শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের চর গোয়ালকুয়া ও তর গোয়ালকুয়া মধ্যবর্তি খালের উপর নির্মিত দুটি ব্রিজ অকেজু হয়ে মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। যেকোন সময় এ ব্রিজ ভেঙ্গে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজের ওপর দিয়ে এলাকার হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। প্রায় দুই যুগ আগে নির্মিত দুটি ব্রিজের বিভিন্ন স্থান থেকে পলেস্তরা উঠে গিয়ে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি সরু এই ব্রিজের দুই পাশের রেলিং সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়ায় যাত্রীবাহী সকল যানবাহনকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।
ইটালকুয়া গ্রামের শ্যামলাল মিস্ত্রি (৬৫) বলেন, গত কয়েক বছর যাবৎ ব্রিজটির রেলিং ও ঢালাইয়ের একাংশ খসে পড়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ব্রিজের উপর রড বের হয়ে রয়েছে কোনোমতে যাতায়াত করছি আমরা। দক্ষিণ হলইপট্টি গ্রামের বাসিন্দা শংকর মন্ডল বলেন, ৫ বছর ধরে এই ব্রিজটা ভেঙে পড়ে আছে। এই গ্রামের মানুষের যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়, আমরা শিশুদের নিয়ে যাতায়াত করতে আতংকের মধ্যে থাকি।
তরগোয়ালকুয়া গ্রামের মো. ইউনুস তালুকদার বলেন, ২৫ থেকে ৩০ বছর আগের ব্রিজ, চর গোয়ালকুয়া ও তর গোয়ালকুয়ার মাঝামাঝি দুইটি খালের ওপর ব্রিজটি নির্মিত হয়। বর্তমানে এ ব্রিজের বিভিন্ন অংশ ভেঙে যাওয়ায়, মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে এলাকার মানুষ এই ব্রিজের ওপর দিয়ে যাতায়াত করছেন। ব্রিজে যানবাহন উঠলে কেঁপে উঠে। যে কোনো সময় এটি ভেঙে পড়তে পারে।
ইটালকুয়া নুরানী মাদরাসার শিক্ষক আব্দুল কবির বলেন, আমার বাড়ি মাছুয়াখালী, আমার প্রতিদিন যাওয়া আশা করতে হয়। প্রায় ৫ বছর ধরে এই ব্রিজ দুইটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে রয়েছে, আমরা অনেক কষ্টে যাতায়াত করতেছি। মেম্বারকে এলাকাবাসী অনেক বার জানিয়েছে, তারা কোনো কর্ণপাত করছে না। আমাদের এই ৩টি গ্রামের লোকজনের একটাই পথ।
এলাকাবাসী বলেন, এই ব্রিজটি দিয়ে যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। প্রতিদিন শতশত মানুষ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা এই ব্রিজ দিয়ে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটার আগেই ব্রিজটি ভেঙ্গে নতুন করে তৈরি করা।
গোসাইরহাট উপজেলা প্রকৌশলী দশরথ কুমার বিশ্বাস বলেন, আনুমানিক ২৫-৩০ বছর আগে দুইটি ব্রিজ নির্মিত হয়েছিলো। তবে বর্তমানে ব্রিজটি চলাচলের অনুপযোগী। নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রাক্কলন প্রস্তুত করতেছি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রাক্কলনের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো হবে। আশা করছি খুব দ্রুত প্রকল্প অনুমোদন হয়ে যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন