শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ককবরক ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অনুবাদ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০২২, ৯:৩৪ পিএম

দীর্ঘ দুই বছরের প্রচেষ্টায় ত্রিপুরা ভাষায় (ককবরক) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অনুবাদ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের সপ্তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী যুবরাজ দেববর্মা। তিনি ‘ককবরক’ বইটির নাম দিয়েছেন ‘পাইথাকয়া লাংমা’ এর অর্থ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’। বাংলাদেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম জাতি হলো ত্রিপুরা। তাদের মাতৃভাষা ‘ককবরক’ অর্থ মানুষের ভাষা আর ব্যবহারিক অর্থ ত্রিপুরাদের ভাষা। বর্তমানে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ৩৬টি গোত্রের ভাবপ্রকাশের মাধ্যম। এছাড়াও গারো, কোচ, হাজং ইত্যাদি জনগোষ্ঠীর ভাষাও একই শ্রেণিভুক্ত।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ডলছুড়া ত্রিপুরাপল্লীতে জন্ম নেওয়া যুবরাজের দুই বছরের পরিশ্রমের ফসল এই ‘পাইথাকয়া লাংমা’ পান্ডুলিপিটি। তিনি বলেন, ২০১২ সালে বইটি প্রকাশের পর থেকেই আমার কাছে ভিন্ন রকম এক অনুভূতি কাজ করা শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর এত সুন্দর জীবনযাপন, সহজ-সরল-প্রাঞ্জল ভাষা আমাকে মুগ্ধ করেছিল। তখন থেকেই বই অনুবাদ করার আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। করোনা মহামারির কারণে পুরো বিশ্ব যখন নিঃস্তব্ধ, তখন থেকেই মূলত কাজ শুরু করি। এর আগে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও এটিকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

ত্রিপুরা ভাষায় বঙ্গবন্ধুর জীবনীগ্রন্থটি অনুবাদের বিষয়ে যুবরাজ দেববর্মা বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন ২০২০ সালকে মুজিব শতবর্ষ ঘোষণা করেন সেই সময় থেকেই নিজের জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কিছু করার ইচ্ছা জাগে। তাই অনুবাদের পথটি বেছে নেই। যেন একসঙ্গে নিজের ভাষাকেও উপস্থাপন করতে পারি, পাশাপাশি যে মানুষটা স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তার আদর্শটাও একটু ভিন্নভাবে ছড়িয়ে দিতে পারি। যুবরাজ দেববর্মা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা থেকেই ককবরক ভাষায় বইটি অনুবাদের কাজ করেছেন। প্রায় দুই বছর পরিশ্রমের পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভাষান্তরের কাজটি শেষ করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতেই গ্রন্থটি প্রকাশ করার প্রত্যাশা ছিল তাঁর। পাণ্ডুলিপি গ্রন্থাকারে প্রকাশের বিষয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কিউরেটর, সাবেক শিক্ষা সচিব ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছেন, আমাকে জানাবেন। বাকিটা স্যারের সঙ্গে কথা বলার পর বলতে পারব।

কুবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এনএম রবিউল আউয়াল চৌধুরী বলেন, বিভাগের শিক্ষার্থী থাকাকালীন সব সময়ই সে একটু ভিন্নধর্মী চিন্তা করত। তারই একটা রিফ্লেকশন বলা যায় এটা। আর বঙ্গবন্ধুর চিন্তাভাবনা আমরা যতবেশি মানুষকে জানাতে পারব ততই কল্যাণ। আর এটা যেহেতু সে তাদের ভাষায় করেছে সেহেতু তাদের জাতিগোষ্ঠীর জন্যও বঙ্গবন্ধুকে জানতে সহজ হবে।

এছাড়া অনুষদ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতির বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো বর্তমানে রাষ্ট্রীয়ভাবেই দেখা হয়। সে যদি চায় প্রয়োজনে আমরাও তাকে সহায়তা করব। একদমই কোনো উপায় না থাকলে প্রয়োজনে আমরা বিভাগ কিংবা ডিন অফিস থেকে সহায়তা করব। আর সেই অনুবাদের ফসলই ‘পাইথাকয়া লাংমা’। বর্তমানে যুবরাজ এটি প্রকাশের জন্য অনুমতির অপেক্ষায় আছেন তিনি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কিউরেটর, সাবেক শিক্ষা সচিব ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী নজরুল ইসলাম খানের সাথে ওনার সহকারির মাধ্যমে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছেন, আমাকে জানাবে। বাকিটা স্যারের সঙ্গে কথা বলার পর বলতে পারবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন