সুইডেনে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে অভিবাসনবিরোধী সুইডেন ডেমোক্র্যাটস দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভ‚ত হয়েছে। এদিকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন সুইডেনের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী মাগডালেনা অ্যান্ডারসন। সুইডেনের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের তুলনায় রক্ষণশীল দলগুলোর জোট এগিয়ে। এ অবস্থায় চ‚ড়ান্ত ফলাফলের আগেই পরজায় স্বীকার করে এই ঘোষণা দিলেন তিনি। বুধবার সুইডেনের রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্ডারসন বলেন, ‘পার্লামেন্টে রক্ষণশীলরা আমাদের চেয়ে একটি কিংবা দুটি আসনে এগিয়ে থাকবে। ব্যবধান কম হলেও এটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা। তাই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়েই পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ গত বছরে তিনি সুইডেনের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৯৯ শতাংশ নির্বাচনি এলাকার ভোট গণনা শেষ হয়েছে। তাতে দেখা গেছে মডারেট, সুইডেন ডেমোক্র্যাটস, ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাট ও লিবারেলদের জোট পার্লামেন্টে ৩৪৯ আসনের মধ্যে বিজয়ী হতে যাচ্ছে ১৭৬টিতে। অন্যদিকে ১৭৩টি আসনে জয়ী হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী মাগডালেনা অ্যান্ডারসনের নেতৃত্বাধীন মধ্য বামপন্থীরা। অ্যান্ডারসনের পদত্যাগপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হলে স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন মডারেট পার্টির নেতা উলফ ক্রিস্টারসন। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ডারসহ সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ‘আমি এখন একটি নতুন সরকার গঠন করে দেওয়ার কাজ শুরু করবো। যা হবে সুইডেন এবং দেশের সব নাগরিকদের জন্য সরকার’। ১৯৮৮ সালে গঠিত দলটি ২০১০ সালে ছয় শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে গিয়েছিল। এরপর ২০১৪ সালে ১৩ শতাংশ ও ২০১৮-র নির্বাচনে১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এবার এখন পর্যন্ত ২০.৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে তারা। এবারের নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ৩০.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে শীর্ষে আছে ২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটস। বাম, মধ্য ও সবুজ দলের সাথে মিলে তারা মধ্য-বাম জোটে আছে। আর সুইডেন ডেমোক্রেটস আছে ডানপন্থী বøকে। তাদের সঙ্গে মডারেট, ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্রেট ও লিবারেলরা আছে। তবে এরইমধ্যে অভিবাসন বিরোধী দলের দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় দল হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। চরম ডানপন্থী, ফ্যাসিস্ট ও শ্বেতাঙ্গ ক্ষমতার সমর্থকদের এক করে ১৯৮৮ সালে সুইডেন ডেমোক্রেটস দলের যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেই সময় ওই দলে নব্য নাৎসি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতরাও ছিলেন বলেন জানান সুইডেনের গথেনবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ইওহান মার্টিনসন। অবশ্য ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি গিয়ে দলটি প্রকাশ্যে নাৎসিবাদের সমালোচনা করে। তারও পরে দলটি বর্ণবাদ নিষিদ্ধ করে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে বলে জানান অধ্যাপক মার্টিনসন। ২০০৫ সালে ২৬ বছর বয়সে দলের প্রধান হয়ে জিমি আকেসন সুইডেন ডেমোক্রেটস দলের চরম ডানপন্থি ভাবমূর্তি মুছে ফেলার চেষ্টা করেন। তিনি দলকে পপুলিস্ট রাজনীতির দিকে নিয়ে যান। ২০০৮ সালে বিশ্ব আর্থিক মন্দার সময় সুইডেন ডেমোক্রেটস নিজেদের এলিট বিরোধী ও ‘সাধারণ মানুষের’ পক্ষ নেয়া দল হিসেবে পরিচিত করার চেষ্টা করেছিল বলে জানান ড্যানিয়েল লি। তিনি সুইডেন ডেমোক্রেটস দলের উত্থান নিয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন। ডিডবিøউ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন