যশোরের বহুল আলোচিত রওশন আরা বেগম রোশনী হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রোশনী তার আপন বোনের ছেলের হাতে খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পিবিআই। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে রোশনীর বোন চাঁদনীর ছেলে রিয়াজুল আলম চৌধুরী হৃদয় ও তার বন্ধু মো. বুরহানকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। গত মঙ্গলবার তাদের আটক করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও লুটকৃত স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় স্বীকার করেছে, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের জন্য সে আপন খালাকে হত্যা করেছে। গত ২৯ আগস্ট শহরের আশ্রম মোড় এলাকায় নিজঘরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন রওশন আরা বেগম রোশনী ।
আটক দু’জন হলেন, উপশহরের ডি-ব্লকের মাহমুদ আলম চৌধুরী ও রোশনীর বোন রোকসানা খানম চাঁদনীর ছেলে রিয়াজুল আলম চৌধুরী হৃদয় ও তার বন্ধু উপশহর ডি ব্লকের আব্দুল হাকিমের ছেলে মো. বুরহান ।
পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, পিবিআই যশোরের একটি টিম অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার ঢাকা ভাষানটেক থানাধীন ক্যান্টনমেন্ট গ্যারিসন এলাকায় খালু ইঞ্জিনিয়র মোক্তার হোসেনের ভাড়া বাড়ি থেকে হৃদয়কে এবং বুরহানকে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামে তার মামা হরমুজ আলীর বাড়ি আটক করা হয়েছে। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মৃত রওশন আরা রোশনী গ্রেফতারকৃত আসামি রিয়াজুল আলম চৌধুরী হৃদয়ের সম্পর্কে আপন খালা। রোশনী বাড়িতে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা পয়সা কোথায় রাখে হৃদয় তা জানত। ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে হৃদয় তার বন্ধু বুরহানকে সাথে নিয়ে খালা রোশনীকে হত্যা করে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা পয়সা লুণ্ঠনের পরিকল্পনা করে।
গত ২৯ আগস্ট সকালে আসামি হৃদয় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তার বন্ধু বুরহানকে সাথে নিয়ে খালা রোশনীর বাড়িতে যায় এবং বিভিন্ন কথাবার্তা বলে। কথাবার্তার একপর্যায়ে তারা অতর্কিত ধারালো চাকু দিয়ে রোশনীর পেটে, বুকে ও গলায় উপর্যপুরি আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে লাশ ঘরে থাকা বঙ্খাটের কাঠের চালার নিচে লুকিয়ে রাখে।
এরপর তারা রোশনীর ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ও আলমারীতে থাকা স্বর্ণের ও ইমিটেশনের গহনা বের করে নিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর তারা আত্মীয়-স্বজনের সাথে মিলে চলা ফেরা করে যাতে কেউ তাদের সন্দেহ না করে। হত্যা রহস্য উদঘাটনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের তৎপরতা বৃদ্ধি পেলে তারা গ্রেফতার এড়াতে যশোর থেকে তাদের নিজ নিজ আত্মীয়ের বাড়িতে কৌশলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আসামিদ্বয়কে গ্রেফতার পূর্বক জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং তাদের দেখানো অনুযায়ী লুন্ঠিত মালামাল, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও হত্যার সময় তাদের পরনে থাকা ফেলে দেওয়া কাপড় উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত বুরহান ও হৃদয়কে বুধবার যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই এসআই স্নেহাশিস দাশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন