বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

টাইগারের সাথে কবর দিও আমাদের, চিরকুট লিখে ২ বোনের আত্মহত্যার চেষ্টা

আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৮:৩১ পিএম

আদরের প্রাণীর মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে হাতের শিরা কেটে ও ঘুমের ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন দুই বোন । লিখে রাখেন তিনটি চিরকুট। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার সদর পৌরসভার মুকুন্দি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ওই দুই বোনের নাম পারুল (১৬) ও শাহানা (১৭)। তারা ওই এলাকার গোলাম মোস্তফার মেয়ে। চারদিকে উঁচু প্রাচীরঘেরা দোতলা একটি বাড়িতে বাবা ও বৃদ্ধা দাদির সাথে দুই তরুণী থাকতেন বলে জানায় পুলিশ।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক হাওলাদার বলেন, চারদিকে অন্তত সাত ফুট উঁচু প্রাচীরঘেরা একশ’ শতকেরও বেশি জমি। সেই প্রাচীরের উপর লোহার গ্রিল আছে আরও পাঁচ ফুট। তার মাঝখানে একটি পুরোনো দোতলা বাড়ি। ওই বাড়িতে দাদি ও বাবার সাথে থাকতেন পারুল ও শাহানা। মা বিশ বছর পূর্বে তাদের ছেড়ে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেন। এই পরিবারটির সাথে স্থানীয় লোকজনের কোন যোগাযোগ ছিল না।

ওই তরুণী দু’জনের একমাত্র সঙ্গী হলো দেশী জাতের একটি কুকুর। তারা আদর করে ডাকতো ‘টাইগার’। একসাথে খাওয়া থেকে শুরু করে দুইবোনের মাঝখানে কুকুরটিকে রেখে ঘুমাতেন। কয়েকদিন আগে পায়ে ব্যথা পায় কুকুরটি। এই আঘাতে দুইদিন আগে মারা যায় প্রাণীটি। মারা যাওয়ার পরও কুকুরটিকে দুইবোনের মাঝখানে কুকুরটিকে শুইয়ে রাখে তারা। একজন কুকুরটিকে ফেলবে এবং অন্যজন ফেলবে না বলে।

পুলিশ দুই তরুণীর ঘর থেকে তিনটা চিরকুট উদ্ধার করেছে। তাতে লেখা আছে, ‘আমরা দুই বোন মারা গেলে আমাদের দুইজনের কবরের সাথে টাইগারকেও (কুকুর) কবর দিও। আমাদের মৃত্যুর জন্য আমাদের দাদু ও আব্বু দোষী না।’

‘সমাজ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে নিঃসঙ্গতা থেকে এই দুই তরুণী’ আত্মহত্যা চেষ্টা করেছেন বলে ধারণা পুলিশের। এই ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরির প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি। দুই বোন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশংকা জনক।

আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাঃ গোলাম দস্তগীর প্রিন্স জানান, ধারণা করা হচ্ছে এরা কীটনাশক জাতীয় কিছু সেবন করেছে। তাদের দুই বোনের হাতে আঘাতের চিন্হ রয়েছে।

স্থানীয় কাউন্সিলর বশির উদ্দিন জানান, কুকুরটি মারা যাওয়ায় কষ্ট থেকে দুই বোন আত্মহত্যা করেতে পারে। এই পরিবারের সাথে সাধারণ মানুষের কোন যোগাযোগ ছিল না।

দুই বোনের বাবা গোলাম মোস্তফা তাদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কথা বলতে রাজি হননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন