হাটহাজারী উপজেলার মুনিয়াপুকুরপাড় খন্ডইল্যাঘাটা, চট্টগ্রাম নাজিরহাট সড়কের পাশ থেকে মারুফ হোসেন সায়মন নামে এক যুবকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল ভোর ৫টার দিকে পরিবারের হাতে লাশটি তুলে দেন নাজিরহাট হাইওয়ে থানা পুলিশ। সড়ক দুর্ঘটনা সন্দেহ করে হাইওয়ে পুলিশ পরিবারের হাতে লাশ বুঝিয়ে দিলেও বাড়িতে নেয়ার পর নিহতের মাথায় দুটি ছিদ্র দেখতে পায় পরিবার। ধারনা করা হচ্ছে নিহতকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে রক্তাক্ত লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে না পাঠিয়ে তদন্তবিহীন পরিবারকে হস্তান্তর করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পরিবার ও স্থানীয়রা। পরে হাটহাজারী পুলিশ সংবাদ পেয়ে সুরতহাল তৈরি করে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নিহতের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
সরেজমিনে নিহতের পরিবারে জানান, শনিবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল থেকে তার পিতা আব্দুল মালেকের মোবাইলে পুলিশ পরিচয়ে একটি কল আসে। ছেলের সমস্যা হয়েছে দ্রুত আসতে জানানো হয় অপরপ্রান্ত থেকে। তাৎক্ষণিক নিহতের পিতা, চাচা ও মামাত ভাইসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ দেখতে পান।
নিহতের মামাত ভাই নাছির বলেন, হাইওয়ে পুলিশ তাদের জানান, হাটহাজারী থানার টহলরত পুলিশের ফোন পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা ধারনা করে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। লাশ বেশীক্ষণ রেখে দিলে সমস্যা হতে পারে বলে দ্রুত বাড়িতে নিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করতে বলেন। পুলিশের কথামতো লাশ বাড়িতে নিয়ে গেলেও আইনানুযায়ী মরদেহ হস্তান্তরের জন্য লিখিত আবেদন করতে হবে জানিয়ে পিতা ও চাচা লোকমানকে নাজিরহাট নিয়ে একটি দরখাস্ত লিখে উভয়ের সাক্ষর নেয়া হয়। এদিকে মরদেহ গোসলের উদ্দেশ্য রক্তমাখা মাথা ধৌত করতে গেলে দেখতে পায় শরীরের কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ন নাই তবে মাথার সামনে বাম পাশে ও পিছনে দুটি ছিদ্র। অনেকেই ধারনা করেন এটা সড়ক দুর্ঘটনা নয় এটা হত্যাকাণ্ড। বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় জড়ো হতে থাকে শত শত মানুষ। পরে খবর পেয়ে হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ, ইন্সপেক্টর রাজীব ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরে লাশের সুরতহাল তৈরি করে চমেক পাঠিয়ে দেন। নিহতের মামা মো. জসিম প্রতিবেদককে বলেন, এটা হত্যাকাণ্ড। গুলি করে কেউ হত্যা করেছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিন বলেন, হত্যাকাণ্ড নাকি অন্যকিছু ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর জানা যাবে। তবে গুরুত্বসহকারে পুলিশ বিষয়টি দেখছে। সব দিক থেকেই তদন্ত করা হচ্ছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার জন্য এখনো কেউ আসেনি। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, সায়মন তিন বছর আগে ওমান থেকে দেশে ফেরে। দেশে ফেরে রাজমিস্ত্রির কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাউণ্ড সিস্টেমের কাজ করত। সে সরকারহাট বালুশাহ মাজার গেইটের এস.এন সাউণ্ড সিস্টেম এন্ড লাইটিং হাউসে কাজ করত। তারা বিভিন্ন প্রোগ্রামে যেত। শুক্রবারও ফটিকছড়ি আবেদ শাহ মাজার এলাকায় একটি প্রোগ্রামে পিকআপ যোগে দোকানের ৪/৫ জন মিলে যায়। সবসময়ের মতো একসাথে ভোরে ফিরে আসার কথা। তাহলে সে একা কেন অন্যরা কোথায়? তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, সায়মন খুব শান্তস্বভাব প্রকৃতির ছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন