কুমিল্লার বুড়িচংয়ে কলেজ পড়–য়া তরুণীর সাথে অসদাচরণ ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগে সংশ্লিষ্ট থানার এএসআই (সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর) আবদুল মালেককে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে কুমিল্লার আদালত। এ ঘটনায় ওই এএসআই এর সহযোগী সিএনজি অটোরিকশা চালককেও জেলহাজতে দেওয়া হয়।
তরুণী শ্লীলতাহানীর মামলায় বুড়িচং থানার পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার ও জেলহাজতে প্রেরণের ঘটনাটি গত ৬ দিন ধরে গোপন রাখা হয়েছিল। অবশেষে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রোববার (২ অক্টেবর) দুপুরে বুড়িচং থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, এঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণীর পিতা গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে ওইদিনই অত্র থানার এএসআই আবদুল মালেক ও তার সহযোগী সিএনজি চালক বিল্লালকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয়।পরে আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়। বর্তমানে তারা জেলহাজতে আছেন।
ঘটনার বিষয়ে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে কুমিল্লা বুড়িচং রাজাপুর ইউনিয়নের শংকুচাইলের লড়িবাগ এলাকার স্থানীয় একটি ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী তার অসুস্থ মায়ের জন্য ওষুধ আনতে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় কোন যানবাহন না থাকায় পায়ে হেঁটে লড়িবাগ রাস্তার মাথায় পৌঁছলে একটি সিএনজি অটোরিকশা তার এসে সামনে দাঁডায়।এ সময় সিএনজির ভিতরে থাকা লোকটি ওই তরুণীকে কোথায় যাবে প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গাড়িতে উঠতে বলে। গাড়িতে থাকা পুলিশের পোষাক পরিহিত লোক হওয়ায় ওই তরুণী অভয়ে সিএনজিতে উঠে। সিএনজিতে উঠার পর পুলিশ পরিচয় দেওয়া লোকটি ওই তরুণরি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্পর্শ করতে থাকে। পরে তার সাথে সম্পর্ক রাখলে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। ওই তরুণী সিএনজি থেকে নামার চেষ্টা করলে পুলিশের লোকটি তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় দুই ঘন্টা বুড়িচংয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে শ্লীলতাহানী করে বাড়ির সামনে নামিয়ে দেয়। এসময় ওই পুলিশ এ বিষয়ে মুখ খুললে মামলাসহ বিভিন্ন ভয় দেখায়। এঘটনার পর ওই তরুণী কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। তার পরিবার থেকে কলেজে না যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে ওই তরুণী তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। পরে এলাকায় ও থানায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় সিএনজিতে থাকা লোকটি বুড়িচং থানার উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আবদুল মালেক ও সিএনজি চালক মো: বিল্লাল হোসেন। পরে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী তরুণীর পিতা বাদী হয়ে তার মেয়ের সঙ্গে অসদাচরণ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে বুড়িচং থানায় এএসআই আবদুল মালেক ও সিএনজি চালক মো: বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওইদিনই তাদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন