সুনামগঞ্জের ছাতকে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ভবনের ছাদসহ আশ-পাশ এলাকায় রাতের অন্ধকারে চলে মাদক সেবন। পাশেই রয়েছে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ভবন। এ ভবনের ২য় তলা থেকে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ভবনের ছাদের দিকে থাকলেই দেখা যায় গড়াগড়ি খাচ্ছে বিভিন্ন ব্রান্ডের মদের খালী বোতল।
জানা গেছে, সরকারী গুরুত্বপূর্ণ এ ভবনে রয়েছে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, পাশেই রয়েছে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ভবন। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষাকাল জুড়েই এ কার্যালয়গুলোর আশ পাশ এলাকায় দীর্ঘ সময় থাকে জলাবদ্ধতা। এতে সেবাগ্রহীতাসহ কার্যালয়গুলোর সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও চরম দূর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে।
গত বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ভবনের ছাদে গড়াগড়ি খাচ্ছে বিভিন্ন ব্রান্ডের মদের খালী বোতল। উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেঁষে ময়লার স্তূপ আর জলাবদ্ধতা। দূর্গন্ধে নাকাল সেবাগ্রহীতারা। পরিত্যক্ত জরাজির্ণ এ ভবনেই চলছে সরকারের গুরুত্বপূর্ন কার্যক্রম। সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ নির্বাচন ভবনে প্রবেশ করতে হলে সাব-রেজিস্ট্রার ভবনের বারেন্দা হয়ে জলাবদ্ধতার কারণে ইটের উপর ভর করে ঝুকি নিয়ে উঠতে হয়। যুব উন্নয়ন অফিসে প্রবেশ করলে মনে হয় এটি কোন এক অন্ধকার আস্তানা। তবে ছাদে উঠার কোন সিঁড়ি দেখা যায়নি।
এ সময় বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র ছাতক এর সহকারী আঞ্চলিক পরিচালক আব্বাস উদ্দিন জানান, আমরা এখানে অস্থায়ী ভাবে রয়েছি। সমস্যাগুলি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। সুবিদাজনক জায়গা দেখার জন্য বলা হয়েছে। স্থায়ী ভাবে আমরা জায়গা খুঁজছি।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়েজুর রহমান জানান, আমার ভবনটি ওই ভবন থেকে আলাদা। ওই ভবনে রয়েছে সরকারের একাধিক কার্যালয়।
উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আসাদ উল্ল্যাহ জানান, ভবনের ছাদে উঠার কোন সিঁড়ি নেই। পরিত্যক্ত জরাজির্ণ ভবনেই আমরা দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। বন্যায় কার্যালয়ে গলা পরিমান পানি ছিল। তাই আসবাবপত্র প্রায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, কার্যালয়ে জনবল সংকট রয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ছাতক সাব-রেজিষ্ট্রার আয়েশা সিদ্দিকার মোবাইল নম্বার না থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ছাতক প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন তালুকদার বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভবনের কার্যালয়গুর আশপাশে জলাবদ্ধতা, ময়লা স্তুপসহ অন্যান্য সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন। এসব সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা নুরের জামান চৌধুরী বলেন, তিনি এখানে নতূন। সাব-রেজিস্ট্রারটি আইন মন্ত্রনালয়ের অধিনে থাকায় এ বিষয়ে সরাসরি তিনি কোন প্রদক্ষেপ নিতে পারছেন না।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সরকারী ভবনে মদের বোতলের বিষয়ে আমাদের অফিসারদের বলব। তিনি বলেন বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা প্রয়োজন। তারা ব্যবস্থা না নিলে আমরা দেখব।
মাদক সেবন বন্ধসহ জলাবদ্ধতা নিরশন ও দূর্গন্ধ দুরীকণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন সেবাগ্রহীতারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন