টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার বাঁশতৈল ফাঁড়ি পুলিশের হেফাজতে থাকা হত্যা মামলার আসামি লেবু মিয়া নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাতের কোন এক সময়ে হাজতের টয়লেটের একটি রডের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
আসামির পরিবারের দাবি আত্মহত্যা নয় তাকে পুলিশ নির্যাতন করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মীর মনির হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দায়িত্বরত কনস্টেবলকে টাঙ্গাইল পুলিশ লাইন সংযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশের হেফাজতে লেবু মিয়া হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে গোড়াই-সখিপুর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। সড়কের বাঁশতৈল বাজার এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী এই অবরোধ করা হয়। এ সময় সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
টাঙ্গাইলের সহকারী পুলিশ সুপার (সখিপুর সার্কেল) এসএম রকিবুল হাসান জানান, এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মীর মনির হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন টাঙ্গাইলে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার। এসময় তিনি সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিলে এলাকাবাসী অবরোধ তুলে নেন। জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের বাঁশতৈল পশ্চিমপাড়া গ্রামের বসতঘর থেকে সখিনা বেগম নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে বাঁশতৈল ফাঁড়ির পুলিশ। রোববার রাতে ওই নারী বাড়িতে একা থাকার সুযোগে কে বা কারা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তবে এই ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে সোমবার দুপুরে পুলিশ সখিনার সাবেক স্বামী বাঁশতৈল গ্রামের মফিজুর রহমান এবং তার পরকীয়া প্রেমিক লেবু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করে। পরে রাত সাড়ে এগারোটায় সখিনার ভাই বাদশা মিয়া বাদী হয়ে মফিজুর রহমান ও লেবু মিয়াসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মির্জাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
লেবু মিয়ার স্ত্রী আলেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামীর নামে কোন মামলা ছিল না। সোমবার দুপুরে ফাঁড়ি পুলিশ সাখাওয়াত, নেছার উদ্দিন ও সেলিম তাকে ধরে নিয়ে ওই হাজতে আটকে রেখে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। মির্জাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, বাঁশতৈল ফাঁড়ি হাজতে থাকা লেবু মিয়া রাতের কোন এক সময়ে টয়লের ভেন্টিলেটর রডের সঙ্গে লাইলনের রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। দায়িত্বে অবহেলার প্রমান পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার ইনকিলাবকে জানান, পুলিশের নামে অভিযোগ আসবে বলে এসিল্যান্ডকে দিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। সুরতহাল ও পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আসবে। যদি পুলিশের কোন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন