শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নির্বাচন চাপিয়ে দিতে চাই না

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০২২, ১২:২১ এএম

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো সংলাপ হবে না
যুক্তরাষ্ট্র যেমন ট্রেনিং দিয়েছে র‌্যাব তেমনিই কাজ করছে
একজন কাউন্সিলর না চাইলে বিদায় নেয়ার জন্য আমি প্রস্তুত আছি
যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ ইচ্ছামতো গুলি করে মারলেও বিচার হয় না
২০২৬ সালের মধ্যেই অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠবে বাংলাদেশ
কিছু পত্রিকা আছে তারা সব সময় খারাপ খবরগুলো লিখে থাকে
‘আওয়ামী লীগ কখনো ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসে না’ দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে কেউ না আসলে সরকারের কিছু করার নেই। নির্বাচনে অংশ নেয়া যেকোনো রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমরা কিছু (নির্বাচন) চাপিয়ে দিতে পারি না। ভোটে আসবে কি-না তারাই সিদ্ধান্ত নিবে। তবে আমরা চাই সবাই অংশগ্রহণ করুক। বিএনপির খুঁটির জোর থাকলে বিদেশিদের কাছে যেত না। গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সফর’ নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় বাংলাদেশে সন্ত্রাস না থাকায় আমেরিকা নাখোশ কিনা প্রশ্ন রেখে বলেন, যারা সন্ত্রাস দমন করেছে তাদের (র‌্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া মানে সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয়া। যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ ইচ্ছামতো গুলি করে মারলেও বিচার হয় না। তারা বাংলাদেশে কি সন্ত্রাস নিমূল চায় না? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের ট্রেনিং দিয়েছে। তারা যেমন ট্রেনিং দিয়েছে, র‌্যাব তেমনিই কাজ করছে। দলের সভাপতি পদে থাকবেন কি-না এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের জাতীয় কাউন্সিলে দলের একজন কাউন্সিলরও যদি না চান, তাহলে আমি পদে থাকব না, বিদায় নেব। আমি অবশ্যই চাই আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্ব আসুক। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো সংলাপের আয়োজন করা হবে না জানিয়ে তিনি রোহিঙ্গা সংকট, দেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র চর্চা, আশ্রায়ণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলেন। এ ছাড়াও ২০২৬ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠবে দাবি করে বলেন, কিছু পত্রিকা আছে তারা সব সময় খারাপ খবরগুলো লিখে থাকে।

র‌্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা : সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে সন্ত্রাস না থাকায় যুক্তরাষ্ট্র নাখোশ কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে করা প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, র‌্যাবকে যুক্তরাষ্ট্র যেমন ট্রেনিং দিয়েছে, তারা তো তেমনই কাজ করছে। নিষেধাজ্ঞা (র‌্যাবের ওপর) তারা কতটুকু তুলবে জানি না, তবে যাদের দিয়ে এ দেশের সন্ত্রাস দমন হয়েছে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার অর্থ কী? সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়া? এটাই প্রশ্ন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। তাহলে কি তারা সন্ত্রাস দমনে নাখোশ? ৪০ বছর ধরে তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধ করে সেই তালেবানকেই আফগানিস্তানের ক্ষমতা দিয়ে চলে এলো যুক্তরাষ্ট্র। ৪০ বছর তো তারা রাজত্ব করল। তাহলে তাদের ব্যর্থতার কথা বলে না কেন। তিনি আরো বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন সময় নানা রকম ঘটনা ঘটায়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশেরই কিছু লোক স্থানীয়ভাবে সেখানে থাকে। তারা সেখানের সিনেটরদের কাছে বানোয়াট ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকে। এসব তথ্য দিয়ে একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে। যারা এসব করে তারা; কিন্তু এক একটি অপকর্ম করেই দেশ ছাড়া। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নয়, আরো কয়েকটি দেশে এমন মানুষ রয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী যাদের ফাঁসি আমরা দিয়েছি, তাদের সন্তানরাও এসব দেশে রয়েছে। স্বাধীনতার পরে ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, বাংলাদেশকে শোষণ করে অর্থ পাচার করে নিয়ে গেছে সেসব দেশে। তারাই অপপ্রচার চালাচ্ছে দেশের বিরুদ্ধে।

র‌্যাবের ওপর তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যখন নিষেধাজ্ঞা দিলো, আমার প্রশ্ন হচ্ছে র‌্যাব সৃষ্টি করেছে কে? এটি তো যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে হয়েছে। তারাই তো র‌্যাব সৃষ্টি করতে পরামর্শ দিয়েছে। র‌্যাবের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র, হেলিকপ্টার, আইটি সিস্টেম সবই যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া। যখন নিষেধাজ্ঞা দেয়, অভিযোগ জানায়, তখন তো বলা লাগে যেমন ট্রেনিং দিয়েছে তেমনই কাজ করছে। এখানে আমাদের করার কী আছে? তিনি আরো বলেন, ট্রেনিং যদি ভালো হতো তাহলে তো একটু কথা ছিল। দ্বিতীয় কথা, আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা সংস্থা র‌্যাব, পুলিশ যেই হোক, তারা যদি কোনও অপরাধ করে তার বিচার হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ইচ্ছামতো গুলি করে মারলেও বিচার হয় না। একটা ছোট বাচ্চা পকেটে হাত দিলে তাকেও গুলি করে মেরে ফেলে দিল। আমেরিকার লোক সবাই যখন আন্দোলনে নামলো, তখন ওই একটাই বিচার মনে হয় সারা জীবনে করতে পেরেছে। আমাদের কতজন বাঙালি সেখানে মারা গেছে, সে কথা কিন্তু তারা বলে না। সে কথা আমি তাদের বলেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা গুম খুন নিয়ে কথা বলেন। গুমের হিসাব নিয়ে দেখা গেলো সবচেয়ে বেশি গুম জিয়াউর রহমানের আমলে। তারপর থেকেই তো চলছে। আমরা যখন তালিকা চাইলাম ৭৬ জনের নাম পাওয়া গেল। এরমধ্যে এমনও আছে, আরেকজনকে শায়েস্তা করতে মাকে লুকিয়ে রেখেছে। কেউ বোনকে লুকিয়ে রেখেছে। আবার দেখা গেছে এক আঁতেল ঢাকা থেকে খুলনা চলে গেছে। খুলনার নিউমার্কেটে ঘুরা ফেরা করছে। তালিকায় এমনও নাম আছে, ভারতে পলাতক। এটা কেমন করে হয়? এমনও হয়েছে যে তালিকায় নাম আছে; কিন্তু লুকিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেই বিষয়গুলো আমরা তাদের সামনে তুলে ধরেছি। এরকম গুমের ঘটনা যখনই ঘটে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুঁজে বের করে। গুম যত বড় করে দেখানো হয়, খুঁজে পাওয়া যদি বড় করে দেখানো হতো তাহলে বাংলাদেশের বদনাম হতো না।

বিএনপি ও নির্বাচন ইস্যু : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির তো খুঁটির জোর নেই। যদি সেটা থাকত, তাহলে তো তারা বিদেশিদের দ্বারে দ্বারে যেত না, ধরনা দিয়ে বেড়াত না। জনগণ বিএনপিকে সবক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা কোন মুখ নিয়ে জনগণের কাছে ভোট চাইতে যাবে। আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো, পেট্রলবোমা মারা, নাশকতা করে মানুষ খুন করেছে। এখন মানুষের কাছে ভোট চাইতে যাবে কোন মুখ নিয়ে। পারছে না বলেই বিদেশিদের পিছে পিছে ঘুরছে। আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ অনেক দল অংশ নেবে না বলে আসছেÑ এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সরকার কী ভাবছে? এ প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়া যেকোনো রাজনৈতিক দলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আমরা কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না। তবে চাইবো- সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।

নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে চায়ের আমন্ত্রণ জানাবেন কিনা- এই প্রশ্নে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার সময়ে আমন্ত্রণ নিমন্ত্রণ একটু কমই দেখা যাচ্ছে। করোনা হচ্ছে। সাংবাদিকদের ঢুকতে দিতো না। তারপরও আমি আমার অফিসে একটু জোর করেই... কতদিন আর দূরে থাকা যায়। সেই জন্য। তবে করোনার কারণে এবার একটু চিন্তা করতে হবে। অনেকে আসতেও পারবে না। নির্বাচন হলে রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্ত কে আসবে কে আসবে না। সেখানে আমরা তো আর চাপিয়ে দিতে পারি না। রাজনীতি করতে হলে দলগুলো নিজে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা চাই সব দল অংশগ্রহণ করুক। তিনি বলেন, গতবার যখন নির্বাচনে এলো, ৩০০ আসনে নমিনেশন দিয়ে বিএনপি হেরে গেল। তখন সব দোষ কার? আমাদের! জনগণের কাজ করে, জনগণের মন জয় করে, জনগণের ভোট নিয়েই; কিন্তু বারবার ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগ কিন্তু কখনও কোনও ডিকটেটরের পকেট থেকে বের হয়ে আসেনি। বা ইমার্জেন্সি দিয়ে কারও ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ভোটের মাধ্যমেই এসেছে। নির্বাচনের মাধ্যমেই এসেছে।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, এ দেশে নির্বাচনের যতটুকু উন্নতি, যতটুকু সংস্কার, এটা কিন্তু আওয়ামী লীগ এবং মহাজোট করে সবাইকে নিয়েই করে দিয়েছি। এরপর যদি কেউ না আসে সেখানে আমাদের কী করণীয়। হারার ভয়ে আসব না। আর একেবারে সবাইকে লোকমা তুলে খাইয়ে দিতে হবে। জিতিয়ে দিতে হবে তবে আসব, এটা তো আর হয় না। মিলিটারি ডিকটেটররা ওভাবেই করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যাদের ওটাই অভ্যাস তারা তো জনগণের কাছে যেতে ভয় পায়। জনগণের সামনে ভোট চাইতে ভয় পায়, এটাই বাস্তবতা। অগ্নিসন্ত্রাস করে যারা মানুষ হত্যা করেছে তাদের কি মানুষ ভোট দেবে? কখনও দিতে পারে না। কারণ, সেই পোড়া ঘা তো এখনও সবার শুকায়নি। এখনও মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। গ্রেনেড হামলায় যারা আহত। যারা লুটপাট করে খেয়েছে। সেই কথাগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। তবে আমরা তো চাই সবাই নির্বাচনে আসুক। অন্তত আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করে তো ক্ষমতায় আসে না, আসেও নাই। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় এসেছে।

রোহিঙ্গা ইস্যু : সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়ে আসছে। মানবিক কারণে নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ সাময়িক আশ্রয় দিয়েছি। রোহিঙ্গারা যাতে সম্মানের সঙ্গে ও নিরাপদে তাদের নিজ দেশে ফিরতে পারে সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।

এবার জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে কার্যকর ভ‚মিকা রাখার আহŸান জানানোর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করার জন্য জাতিসংঘকে কার্যকর ও জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য আহŸান জানিয়েছি।

জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে রাশিয়া-ইউক্রেন বিরোধ নিরসনের আহŸান জানানোর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা-নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট ও বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহŸান জানাই। চলমান সঙ্কট নিরসনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তি ও উন্নয়নভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতির প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরি। এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের আর স্থান দেয়া সম্ভব না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনা চালাচ্ছি।

ডিসেম্বরে সম্মেলন : আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ডিসেম্বর মাসে আমরা দলের সম্মেলন করব। দল সিদ্ধান্ত নেবে। আর পরবর্তী বছরই নির্বাচন। নির্বাচনের প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। আর দলের প্রত্যেকটা বিষয়ে গঠনতন্ত্র মেনে আমরা সিদ্ধান্ত নিই। প্রত্যেকবার আমরা কী কী অঙ্গীকার করেছিলাম, কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি তার হিসাব করি। আগামীতে আমরা কী করবো সেটাও সেভাবে তৈরি করি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন হয়ে গেছে। আমি অবশ্যই চাই আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্ব আসুক। নেতৃত্ব কাউন্সিলররা ঠিক করেন। কাউন্সিলরদের সিদ্ধান্তটাই চূড়ান্ত। তিনি বলেন, জাতির পিতা একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে স্বল্প উন্নত দেশে পরিণত করেছেন। জাতিসংঘই বাংলাদেশকে স্বল্প উন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এরপর গণতন্ত্র ছিল না দেশে মার্শাল ছিল। অনেক চড়াই-উৎরাই পার করে আমরা দেশের গণতন্ত্র উদ্ধার করি। ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকে শুরু করে আজ ২০২২ পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে আজকে এই প্রথম একটানা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে।
বিশ্বে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী বছর সারা বিশ্বের জন্য ‘অত্যন্ত দুর্যোগময়’ হতে পারে বলে শঙ্কা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে দেশের অর্থনীতি ‘যথেষ্ট শক্তিশালী’ আছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তিনি বলেন, প্রত্যেকের মাঝে কিন্তু এই ধরনের একটা আশঙ্কা। সবাই এ কথা বলেছে যে ২০২৩ সাল বিশ্বের জন্য অত্যন্ত একটা দুর্যোগময় সময় এগিয়ে আসছে, এমনকি বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষও দেখা দেবে, এমন শঙ্কা সকলের মনে আছে। এ নিয়ে সবাই চিন্তিত ও আতঙ্কিত।

দেশের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, একদিকে করোনাকালীন সংকট, আরেকদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এবং স্যাংশন, পাল্টা স্যাংশন। এর মাঝেও আমাদের অর্থনীতি এখনও যথেষ্ট সচল রাখতে পেরেছি। এটা আমার কথা না, আন্তর্জাতিক নানা সংস্থাও সে কথা বলছে। শুধু এটুকু বলব, আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে লং টার্ম, মিডিয়াম টার্ম, বা ইমিডিয়েট, যেকোনো ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের কোনো রিস্ক নেই। আমি কথা দিতে পারি। এটুকু ব্যবস্থা আমরা নিতে পারি। সামষ্টিক অর্থনীতির যে টার্গেট আমরা নির্দিষ্ট করেছি, সেটা আমরা অর্জন করতে সক্ষম হব, এ ব্যাপারে সবাইকে আমি আশ্বস্ত করতে চাই।

রিজার্ভে সন্তোষ প্রকাশ : শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের রিজার্ভ এখনো যথেষ্ট। আমাদের যে রিজার্ভ আছে, যদি কোনো সংকট দেখা দেয়, পাঁচ মাসের খাদ্য কেনার মতো রিজার্ভ আমাদের আছে। রিজার্ভ হিসাব করা হয় এ কারণে যে, কোনো দুর্যোগ দেখা দিলে আপনার তিনমাসের খাদ্য কেনার সংগতি আছে কি-না। আমাদের সেখানে পাঁচ মাসের আছে। বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধে ভবিষ্যতেও কোনো সমস্যা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যত ঋণ নেই, বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত কখনও কোনোদিন খেলাপি হয়নি। যত সমস্যা থাক আমরা কিন্তু সময়মতো ঋণ পরিশোধ করি। যখন ঋণ পরিশোধ করি আমাদের রিজার্ভ তখন কিছুটা কমে যায়। করোনাভাইরাসের সময় যখন অনেক কার্যক্রম বন্ধ ছিল, আমরা যথেষ্ট রিজার্ভ বাড়াতে পেরেছিলাম।

গণমাধ্যমের ভ‚মিকা : গণমাধ্যমের সমালোচনা নিয়ে এক প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কিছু কিছু পত্রিকা আছে, তাদের বোধহয় সারা জীবনই বাংলাদেশের খারাপ কথাটা বলতে পারলে তারা স্বস্তি পায়। এটা আমি যুগ যুগ ধরে দেখছি। এরকম ধরনের মানুষ থাকে। সবসময় নেতিবাচক চিন্তা অথবা বলতে হবে যে পরশ্রীকাতরতায় ভোগে। বাংলাদেশ যত ভালো করুক, তাদের চোখে ভালো হওয়া যাবে না। তবে সেটা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। আমি সেটা নিয়ে চিন্তাও করি না। আমার লক্ষ্য থাকে যে, জনগণের ওপর আমার আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে, আমি যে কাজটা করছি জনগণ কতটা লাভবান হলো, জনগণের কষ্ট যাতে না হয়, সেদিকেই আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Md Nirob Pondit ৭ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২৬ এএম says : 0
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি শুধু আওয়ামীলীগের কাছে না ১৮ কোটি সাধারন মানুষের হ্নদয়ে আছেন। আপনার সুস্থতা ও নেক হায়াত কামনা করি।
Total Reply(0)
Syed Enayet Hossain ৭ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২৬ এএম says : 0
আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন আল্লাহর রহমতস্বরুপ। তাই তার সাথে আমরাও দেশবাসী দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে চলমান সংকটসহ যে কোনো উদ্ভুত সংকট মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। আল্লাহ মালিক ভরসা।
Total Reply(0)
Shanto Rahman ৭ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২৭ এএম says : 0
মাশআল্লাহ আসসালামু আলাইকুম Bangladesh Awami League সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে বাংলাদেশের মানুষ আপনার মতো একজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি আপনাদের জন্য দোয়া এবং অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো সবসময় গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
Total Reply(0)
Rehan Khan RK ৭ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২৫ এএম says : 0
যতদিন তোমার হাতে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।
Total Reply(0)
Sheikh Moman ৭ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২৭ এএম says : 0
জাতিসংঘ যুক্তরাষ্ট্র সফর সার্থক ও সফল হয়েছে ্জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
Total Reply(0)
Md Masud Sikder ৭ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২৫ এএম says : 0
উন্নয়নের আরেক নাম মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতা শেখ হাসিনা
Total Reply(0)
salman ৭ অক্টোবর, ২০২২, ৫:৩৯ এএম says : 0
R8, khutir Jor thakle ato VAROT er paa dhorte hoi na ??
Total Reply(0)
jack ৭ অক্টোবর, ২০২২, ৯:১৬ পিএম says : 0
সারা বিশ্বের মালিক আল্লাহ মানুষকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছে এবং আল্লাহ সারা বিশ্বের মানুষের জন্য একটা সংবিধান দিয়েছেন তার নাম হচ্ছে কোরআন আমরা আপনাদের কাউকে চাই না আপনারা আমাদের দেশটাকে ধ্বংস করে ফেলেছেন আজ 50 বছর হয়ে গেছে দেশের কোনো অবকাঠামো নাই লুটপাট চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি গুম খুন মিথ্যা কেস যত ধরনের অন্যায় অবিচার ঘুষ সব আপনার করে যাচ্ছেন আমরা সাধারন মানুষ আমরা আপনাদের কেউ চাইনা বিএনপিকেও চাইনা আমরা চাই আল্লাহর আইন তাহলে সব সমাধান হয়ে যাবে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন