শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলবে বিকল্প পথে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

সংবাদ সম্মেলনে ট্যুর অপারেটর নেতৃবৃন্দ

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০২২, ৩:১৯ পিএম

কক্সবাজার-টেকনাফ-সেন্টমার্টিন পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলকারী ট্যুর অপারেটর গ্রুপগুলো জানিয়েছেন পর্যটকদের সুবিধার্থে

সাব্রাং ট্যুরিজম পার্ক এলাকার সৈকত দিয়ে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। টেকনাফের ঘাট থেকে নাফনদী দিয়ে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচলে
স্থানীয় প্রশাসনের নিষেদ্ধাজ্ঞা থাকায় তার বিকল্প হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। বৃহষ্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই সিদ্ধান্তের কথা জানা। এব্যাপারে তারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।

কক্সবাজার শহরের সাগর পাড়ের হোটেল মিশুকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ক্রুজ অপারেটরস্ ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়া) এর সভাপতি তোফায়েল আহমদ, সাধারণ সম্পাদক
হোসাইন ইসলাম বাহাদুর,
টুয়াকের সভাপতি আনোয়ার কামাল ও সাধারণ সম্পাদক মুনিবুল ইসলাম টিটু।

সবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,
দীর্ঘ একযুগের বেশি সময় ধরে তারা টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচলের মাধ্যমে দেশী বিদেশী পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমন নিশ্চিত করে আসছেন। পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানোর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব খাতে বড় ধরনের অবদান রেখে আসছে। কক্সবাজারে প্রতিবছর ২০-২৫ লক্ষ পর্যটক ভ্রমণে আসেন তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পর্যটকের চাহিদা সেন্টমার্টিন ভ্রমণের।

পরিবেশ প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষা করেই পর্যটকদের সেন্টমার্টিন ভ্রমনে উৎসাহীত করে থাকেন তারা। তাতে কয়েশ মানুষের বিনিয়োগে টেকনাফ, উখিয়া, ও সেন্টমার্টিনে গড়ে উঠেছে উন্নত মানের হোটেল মোটেল রিসোর্ট ও অসংখ্য রেস্তোরা। এতে সৃষ্টি হয়েছে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান। চাহিদার কারণে বিগত কয়েক বছর অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌপথে ১০ টি জাহাজ চলাচল করে আসছে।

কিন্তু গত ২৮ সেপ্টেম্বর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্তে টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে যাহা খুবই হতাশা জনক ।

তারা বলেন, ইতি পূর্বে বিগত বছর গুলোতে নাব্যতা শংকট থাকা সত্বেও আমরা জাহাজ পরিচালনা করে এসেছি । তাছাড়া নাফ নদীর কয়েকটি অংশে ডুবুচর জেগেছে কয়েক বছর ধরে। মাঝে মধ্যে উক্ত ডুবু চরে পর্যটক বাহী জাহাজ আটকা পরার খবর অতিতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হয়েছে। নাব্যতা সংকটের অজুহাতে সরকার চাইছে আপাতত টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌপথে এবার জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকুক । প্রয়োজনে পর্যটক পারাপারে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিনের জাহাজ চলাচল করা হবে এবং তা হচ্ছেও আমরা জাহাজ মালিক ও ট্যুর অপারেটরেরা পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলাম। টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচলও বন্ধ রেখেছি।

কিন্তু পর্যটকদের চাপ এবং পর্যটন শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেখে আমাদের বিকল্প উপায় খুঁজতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

তাদের মতে প্রতি বছর অন্তত ৩ লক্ষ পর্যটক টেকনাফ থেকে জাহাজে করে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করে থাকেন। সেন্টমার্টিনে ১০ হাজার মানুষ পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল হয়ে আছেন। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে নাফ নদীর পশ্চিম পাশে টেকনাফ উপকূল এবং পূর্ব দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সীমানা দেখা যায়। আবার কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যেতে হয় মেরিনড্রাইভ হয়ে ৮৫ কিলোমিটার বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আর সারিসারি সবুজ পাহাড় দেখতে দেখতে টেকনাফ পৌঁছা পর্যন্ত ভ্রমনে যোগ হয় বর্ণিল অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতার ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজের পিছু নেয় শতশত গাঙচিল। গাঙচিলের সঙ্গ নিয়ে পর্যটকের সেন্টমার্টিন আসা যাওয়ার বিরল দৃশ্য পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়,
চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজ পরিচালনা করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাছাড়া জ্বালানী খরচ ও অত্যধিক। তাই আমরা জাহাজ মালিকদের পাশাপাশি পর্যটকেরা চাচ্ছেন কম খরছে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমনে যেতে। এ কারনেই আমাদের বিকল্প উপায়ে জাহাজ চলাচলের এই উদ্যোগ |

আমরা পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে পর্যটন শিল্পকে ধংসের কবল থেকে রক্ষা করতে বিকল্প পথে টেকনাফ হতে সেন্টমার্টিন পর্যটন পারাপারের চিন্তা করছি। যেহেতু নাফ নদীতে নাব্যতা শংকটের কথা বলা হয়েছে সেহেতু নাফ নদী থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন সৈকত থেকে জাহাজ চলাচল চালু করা হবে।

ওই স্থানে তাদের নিজস্ব অর্থায়নে একটি কাঠের তৈরী জেটি (অস্থায়ীভাবে) নির্মাণ করে পল্টুন স্থাপনের মাধ্যমে জাহাজ চলাচল করা হবে বলে জানানো হয়। তাতে করে পর্যটকের ঝুকি তেমন থাকে না ও সাবরাং পয়েন্ট থেকে পর্যটক নিয়ে জাহাজ গুলো সরাসরী সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটে পৌঁছানো অধিকতর সহজ। এতে করে ভাড়াও বাড়বে না সময়ও কম লাগবে। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা, আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা কামনা করেন তারা।

ট্যুর অপারেটর নেতৃবৃন্দ বলেন,
সাবরাং পয়েন্টে নতুন করে পর্যটক পারাপারের ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে পর্যটকদের ভ্রমনের বিড়ম্বনা দুর হবে, পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের উন্নয়নেরধারা অব্যাহত থাকবে। এক্ষেত্রে স্কোয়ার ও টুয়াক সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্থক্ষেপ কামনা করেন তারা। এজন্য জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইন শৃঙ্খলা বাহীনির সহযোগিতা
চান নেতৃবৃন্দ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন