আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার আফগানিস্তানে নিযুক্ত জাতিসংঘ মিশনের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
কাবুলের ওই স্কুলে হামলার শিকার হয়েছেন দেশটির শিয়া হাজারা সম্প্রদায়ের সদস্যরা। শনিবার কাবুলে সংখ্যালঘু এই সম্প্রদায়ের ‘গণহত্যার’ বিরুদ্ধে বিরল প্রতিবাদ করেছেন হাজারা সম্প্রদায়ের নারীরা।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, শুক্রবার আত্মঘাতী এক হামলাকারী কাবুলের একটি স্টাডি হলে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন। এই হামলার সময় কাবুলের দাশত-ই-বারচি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পরীক্ষা দিচ্ছিলেন শত শত শিক্ষার্থী।
আক্রান্ত আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় ওই এলাকা শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত একটি ছিটমহল এবং সংখ্যালঘু হাজারা সম্প্রদায়ের আবাসস্থল। হাজারা সম্প্রদায় আফগানিস্তানে ঐতিহাসিকভাবে নিপীড়িত একটি গোষ্ঠী। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে সবচেয়ে নৃশংস হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে এই গোষ্ঠী।
আফগানিস্তানে নিযুক্ত জাতিসংঘের সহায়তা মিশনের (ইউএনএএমএ) বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ হতাহতের তথ্য অনুযায়ী, কাবুলে হামলায় কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত ও আরও ৮২ জন আহত হয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ২০ জনের বেশি নারী ও তরুণী রয়েছেন। তবে কাবুল কর্তৃপক্ষ আত্মঘাতী ওই বোমা হামলায় হতাহতের যে তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘের দেওয়া পরিসংখ্যান সেই তুলনায় অনেক বেশি।
শনিবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, কাজ হায়ার এডুকেশনাল সেন্টারে বোমা হামলায় ২৫ জন নিহত ও ৩৩ জন আহত হয়েছেন। যদিও এর আগে এই হামলায় প্রাথমিকভাবে নিহত ২০ এবং আহত ২৭ জন বলে জানানো হয়েছিল।
দীর্ঘদিন পর গত বছরের আগস্টে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবানের জন্য স্পর্শকাতর ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এদিকে, শনিবার তালেবানের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশটির সংখ্যালঘু হাজারা সম্প্রদায়ের কয়েক ডজন নারী কাবুল হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন। কাবুল বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রায় ৫০ জন নারীকে ‘হাজারা গণহত্যা বন্ধ কর’, ‘শিয়া হওয়া কোনও অপরাধ নয়’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়। পরে তারা দাশত-ই-বারচি এলাকার একটি হাসপাতালের দিকে যান, যেখানে হামলায় আহত হাজারাদের কয়েকজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সূত্র: এএফপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন