বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণ সমাবেশ ২২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। গণ সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কর্মসূচি সমন্বয় করবেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সমাবেশের সম্ভাব্য স্থান হিসেবে নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরকে নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে টানটান উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। সমাবেশের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, গ্রেফতার ধরপাকড় আতঙ্ক বাড়ছে বিএনপি নেতা কর্মীদের মাঝে। তবে, বিএনপি নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দিয়েছেন, যত বাঁধাই আসুক, সমাবেশ সফল হবেই। বিভাগের ১০ জেলার হাজার হাজার নেতা কর্মী লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা লাগিয়ে সমাবেশে যোগ দেবেন। কেউ বাঁধা দিলে তা প্রতিহত করা হবে।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের স্থানীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, সমাবেশের নামে বিএনপি কোনো অরাজকতা করলে তা মেনে নেয়া হবে না। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা এ বিষয়ে সজাগ থাকবে।
খুলনা নগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেছেন, এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। আন্দোলনে গুণগত পরিবর্তন এসেছে। বিএনপির কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ছে। হামলা হলে পাল্টা হামলার মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হচ্ছে। সরকার বিরোধী সব রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুগপৎ আন্দোলনের জন্য সার্বিক প্রস্ততি নিচ্ছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। যেখানে সম্পৃক্ত হচ্ছেন পেশাজীবীরাও। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে রাজপথ দখলে রাখার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে। খুলনা বিভাগের নেতা কর্মীরা লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা লাগিয়ে সমাবেশে যোগ দেবেন। যেখানেই বাঁধা আসবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে তাই এবার আমরা সামনে এগিয়ে যাব। সভা সমাবেশ আমাদেরই গণতান্ত্রিক অধিকার। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, কোনো দলের তাবেদারী না করে আমাদের কর্মসূচি পালনে সহায়তা করুন।
সমাবেশের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, সাধারণ নেতা কর্মীদের মাঝে গ্রেফতার আতঙ্ক ততোই বাড়ছে। নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক হিলটন জানান, সমাবেশ যে কোনো মূল্যে সফল হবে। তবে বরাবরের মত এবারও সমাবেশের আগে গ্রেফতার আতঙ্ক রয়েছে। অতীতে আমরা দেখেছি, কোনো বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলে আগের দুই তিন দিন পুলিশ প্রশাসন ব্যাপক ধড়পাকড় চালায়। অকারণে কাউকে গ্রেফতার করা হলে তা আমরা মেনে নেব না। তিনি আরও বলেন, সরকারের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে। যে কোনোভাবেই হোক সরকার ক্ষমতায় টিতে থাকতে চায়। বিরোধী দলকে দমন করতে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকার বাধা না দিলে বিভাগীয় সমাবেশে ৫ লাখ নেতা কর্মী জমায়েত হবেন।
খুলনা মহানগর বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এহতেশামুল হক শাওন জানান, আগামী ১৫ অক্টোবর খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বিএনপি মিডিয়া সেল কর্তৃক বিশিষ্টজনদের সাথে জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরবর্তী জাতীয় সরকার ও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ অপরিহার্য শীর্ষক মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির সমাবেশের নামে কোনো প্রকার অরাজকতা মেনে নেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন মহানগর ও জেলা আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। নগর যুবলীগের আহবায়ক শফিকুর রহমান পলাশ বলেছেন, বিএনপির নাশকতা রুখতে যুবলীগ অতীতেও মাঠে ছিল, আগামীতেও থাকবে। মহাসমাবেশের নামে কোনো প্রকার বিশৃংখলা করলে তা প্রতিহত করা হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড সুজিত অধিকারী বলেছেন, আন্দোলনের নামে কোনো প্রকার সহিংসতা নাশকতা বা অরাজকতা মেনে নেয়া হবে না। আন্দোলনের নামে জাতীয় পতাকার অপব্যবহার আমরা মেনে নেব না। জনগণের জানমাল রক্ষায় প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা ওই দিন মাঠে থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন