রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

যশোর-খুলনা মহাসড়কে ফের গর্ত

নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

যশোর-খুলনা মহাসড়কে ৩শ’ ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৮ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই ৮ কিলোমিটার অংশ জুড়ে ফুঁলে ফেঁপে ওঠে। সেই থেকে সড়কের নির্মাণ কাজ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সড়কের নির্মাণ কাজের এ অনিয়ম নিয়ে তোলপাড় হয় গোটা সড়ক বিভাগে।
পরবর্তীতে সড়কের এ অনিয়ম ঢাকতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কের ফুলে ফেঁপে ওঠা ৮ কিলোমিটার জুড়ে শুরু করে জোড়াতালির কাজ। নতুন নির্মিত সড়কটিতে একের পর এক চলতে থাকে সংস্কার কাজ। কিন্তু বিভিন্ন ভাবে জোড়াতালি দিয়েও অনিয়ম ঢাকতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। গত দু’দিনের বৃষ্টিতে সকল জোড়াতালি উঠে সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়কটিতে চলাচল রীতিমত বিপজ্জনক হয়ে দেখা দিয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
জানাগেছে, সড়কের ৮ কিলোমিটার সংস্কার করলেও গত দুই দিনের বর্ষায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে অভয়নগর ও যশোর সদরের সীমান্তবর্তী প্রেমবাগ স্কুল গেট থেকে শুরু করে বেঙ্গল রেলগেট পর্যন্ত এসকল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবে আলীপুর মজুমদার মিলের সামনে, চেঙ্গুটিয়া বাজার, রাজটেক্সটাইল মিলের সামনে, ভাঙ্গাগেট রেল ক্রসিং, নওয়াপাড়া বেতারের সামনে ও প্রেমবাগ গেটের আগে গর্তগুলো বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি করেছে। একের পর এক ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
ট্রাক চালক ইব্রাহিম বলেন, যশোর-খুলনা মহাসড়কটি নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম করায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দু’দিনের বৃষ্টিতে সড়কের মূলচিত্র ধরা পড়েছে। যে অবস্থা অচিরেই সড়কের কাজ ঠিক না করলে যানবাহন চালানো দুস্কর হয়ে পড়বে।
২০১৮ সালের মে মাসে এ সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০২০ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কাজের শুরুতেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক উন্নয়নের এ কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দরপত্রের কোন নিয়মনীতি মানেনি। তারা গোজামিল দিয়ে ইচ্ছামত কাজ চালিয়ে যায়। অভিযোগে বলা হয়েছে, ঠিকাদাররা সড়কের পুরনো বৃটিশ আমলের লোনা ধরা ইট ও খোয়া তুলে সেটাই আবার ভেঙ্গে গর্তে ব্যবহার করেছেন। যা দরপত্রে বলা হয়নি।
এছাড়া, সড়কটি ৫ ফুট গর্ত করে ভিত তৈরির নির্দেশনা থাকলেও সেই নিয়মও মানেনি। সড়কে নতুন ইট বালি, খোয়া ব্যবহার না করে খুঁড়ে উঠানো মালামালই ফের ভরাট করা হয়েছে। তাছাড়া ভৈরব নদ থেকে উত্তোলিত নিম্নমানের কাঁদাযুক্তবালি সড়কে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ফলে সড়কের নির্মাণ কাজ চলমান থাকাবস্থায় ৮ কিলোমিটার সড়ক ফুলে ফেঁপে ওঠে।
ওই সময় সরকার বুয়েটের একজন শিক্ষককে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি সরেজমিন ঘুরে সড়কের দু’পাশে ওয়ারিং করার সুপারিশ করেন। সেই সুপারিশের আলোকে সরকার পুনরায় সড়কটি নির্মাণে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করে আরও ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করেছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফ মাহমুদ জানান, পরামর্শকের সুপারিশ অনুযায়ী সড়কের দু’পাশে হার্ডসোল্ডার ওয়ারিং করা হবে। কেননা রাস্তার পাশে দেড় মিটার নিচু থাকার কারণে গাড়ির চাপ পড়ছিল রাস্তার মাঝখানে। যে কারণে সড়কের নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন