ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল ধর্মগড় সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে এক যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে বর্বর নির্যাতনের পর ছেড়ে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী (বিএসএফ)। ৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) নির্যাতনের শিকার ওই যুবককে রাণীশংকৈল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করেন তার স্বজনরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার ওই যুবকের নাম আল আমিন (২২)। তিনি জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের মারাধার গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ধর্মগড় ইউপির ২নং ওয়ার্ড ওই এলাকার ইউপি সদস্য মো. আব্দুস মোকিম । তিনি বলেন, ‘সীমান্তে বিএসএফের মারপিটের ঘটনায় আল আমিন নামের একজন আহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।’
রাণীশংকৈল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসকরা জানান , ‘নির্যাতনের স্বীকার ছেলেটির পুরো শরীরে প্রচুর আঘাত করা হয়েছে। এতে তার পুরো শরীরে কালো কালো দাগ হয়ে গেছে । তার চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হতে বেশ সময় লাগবে।
আল আমিনের বাবা আব্দুর রহিম বলেন, এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে ভারতীয় শ্রীপুর ক্যাম্পের সদস্যরা। আলআমিনকে বিএসএফ ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বিজিবির ধর্মগড় বিওপির সদস্যদের অবগত করা হয়। তিনি আরো বলেন, ‘বেলা দেড়টার দিকে আল আমিনকে মারপিট করা শেষে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। পরে নদীর ধার থেকে তাকে উদ্ধার করে আনা হয়। এবং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।’
স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরবেলা আল আমিনসহ কয়েকজন ধর্মগড় সীমান্তের ৩৭২/৩ নম্বর সীমান্ত পিলারের বাংলাদেশ অভ্যন্তরের পাশ দিয়ে ঘাস কাটার জন্য প্রবেশ করে। এসময় ভারতের ভারতীয় শ্রীপুর ক্যাম্পের বিএসএফ ক্যাম্পের টহল দল আলআমিন কে শূন্য রেখায় ভারত অভ্যন্তরে বিএসএফ সদস্যরা আটক করে নিয়ে যায়। সেখানে বিএসএফ সদস্যরা বুট দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে খোঁচায় এবং বেধড়ক মারপিট করে। পরে বিএসএফ সদস্যরা গুরুতর অবস্থায় সীমান্তের কাছে ফেলে দিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে ৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ধর্মগড় ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার জমসেদ উদ্দীন ভূঁইয়া জানান, বিএসএফ নির্যাতনের খবরটি শুনেই তারা এলাকা পরিদর্শন করেন। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে (৬অক্টোবর) বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে প্রতিবাদসহ পতাকা বৈঠকের প্রস্তাব জানানো হয়েছে বলেও জানান এ বিজিবি কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন