শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্পাদকীয়

পর্যটন শিল্পের প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে

মো. আরাফাত রহমান | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:১০ এএম

পর্যটন চিত্তবিনোদন বা শিক্ষার উদ্দেশ্যে পরিভ্রমণ। বর্তমানে পর্যটন একটি উল্লেখযোগ্য সেবাখাত এবং পর্যটকদের আকর্ষণ করা বা তাদের আহার ও বাসস্থান সংস্থান, চিত্তবিনোদন ইত্যাদি একটি ভালো ব্যবসা। অনেক দেশে পর্যটন অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় ও বিদেশি মুদ্রা উপার্জনের একটি কার্যকর খাত। পর্যটনের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে অন্য যেসব ব্যবসা বিকাশ লাভ করে সেগুলো হচ্ছে স্থল, বিমান ও সমুদ্রপথে যাত্রী পরিবহন, হোটেল ও রেস্তোরাঁ, ব্যাংকিং, ট্রাভেল এজেন্সি ও ট্যুর অপারেটর কোম্পানি, গাড়ি ভাড়া প্রতিষ্ঠান ও নানারকম খুচরা পণ্যের দোকান। ফলে পর্যটনের উন্নয়ন সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে এবং এর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রতিব বছর ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পর্যটন দিবস পালিত হয়ে থাকে। জাতিসংঘের অধীনস্থ বিশ্ব পর্যটন সংস্থার প্রত্যক্ষ তত্ত¡াবধানে ১৯৮০ সাল থেকে সকল সদস্য দেশে এটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় ও পর্যটন কেন্দ্রের সাথে সেতুবন্ধন গড়ে তোলা। এছাড়াও, পর্যটনের ভূমিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উপযোগিতাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া এ দিবসের অন্যতম লক্ষ্য। বাংলা সুদূর অতীত থেকেই পর্যটকদের আকৃষ্ট করে এসেছে। বিশ্বের নানা অংশ থেকে পর্যটকরা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বাংলা ভ্রমণ করেছে। কেউ এসেছে ধর্ম প্রচারে, কেউ ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে, কেউ প্রাচীন বাংলার নানা জ্ঞানপীঠ থেকে বিদ্যার সন্ধানে আবার কেউ বা শুধুই কৌতূহল মেটাতে।

অতীতে বাংলার বিভিন্ন এলাকায় আসা কয়েকজন পর্যটক হচ্ছেন গ্রিসের প্লিনি দ্য এল্ডার, মিসরের ক্লডিয়াস টলেমায়েস টলেমি, চীনের ফা-হিয়েন ও হিউয়েন-সাং, মরক্কোর ইবনে বতুতা, চীনের মা হুয়ান ও ফেই সিন, পর্তুগালের দুয়ার্তে বারবোসা, ইতালির সিজার ফ্রেডেরিক, ইংল্যান্ডের র‌্যল্ফ ফিচ, ইতালির নিকোলা মানুচি এবং ফ্রান্সের জে.বি টেভার্নিয়ার। পর্যটন বর্তমানে যে অর্থে অর্থনীতির একটি বিশেষ খাত, সেটি তুলনামূলকভাবে খুবই সা¤প্রতিক ধারণা। বাংলাদেশে এর সূত্রপাত ঘটে ১৯৬০-এর দশকে। বিদেশ থেকে পর্যটকরা এখানে আসতেন সমুদ্র সৈকতের আকর্ষণে, এদেশের শ্যামল-সবুজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

পূর্ববাংলার নদ-নদী, বনভূমি, পাহাড়ি অঞ্চল, ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থান, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক জীবন সবই পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকায় গড়ে ওঠা পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল রয়েছে। এখানে খোলা বনভূমিতে বিচরণ করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, নানা জাতের হরিণ এবং অন্যান্য পশু-পাখি। পর্যটনের দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বেশ সুবিধাজনক। বাংলাদেশের অবস্থান ম্যাক্রো-এশিয়াটিক এয়ার ট্রাফিক করিডোরে থাকায় বিশ্বের নানা অংশ থেকে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আগত পর্যটকদের উল্লেখযোগ্য অংশকে বাংলাদেশ ভ্রমণে আকৃষ্ট করা তুলনামূলকভাবে সহজ।

স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে বাংলাদেশ সরকার দেশে পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পর্যটন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৭৩ সালে এটিকে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনে রূপান্তর করা হয়। কর্পোরেশন বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় পর্যটন খাত বিকাশের একটি পাঁচসালা পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। পরিকল্পনায় দেশে পর্যটনের প্রাকৃতিক আকর্ষণসমূহের সম্ভাবনা বিকশিত করে তোলা এবং এর মাধ্যমে অধিক পরিমাণে বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ ও দেশে তাদের অবস্থান উপভোগ্য করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর থেকে সরকার প্রতি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাতেই পর্যটন খাতের জন্য বাজেট বরাদ্দের বিধান অনুসরণ করে আসছে এবং বাজেটকৃত অর্থ পর্যটনের উন্নয়ন সংক্রান্ত নানা কার্যক্রম ও প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় করছে। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কাপ্তাই, সিলেট, রাঙ্গামাটি এবং আরও বেশ কয়েকটি স্থানে যেসব সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করেছে সেগুলো দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের ওপরে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই পর্যটকদের আকর্ষণের বহুবিধ বিষয় ও উপকরণ বিদ্যমান। রাজশাহী শহরের পদ্মা তীরে আছে বড়কুঠি ও বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর। বাংলাদেশ রেশম বোর্ড-এর প্রতিষ্ঠিত সিল্ক ফ্যাক্টরি পর্যটকের জন্য আরেকটি আকর্ষণ। রাজশাহী শহর থেকে ৫৫ মাইল দূরে অবস্থিত বাংলার মধ্যযুগীয় ইসলামিক ঐতিহ্যবাহী গৌড়ের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের প্রতœতত্ত¡ বিভাগ।

সালতানাত-এর পুরাকীর্তির মধ্যে রয়েছে দরসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসা, ধুনিচক মসজিদ, ছোট সোনা মসজি, খনিয়া দিঘি ও রাজবিবি মসজিদ। কিছু মধ্যযুগীয় হিন্দু মন্দির আছে রাজশাহী শহর থেকে ১৮ মাইল দূরত্বে পুঠিয়া নামক স্থানে। এগুলোর মধ্যে গোবিন্দ মন্দির এবং শিবমন্দিও অন্যতম। ১৮৯৫ সালে রানী হেমন্তকুমারী দেবী কর্তৃক নির্মিত পুঠিয়া রাজপ্রাসাদ একটি ঐশ্বর্যমন্ডিত ও দর্শনীয় স্থাপনা। নাটোর শহরের দুই কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ঐতিহাসিক দীঘাপতিয়া রাজবাড়ি সংস্কার করে বর্তমানে উত্তরবঙ্গের রাষ্ট্রপতি ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন স¤প্রতি ঐ স্থানে ভ্রমণ ও রাত্রিযাপনের নিমিত্তে প্যাকেজ ট্যুর প্রোগ্রাম চালু করেছে।

এই এলাকায় অবস্থিত নাটোরের রাজবাড়ী পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। জয়পুরহাট জেলার জামালগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত পাহাড়পুর-এ রয়েছে হিমালয়ের দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মঠ সোমপুর মহাবিহারের ধ্বংসাবশেষ। বাংলাদেশের প্রাচীনতম প্রত্মতাত্ত্বিক স্থাপনা মহাস্থান বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিমে অবস্থিত। মনোরম ও চিত্তাকর্ষক দৃশ্যাবলিসমৃদ্ধ সমস্ত এলাকাটি একটি সুরক্ষিত প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত। প্রাচীরবেষ্টিত এলাকার বাইরে প্রায় ৮ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন মঠ। তার মধ্যে রয়েছে গোবিন্দভিটা মন্দির, খোদার পাথর ভিটা, মনকালীর কুন্ড, পরশুরামের প্রাসাদ ও জিয়ত কুন্ড।

মুসলিম সাধক খানজাহান পঞ্চদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে মসজিদ নগরী বাগেরহাট প্রতিষ্ঠা করেন। খুলনা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের এই নগরীকে তিনি বিভিন্ন মসজিদ, সেতু, রাস্তাঘাট, প্রাসাদ ও মৌসলিয়ামে সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলেন। শিল্পকার্যের বিশিষ্ট নিদর্শনস্বরূপ এখনও দাঁড়িয়ে আছে ষাটগম্বুজ মসজিদ যা বাংলাদেশে ইঁট দিয়ে তৈরি বৃহত্তম মসজিদ রূপে গণ্য। গ্রীষ্মমন্ডলের সুন্দরী ও গরান গাছে সমৃদ্ধ পৃথিবীর একটি সর্ববৃহৎ বনভূমি হচ্ছে সুন্দরবন। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, অনেক জাতের হরিণ, কুমির ও বিভিন্ন বন্য পশুপাখির সমারোহ সুন্দরবনকে বিখ্যাত করে রেখেছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী এবং প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম জুড়ে রয়েছে পাহাড়ি বনাঞ্চল, ছোট ছোট নয়নাভিরাম হ্রদ ও মনোমুগ্ধকর দৃশ্যাবলি। বায়েজীদ বোস্তামী মাযার, ফয়ে’স লেক, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সৈনিকদের সমাধিস্থল, সীতাকুন্ড, পতেঙ্গা সৈকত, ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান ছড়িয়ে আছে এ শহরে। চট্টগ্রাম শহর থেকে ১৫২ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত কক্সবাজার। এখানে আছে বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকা সৈকত। সৈকতের একদিকে জলরাশি আর অপরদিক জুড়ে আছে সুদৃশ্য পাহাড়শ্রেণী যেখানে আছে রঙবেরঙের প্যাগোডা, বৌদ্ধদের মন্দির, পাহাড়ি বাড়িঘর এবং চিত্তাকর্ষক নানা দৃশ্য। সমুদ্র সৈকতে রয়েছে পর্যটকদের জন্য আবাস ও রুচিসম্মত দেশি-বিদেশি খাবারের সুব্যবস্থা। হিমছরি পিকনিকের স্থান, বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের শহর টেকনাফ, রামুর বৌদ্ধ বিহার ও সৈকত সংলগ্ন সোনাদিয়া, সেন্ট মার্টিনস দ্বীপ, মহেশখালী ইত্যাদি দ্বীপসমূহ যেকোন পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে।

ঐতিহাসিক স্থান ও প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শনসমূহের জন্য ঢাকা সুবিখ্যাত। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বর্তমান অবস্থানে ১৬০৮ সালে মুগল সাম্রাজ্যের প্রাদেশিক রাজধানী প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৭১৭ সাল পর্যন্ত এটি রাজধানী হিসেবে কার্যকর ছিল। মুগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় সন্তান ও শায়েস্তা খানের উত্তরসূরি বাংলার সুবাহদার শাহজাদা মোহম্মদ আজম ১৬৭৮ সালে লালবাগ দুর্গের নির্মাণ কাজ আরম্ভ করেন। সুচারু কারুকাজখচিত প্রাচীর ফটক ছাড়াও লালবাগের দুর্গে রয়েছে দরবার হল, মসজিদ, রাজমিস্ত্রির দক্ষ হাতে নির্মিত পুকুর ও পরীবিবির মাযার। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পশ্চাদভাগে রয়েছে হুসেনী দালান। এটি একটি বিখ্যাত ইমামবাড়া ও মুসলমান ধর্মের শিয়া স¤প্রদায়ের এক তীর্থস্থান। এটি সম্ভবত ১৬৪২ সালে নির্মিত হয়েছিল। মুগল সাম্রাজ্যের আরও এক নিদর্শন বড় কাটরা রয়েছে বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী চকবাজারে। শাহ সুজার দীউয়ান আবুল কাসিম ১৬৪৪ সালে অতি সূ² কারুকার্যখচিত ও সৌন্দর্যমন্ডিত এই কাটরা নির্মাণ করেন। ১৬৬৩ সালে শায়েস্তা খা কর্তৃক নির্মিত ছোট কাটরা সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে বড় কাটরা থেকে মাত্র ২০০ গজ পূর্বে। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নারায়ণগঞ্জে রয়েছে খিজিরপুর দুর্গ। সেখান থেকে শীতলক্ষ্যা নদীর এক মাইল ভাটিতে রয়েছে সোনাকান্দা দুর্গ। শায়েস্তা খানের উত্তরসূরি নওয়াব ইব্রাহীম খাঁ ১৬৮৯-৯৭ সালে জিনজিরা প্রাসাদ নির্মাণ করেন। বড় কাটরা বরাবর বুড়িগঙ্গার ঠিক অপর পাড়ে ছিল এর অবস্থান। জানা যায় যে প্রাসাদ দুটি একটি কাঠের সেতুর মাধ্যমে সংযুক্ত ছিল।

সুরক্ষার জন্য জিনজিরা প্রাসাদটি ছিল পরিখাবেষ্টিত। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে আরও রয়েছে নবাববাড়ি বলে পরিচিত আহসান মঞ্জিল। ১৮৭২ সালে নওয়াব আব্দুল গণি প্রথম এই প্রাসাদ নির্মাণ করেন। শাহবাগ এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ঢাকায় পর্যটকদের আরেকটি আকর্ষণ। এখানে আছে পুরাতন মুদ্রার এক বিপুল সংগ্রহ, লোহার কারুকার্য, শিল্পের ওপর প্রকাশনা, গজদন্ত ও রূপার ঝালর, মসলিন সামগ্রী, নকশি কাঁথা, ঐতিহাসিক যোদ্ধাদের হাতিয়ার ও গোলাবারুদ, নানারকম হস্তশিল্প, গ্রাম্য ও শহুরে ঐতিহ্যবাহী ঘরবাড়ি ও জীবনধারার নিদর্শন, সমসাময়িক চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্য। সর্বোপরি এখানে সংরক্ষিত আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মূল্যবান বস্তুসামগ্রী।

লেখক: সহকারী কর্মকর্তা, ক্যারিয়ার এন্ড প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস বিভাগ, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন