কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে (মৌলভীবাজার-কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কে) মিশন চৌমুহনী এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা জবর দখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।
গত ১১ সেপ্টেম্বর রোববার জেলা প্রশাসক ও সওজের দু’টি পৃথক টিম ঘটনাস্থলে গেলে দখলকারীদের বাঁধার মুখে পড়ে জরিপকাজ বন্ধ রেখে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। নির্মাণাধীণ মার্কেটের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার থেকে নির্দেশ উপেক্ষা করে দ্রæত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দখলকারীরা।
স্থানীয়রা জানা, মিশন চৌমুনীতে কয়েক লাখ টাকার সরকারি জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছেন ওই এলাকার প্রভাবশালী ফাতু মিয়া। অবৈধভাবে নির্মিত মার্কেটটি তিনি মসজিদ মার্কেট বলে চালিয়ে দিতে চাচ্ছেন। ফাতু মিয়া মসজিদের জমি নিজে দখল করে মসজিদের বিশাল অংশজুড়ে সড়ক ও জনপদের জায়গায় নির্মাণ করেন।
সওজের জায়গা জবরদখল করে মার্কেট নির্মাণের বিষয় জানার পর জেলা প্রশাসক ও সওজের দু’টি টিম গত রোববার ১১ সেপ্টেম্বর ঘটনাস্থলে যায়। সওজের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ বন্ধ রাখার মৌখিক নির্দেশ দেন। একইদিন সওজের সার্ভেয়ার হিটলার চাকমার নেতৃত্বে জরিপকারী টিম সরকারি জায়গা মাপতে শুরু করেন। মাপার এক পর্যায়ে মসজিদের এরিয়া মাপতে গেলে ফাতু মিয়া ও তার লোকজন উত্তেজিত হয়ে জরিপ কাজে বাঁধা দেন। এক পর্যায়ে সরকারি লোকজনের উপর হামলার চেষ্টা চালায়। এতে জরিপ কাজ বন্ধ করে জেলা প্রশাসক ও সওজ টিমের সদস্যরা ফিরে যান।
১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ফাতু মিয়া ও তার সহযোগিরা ফের মাকেটের নির্মাণ কাজ শুরু করেন এবং দ্রæত কাজ শেষ করতে অতিরিক্ত শ্রমিকও লাগিয়েছেন বলে মসজিদ কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা সদস্য জানান। তিনি আরও জানান, ফাতু মিয়া মসজিদের জায়গা দীর্ঘদিন থেকে জবরদখল করে রেখেছেন। জায়গা ফিরিয়ে দিতে চাপ দিলে সরকারি জায়গা মসজিদের বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়সল মিয়া এবং কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ জানান, মসজিদ কমিটির সভাপতি ফাতু মিয়া এককভাবে সরকারি জায়গায় মার্কেট বানাচ্ছেন। জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত টাকায় নির্মাণকাজ হচ্ছে তিনি জানান। এটা মসজিদের কোন মার্কেট বা মসজিদ কমিটিও এই কাজে সম্পৃক্ত নয়। সড়ক ও জনপদ বিভাগের সার্ভেয়ার হিটলার চাকমা জানান, মাপার এক পর্যায়ে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এমনকি মারামারি উপক্রম হয়। ফলে এমন পরিস্থিতিতে কাজ বন্ধ রেখে ফিরে আসি আমরা।
সড়ক ও জনপদের সাব অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুভাষ পুরকায়স্থ জানান, মসজিদ কমিটির সভাপতি গংরা খুবি উশৃঙ্খল। আমরা মৌখিকভাবে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেই। কিন্তু তারা আরও দ্রæত কাজ করছে। যে জায়গায় মার্কেট নির্মাণ হচ্ছে এর পুরোটাই সড়ক ও জনপদের জায়গা।
এব্যাপারে অভিযুক্ত ফাতু মিয়া জানান, তারা সড়কের জায়গা মাপতে এসে মসজিদ মাপা শুরু করেছে। তাই বাঁধা দেওয়া হয়েছে। নির্মাণাধীন মার্কেটের জায়গা তিনি মসজিদেও বলে দাবি করেন।
সওজের মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দীন জানান, আমরা মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছি। লিখিতভাবেও নোটিশ দেবো। তারপরও না মানলে উচ্ছেদ অভিযান চালাবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন