কাভার্ডভ্যানে করে ১৪৬৫ বোতল ফেনসিডিল পাচারের সময় পাচারচক্রের মূলহোতাসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
র্যাব বলছে, চক্রটি ফেন্সিডিলের চালান কুমিল্লা জেলার সীমান্ত এলাকা থেকে সংগ্রহ করে রাজধানীসহ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টঙ্গী ও সাভারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিত। গত ৩ বছর ধরে চক্রটি ৫০টির বেশি চালান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
শনিবার নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত কাভার্ডভ্যান এবং একটি জিপ গাড়ি জব্দ করা হয়।
রোববার রাজধানীর কাওরান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মাদকপাচার চক্রের মূলহোতা আলী আকবর (৩৫) এবং তার সহযোগী রিপন মিয়া (২৭) ও নুর হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা মাদকদ্রব্যের বাজার মূল্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা।
আসামিদের দেয়া জবানবন্দির বরাতে র্যাব জানায়, জিপের মালিক আলী আকবর এই চক্রের মূলহোতা। কম সময়ে অনেক টাকার মালিক হয় সে। নিজের জিপে নিয়মিত মাদকের চালান বহন করতো।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক জানায়, নিজের জিপ থাকা সত্ত্বেও অধিক নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন সময় কাভার্ডভ্যান, ট্রাক, পিকআপ ভাড়া করে মাদক পরিবহন করে থাকে আলী আকবর। ঘটনার দুই দিন আগে ফেনসিডিল পরিবহনের উদ্দেশে আলী আকবর ও তার ড্রাইভার রিপন মিয়া কুমিল্লা যায়। কুমিল্লা থেকে কার্ভাডভ্যানে করে নারায়ণগঞ্জে ফেনসিডিল পোঁছে দেযার কথা ছিল।
গ্রেপ্তার আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানায়, চক্রটি ফেন্সিডিলের চালান কুমিল্লা জেলার সীমান্ত এলাকা থেকে সংগ্রহ করে রাজধানীসহ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টঙ্গী ও সাভারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিত।
জীলেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, জীপের মালিক আলী আকবর এর নেতৃত্বে চক্রটি পরিবহন ব্যবসার আড়ালে প্রতিবার ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে কুমিল্লা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফেন্সিডিল পাচার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। চক্রটি পণ্যবাহী পরিবহনের চালক ও সহকারীকে মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের গাড়িতে ফেন্সিডিল পরিবহনের জন্য প্রলুব্ধ করে থাকে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার জীপের মালিক আলী আকবর কুমিল্লার সোয়াগাজীর সিন্ডিকেট থেকে ফেন্সিডিল সংগ্রহ করে। ফেন্সিডিল সংগ্রহের পর কখনও আলী আকবর নিজে আবার কখনও তার নির্দেশনায় গ্রেপ্তার নুর হোসেন দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়। গত ৩ বছর ধরে চক্রটি ৫০টির অধিক চালান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতিটি চালানে ৫০০ থেকে ১৫০০ পর্যন্ত ফেন্সিডিল ছিল।
উক্ত চক্র ফেন্সিডিলের পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে গাঁজা ও ইয়াবার একাধিক চালান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেয়। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে এই চক্রের সদস্যরা আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়নি। উক্ত চক্রের অপরাপর সদস্যদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন