ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ আদম তমিজী হক বলেছেন,
পথহারা রাজনৈতিক দল বিএনপি কে নিয়ে জনমানুষের কোন মাথাব্যথা নেই। তারা কখন কোথায় কি করে বা করতে চায়, আগ্রহ নেই কারোর। তবে রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে আমার আছে। আওয়ামী লীগেরও আছে। আমরা বুঝতে চাই, আসলে তাঁরা কী করছে , কি করতে চায় ? আবারও আগুন সন্ত্রাস করে কিছু করবে, নাকি অন্য কোন ভয়াবহ পরিকল্পনা করে দেশকে অস্থিতিশীল করবে---তা নিয়ে বুঝবার দিক তো রয়েছেই।
এক নিবন্ধে তিনি এসব কথা লিখেছেন। নিবন্ধটি তুলে ধরা হল:
সেপ্টেম্বর মাসে তাদের আহুত কথিত কর্মসূচী ও ১৬টি স্পট ব্যবহারের হেতু কি, অনুসন্ধানী মন সাক্ষ্য দেয়, এমন উদ্যোগটি মুলধারার রাজনৈতিক শক্তি হয়ে জনস্বার্থের কথা বলে আসলে কোন প্রতিদিনের সমাবেশ নয়। আড়ালে অন্য কিছু থাকতে পারে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রবিবার এর সভায় বললেন, "সরকারকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।" তিনি বললেন, যারা এই দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে সেই ব্যর্থ সরকারকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বাতিল করতে হবে।"তিনি বলেন, প্রশাসনকে বলতে চাই জনগণকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না। জনগণ থেকেই আপনারা এসেছেন। জনগণের ট্যাক্সের টাকায়ই আপনাদের বেতন হয়, সংসার চলে। সুতরাং এই জনগণকে সম্মান করবেন।
২০২৩ সালে আবার নির্বাচন আসছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন সেই নির্বাচন নিয়ে পাঁয়তারা শুরু করেছে। কী পাঁয়তারা? ইভিএম দেবে। আরে ইভিএম কি? আমরাতো তোমাকেই মানি না। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকলে এই দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
প্রাসঙ্গিকভাবেই বলতে হচ্ছে, বিএনপি আহুত এই টানা কর্মসূচী দেয়া হয়েছে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়া ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও তাদের দাবী অনুযায়ী পুলিশের গুলিতে ভোলার আবদুর রহিম, নূরে আলম ও নারায়ণগঞ্জের শাওন হত্যার প্রতিবাদে।
প্রশ্ন হল, সরকারের কাছে জ্বালানি তেল নিয়ে তাদের বক্তব্য কি তা তো তুলে ধরলেন না ফখরুল সাহেব। লোডশেডিং নিয়ে কি বলতে চান তা স্পষ্ট করলেন না। অর্থাৎ জনশ্রেণির যে সকল স্বার্থ নিয়ে মনগড়া দাবী নিয়ে সমাবেশ করলেন করছেন বা করবেন, সেখানে মৌলিক দাবীগুলো নিয়ে তো কোন কথাই নেই। আলোচনাও করলেন না, করছেন না---- কথা আপনাদের সেই একটাই। হুমকী দেয়া এবং কিভাবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে ক্ষমতার মসনদে যাবেন, তার একটা মহড়া শনিবার থেকে শুরু করেছেন বলে জানান দিচ্ছেন।
মুলধারার রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে নিজেদেরকে প্রমাণ করতে চাইলে জনগণের জন্য কি কি করতে পারবেন বা চান তা স্পষ্ট করতে হবে। কিন্তু, গেল এক যুগে তা করতে পারেন নি। আপনারা জনকল্যাণে রাজনীতি করেন, তা প্রমাণ করেন। বিএনপির ১৬ স্পটে এহেন কর্মসুচীকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের রুপ হিসাবে উত্তীর্ণ হয় না। ফাঁক ফোকর আছে। তাঁদের অন্য কোন লক্ষ্য আছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সজাগ থাকতে হবে।
সূত্রমতে, রাজধানী ঢাকায় ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচী ১৬টি স্পটে হবে। খুবই সতর্ক থাকতে হবে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শেষের তিনদিন। তাঁরা পুনরায় নাশকতার পথ বেছে নিতে পারে। আওয়ামী লীগকেও রাজপথে থেকে পাহারা দিতে হবে বলে মনে করার সুযোগ আছে।
পাহারা এখন অনেক দিকেই দিতে হবে। যারা একজন বঙ্গবন্ধু ও বিশ্বসেরা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে অবমাননা করে, তাঁদেরকেও রুখতে হবে।
অনেকেই বলে থাকেন, কেন গাজীপুরের বহিষ্কৃত মেয়র জাহাঙ্গারী আলম এর শাস্তি চেয়ে এখনো পর্যন্ত লড়েই যাচ্ছি ? লড়ার সবিশেষ যুক্তি রয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কে অবমাননা যিনিই করুন, বসে থাকা যাবে না। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রত্যাশী হয়ে জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অভিরুচীকে ঝালিয়ে নিয়ে প্রমাণ করতে হবে সকলেরই। কিছুক্ষেত্রে আপোস করা যায় না, যাবে না। আমার রাজনৈতিক স্বপ্ন পূরণে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র পদের প্রতি তো কোন লাভ নেই। ব্যক্তি পর্যায়ে জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কোন দ্বন্দ্বও নেই। কিন্তু, ভবিষ্যতে আর যেন কেহ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে নিয়ে কটুক্তি না করতে পারে , তেমন দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেই রাজনীতিক হওয়ার শর্ত পূরণ করতে হবে।
একদিকে বিএনপির মত রাজনৈতিক অপশক্তি, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির প্রেতাত্মাদের অনভিপ্রেত অযাচিত কটুক্তি--- দুইটি মন্দ বা দুষ্টুদের দমন করতে হবে। সে দমন কলম দিয়ে, বক্তব্য রেখেই নিষ্পত্তি হোক। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের সাথে ছিল, আছে ও থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন