জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবাদে ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় শহর জাকার্তা সহ কয়েকটি শহরে মঙ্গলবার বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। জ্বালানি খাতে বাজেট নিয়ন্ত্রণের কঠোর চাপের মুখে প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো শনিবার বলেছেন, ভর্তুকি কমানো এবং জ্বালানি মূল্য শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ বৃদ্ধি ছাড়া তার সামনে কোনো বিকল্প ছিল না। গত বছরের তুলনায় সেখানে তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে শতকরা প্রায় ৩২ ভাগ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এশিয়া ওয়ান। মঙ্গলবার এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানী জাকার্তা, সুবারবায়া, মাকাস্সার, কেন্দারি, আচেহতে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রæপ এবং শ্রমিকদের সংগঠন। পুলিশ বলেছে, এ সপ্তাহে এটাই ছিল সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। জাকার্তার বিক্ষোভে মোতায়েন করা হয়েছিল কয়েক হাজার পুলিশ। তারা পেট্রোল স্টেশনগুলোতে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে। তাদের আশঙ্কা ছিল, ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটটে পারে এসব স্টেশনে। পেট্রোল স্টেশনগুলোকে টার্গেট করা হতে পারে। শ্রমিক ইউনিয়নগুলো বলছে, জ্বালানির এই মূল্যবৃদ্ধিতে শ্রমিকরা এবং গ্রাম এলাকার গরিবরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়বেন। শ্রমিক ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা আবদুল আরিস বলেন, ঠিক এই মুহ‚র্তে শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সরকার মূল্য বৃদ্ধি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। ওদিকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সোমবারও ছোটখাট বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন স্থানে টায়ারে আগুন দিয়ে এবং সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করেন। তারা বলছেন, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির ফলে খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে অনেক। জাকার্তার বিক্ষোভে অংশ নেন হাজারো মানুষ। তারা সরকারি সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে সেøাগান দেন। একই সঙ্গে সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধিরও আহŸান জানান। সেখানে একজন বিক্ষোভকারীকে দেখা গেছে খালি গায়ে। তার পায়ে শিকল পরানো। তিনি একটি খালি পেট্রোল ট্যাংকের ওপর দাঁড়ানো। এর মধ্য দিয়ে ক্রমবর্ধমান মূল্যের ফলে যে কঠিন অবস্থায় পড়েছে মানুষ, তাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিক আদি আসমাদি (২৯)। তিনি বলেছেন, তার পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাবে অনেক বেশি। যদি জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে মজুরিও বৃদ্ধি করা হয় তাহলে কোনো সমস্যা নেই। যদি তা না করা হয়, তাহলে আমি এর বিরোধিতা করবো। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বড় অর্থনীতিতে ভর্তুকি একটি স্পর্শকাতর ইস্যু। কিন্তু তা এখন সরকার চাপিয়ে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের ওপর। কর্তৃপক্ষ বলছে, যাদের প্রয়োজন তাদের বাড়তি কল্যাণমূলক কর্মসূচির জন্য সরকার ব্যবহার করবে ২৪.১৭ ট্রিলিয়র রুপাইয়া। যারা এমন অভাবে থাকবেন তাদের অভিযোগ শোনার জন্য সরকার হটলাইন চালু করবে। সমাজকল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রী ট্রি রিসমাহারিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, অবস্থা খুবই কঠিন। কিন্তু আপনি যদি সরকারের দেয়া সহায়তা কর্মসূচির দিকে তাকান তাহলে দেখবেন, এই পরিমাণ অনেক বড়। আমরা আশা করছি এতে অভাবী মানুষের সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে। রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন