স্পোর্টস রিপোর্টার : জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রাপ্ত সাবেক তারকা ফুটবলার, স্বাধীনবাংলা ফুটবল দল ও সোনালী অতীত ক্লাবের সদস্য এবং ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাবেক গোলরক্ষক মেজর জেনারেল (অব.) খোন্দকার নুরুন্নবী আর নেই। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহে ওয়াইন্না ইলাইহি রাজেউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। ষাট দশকে ঢাকার মাঠ কাঁপানো গোলরক্ষক ছিলেন নুরুন্নবী। তখন তিনি তৎকালীন পাকিস্তান জাতীয় দল ও ঢাকা মোহামেডানের গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৫ সালে খোন্দকার নূরুন্নবী যোগ দেন মোহামেডানে। ছয় বছর কৃতিত্বের সাথে খেলার পর তিনি ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান। এবং দৃঢ়তার সঙ্গেই গোলপোস্ট সামলান।
দেশমাতৃকার ডাকে নুরুন্নবী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তখন আট নম্বর সেক্টরে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম ব্যাচে কমিশন লাভ করেন নুরুন্নবী। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে মেজর জেনারেল হিসেবে অবসর নেয়ার আগে তিনি ছিলেন আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক।
স্বাধীনবাংলা ফুটবল দলের এই সদস্য দেশ স্বাধীনের পর দীর্ঘদিন মোহামেডান ও আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবসহ বিভিন্ন ক্লাবে খেলেন। বাংলাদেশ ফুটবলের এই কিংবদন্তী ফুটবলারের মৃত্যুতে স্বাধীনবাংলা ফুটবল দল, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ), ফুটবল ফেডারেশন, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, সোনালী অতীত ক্লাব, বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি, বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস কমিউনিটি পৃথক পৃথক বার্তায় শোক প্রকাশ করেছে।
দীর্ঘদিন মোহামেডানের গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী নুরুন্নবীর মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান তার সতীর্থরা। স্বাধীনবাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু বলেন, ‘অসম্ভব একজন ভদ্র মানুষ ছিলো নুরুন্নবী। স্বাধীনতা আন্দোলনে আমরা এক সঙ্গে মাঠে খেলেছি। মুক্তিযুদ্ধে আর দশজন মুক্তিযোদ্ধার মতোই তার অবদান রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার এখনো মনে পড়ে, আমার সামনে উড়ে আসা বল দেখলেই পেছন থেকে ‘লিফট’ শব্দ করতো নুরুন্নবী। তখনোই বুঝে যেতাম আমাকে সরে যেতে হবে। বলটা সেই গ্রিæপে নেবে। আসলে ও (নুরুন্নবী) থাকলে আমি আর দল নিয়ে চিন্তা করতাম না। কোন চাপই থাকতো না আমার। তাছাড়া ক্লাবে যখন খেলতো বেশ দরদ দিয়েই খেলতো। এমনকি ওর কারণে দল হারলে কান্না জুড়ে দিতো। এমন মানুষকে আমরা হারিয়েছি, কথা মনে হতেই কষ্ট লাগে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন