে হচ্ছে। কুতুবদিয়াবাসীর একটাই দাবি, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা। না হলে অচিরেই প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ দ্বীপটি বঙ্গপসাগরে বিলীন হয়ে যাবে।
খোরশেদ আলম
শিক্ষার্থী, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ঢাকা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন