যশোরের নিরুত্তাপ জেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বড় কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বী নিয়ে উত্তেজনা বাড়ছে। অভিযোগ উঠেছে, সদস্য পদে প্রার্থীরা অনেকেই টাকা ও বিভিন্ন উপঢৌকন দিয়ে ভোট কেনার যুদ্ধে নেমেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে অভিযোগ তুললেও কেউ আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেনি। সংশ্রিষ্ঠরা বলছেন, সদর, ঝিকরগাছা, মণিরামপুর ও শার্শা উপজেলার সদস্য পদগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বীতার সাথে উত্তাপের শঙ্কা রয়েছে। কেননা এই আসনে ভোটে নেমেছেন বড় বড় ব্যবসায়ী, স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিকট আত্মীয় ও অনুসারীরা। তবে জেলা রির্টানিং অফিসার বলছেন, ‘সুষ্ঠু ভোট গ্রহনের জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। কঠোর নিরাপত্তা ও অবাধ ভোট গ্রহনে যাবতীয় ব্যবস্থা নিবে নির্বাচন কমিশন।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে, যশোরের আট উপজেলায় দুই চেয়ারম্যানসহ ৫১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাইফুজ্জামান পিকুল ও বিকল্পধারার মারুফ হোসেন কাজল। ৮টি সাধারণ সদস্য বিপরীতে ৩৭ জন ও ৩টি সংরক্ষিত সদস্য বিপরীতে ১৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। ৮টি উপজেলার মধ্যে ৭টি উপজেলা পরিষদে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। বাকী সদর উপজেলার ভোট গ্রহন হবে যশোর শহরের কালেক্টরেট সরকারি বিদ্যালয়ে। ৮টি কেন্দ্রে ১৬ টি বুথে সকাল ৯ থেকে ২টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, জেলা পরিষদের নির্বাচনে শনিবার রাতে সকল প্রচারণা শেষ হয়েছে। নির্বাচনে জেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বড় কোন দলের প্রার্থী বা স্বতন্ত্র কোন শক্তিশালী প্রার্থী অংশ না নেওয়ায় চেয়ারম্যান পদে তেমন একটা প্রচারণা হয়নি। এ পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজেই জেলার ইউনিয়নগুলোর চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। অংশ নেয়নি জেলা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতৃবৃন্দ। তবে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা লক্ষা করা যাচ্ছে। এর মধ্যে যশোর সদর, মণিরামপুর, ঝিকরগাছা, শার্শায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আত্মীয় ও তাদের নিকট রাজনীতিক অনুসারী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করায় এগুলো উপজেলায় সদস্য পদে উত্তাপ ও প্রতিদ্বন্দ্বীতার আভাস লক্ষ করা গেছে। এমনকি স্থানীয় সংসদ সদস্যরা ও নির্বাচনী আচারণ বিধি লঙ্গন করে ভোট চাইতে দেখা গেছে। গত ৮ অক্টোবর যশোর জেলা পরিষদের নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী গৌতম চক্রবর্তীর আপন মামা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি মনিরামপুর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যানদের ডেকে ভাগ্নের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালান। যা পরবর্তীতে আচারণ বিধি লঙ্গনের অভিযোগে এই ওয়ার্ডের আরেক প্রার্থী শহিদুল ইসলাম রির্টানিং কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। বিয়য়টি নিয়েও এ আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জগলু হোসেন রফিকুল ইসলাম বাপ্পীর শাড়ি লুঙ্গি বিতরণের ছবি ফেজবুকে পোস্ট করে সমালচনা করেন। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় ইউপি চেয়ারম্যানদের সাইকেল নিয়ে ভোট কেনার গুঞ্জন উঠেছে। তবে এই বিষয়ে কেউ কোন আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা রিটার্নিং অফিসে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দেয়নি। এই বিষয়ে জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার ও নির্বাচনের সহকারী রির্টানিং অফিসার আনিচুর রহমান বলেন, ভোট গ্রহনের সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। রবিবার প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম চলে যাবে। ভোট কেনার বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন