শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

দক্ষিণাঞ্চলে প্রধান দানাদার ফসল আমনের আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না

আউশের আবাদ ও উৎপাদনেও বিপর্যয়

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১:১৭ পিএম

খাদ্য উদ্বৃত্ত দক্ষিণাঞ্চলে এবার প্রধান দানাদার ফসল আমনের আবাদ এবং উৎপাদন লক্ষ্য অর্জন নিয়েও যথেষ্ঠ সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত খরিপ-১ মৌসুমেও আউশের আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। ফলে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টন উদ্বৃত্ত দক্ষিণাঞ্চলে এবার খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে অনেকটাই সংশয় কাজ করছে কৃষিবীদদের মধ্যেও। বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ১১ জেলায় এবার ২ লাখ ৪ হাজার ৬৭০ হেক্টরে আউশের আবাদ হলেও তা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর পেছনে।

চলতি খরিপ-২ মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৭ লাখ হেক্টরে আবাদের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ টন আমন চাল পাবার লক্ষ্য স্থির করে রেখেছে কৃষি মন্ত্রনালয়। কিন্তু ভরা মৌসুমে বৃষ্টির অভাবে বীজতলা তৈরী ব্যাহত হবার পরে ভাদ্রের শেষে পূর্ণিমায় ভর করে লঘু চাপ থেকে নি¤œ চাপের প্রভাবে অতি বর্ষণের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের প্লাবনে দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তির্ণ এলাকার উঠতি আউশের সাথে আমন বীজতলা ও রোপা আমনের জমি প্লাবিত হয়। ফলে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসলÑ আমনের সাথে আউশেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমনকি আমন বীজতলা বিনষ্ট হওয়ায় বরগুনার প্রায় ২০ ভাগ জমি এখনো অনাবাদী রয়েছে। বরিশাল,ভোলা,পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ঝালকাঠীতেও বীজের অভাবে আমন রোপন যথেষ্ঠ ব্যাহত হলেও কৃষি সম্প্রসাসরন অধিদপ্তর-ডিএই’র মতে বরগুনা বাদে অন্য জেলাগুলোতে কৃষকরা বিভিন্নভাবে বীজ সংগ্রহ করে রোপন প্রায় শেষ করে এনেছেন। তবে রোপনের সময় শেষ হয়ে গেলেও বরগুনাতে প্রায় ২০% সহ দক্ষিণাঞ্চলে এবার ৯৬%-এর বেশী জমিতে আমন আবাদ সম্ভব হয়নি। ফলে আমন থেকে যে সাড়ে ১৫ লাখ টন চাল পাবার কথা, সে লক্ষ্যে পৌছান নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টির অভাবে সারা দেশের মত দক্ষিনাঞ্চলেও আউশ ধানের আবাদ এবার ২ লাখ হেক্টর থেকে ১ লাখ ৭৬ হাজারে হ্রাস পায়। যা ছিল সম্প্রতিককালের সর্বনি¤œ । দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ইতোমধ্যে প্রায় সব আউশ কর্তন সম্পন্ন হলেও ৬.১৬ লাখ টন চাল প্রাপ্তির সম্ভবনা যথেষ্ট ক্ষীন। বৃষ্টির অভাবে আবাদ লক্ষ্য অর্জিত না হবার পাশাপাশি শ্রাবন ও ভাদ্রের পূর্ণিমার অতিবৃষ্টির সাথে জোয়ারের প্লবনেও বিপুল আধাপাকা ও পাকা আউশ ধানের জমি প্লাবিত হয়। ফলে বৃষ্টির অভাবে আবাদ লক্ষ্য অর্জিত না হবার পাশাপাশি পর পর দুটি প্লাবন ও অতি বর্ষণে কাঙ্খিত উৎপাদন লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগন। তবে ডিএই এখনো উৎপাদনের চুড়ান্ত হিসেব করতে পারেনি।
এমনকি বৃষ্টির অভাবে এবার সারাদেশেই আউশ আবদের পরিমান প্রায় ১২Ñ১৫% পর্যন্ত হ্রাস পায় বলে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই সূত্র জানিয়েছে। সারা দেশেই এবার দানাদার এ খাদ্য ফসলের আবাদ গত বছরের প্রায় ১৩ লাখ হেক্টরের স্থলে ১১ লাখ হেক্টরে হ্রাস পেয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই সূত্রে জানা গেছে। ফলে গত বছর আউশ ধান থেকে যেখানে ৩৪ লাখ টনের মত চাল পাওয়া গিয়েছিল, এবার তা ৩০ লাখ টনে হ্রাস পাবার আশংকার কথাও জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএই’র দায়িত্বশীল সূত্র।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন