১ কোটি ৯৭ লাখ ১৬ হাজার ৭শ’ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক এজিএম, সিনিয়র অফিসার, ফুলগাজী শাখার এওজি ক্যাশ-২, প্রধান কার্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারসহ ৫ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে আসামিদের অর্থদণ্ড করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলা স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এ এন এম মোরশেদ খান এর রায় প্রদান করেন। রায়ের সময় আদালতে ৪ আসামি উপস্থিত ছিলেন। এদিকে রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা দেয়ার পাশাপাশি তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পদের হিসাব ও আয়ের উৎস তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন, সোনাপুর বিসিক শিল্প এলাকার মেসার্স ডলফিন সী ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সত্ত্বাধিকারী নিজাম উদ্দিন ফারুক, সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক এ জি এম আব্দুল্লাহ আল মামুন, এওজি গ্রেড-২ (ক্যাশ) এম এ রহমান, সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের এবং সংস্থাপন ও প্রকৌশল বিভাগের সুপারিটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার সামছুদ্দোহা নাহাদ। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও পলাতক আছে দুই আসামি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে কোল্ড স্টোরেজে ইলিশ মাছ রেখে ব্যবসার জন্য ২০১২ সালের ১০ জুলাই সোনালী ব্যাংক থেকে দুই কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেন। পরে মাছ না ক্রয় করে ভুয়া ভাইচারের মাধ্যমে ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১৪টি চেকে ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকা উত্তোলন করেন। এর বিপরীতে ৫১ হাজার ৪৩৯ কেজি ইলিশ মাছ ক্রয় করে গুদামজাত করার কথা থাকলেও তা না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেন। পরে এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মোস্তাফা কামাল বাদী হয়ে সুধারাম থানায় ৭ জনকে আসামি করে ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের করেন। পরে দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরো জানা গেছে, পলাতক আসামি নিজাম উদ্দিন ফারুককে ২৫ বছরের সাজা ও দুই কোটি দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়া চার ব্যাংক কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে ২৫ বছর করে কারাদণ্ড ও ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছে আদালত। তবে বিভিন্ন ধারায় সাজা যুগপৎ হওয়ায় সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর করে কার্যকর হবে।
নোয়াখালী দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট মো. আবুল কাশেম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। পলাতক দুই আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন