যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত রোববার রাতে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের অস্ত্রের মহড়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় সাংবাদিকসহ ৫ জন আহত হন।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মশিয়ুর রহমান হলে ডাকাতি হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসানকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন ডাকাতির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী নুরুল আমিন। তিনি যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে নুরুল আমিন লিখেন, আজ ৫ অক্টোবর যবিপ্রবির ইতিহাস রচনার দিন। আর এই ইতিহাস রচনার মূল নায়ক যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম শামীম হাসান। আমরা আশা করি উনি আবার আমাদের মাঝে আসবেন, ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়া মোবাইল, ল্যাপটপ ফেরত দেওয়ার জন্য।
এই স্ট্যাটাস দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম শামীম হাসানের ভাগনে ও বর্তমান যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল ও তার অনুসারীরা। এ ঘটনার জেরে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কদমতলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সালের অনুসরী সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম হৃদয় ও ছাত্রলীগকর্মী জিসান আহমেদ অস্ত্র দিয়ে সভাপতি সোহেল রানার অনুসারীদের ধাওয়া করে। এরপর কদমতলা থেকে তানভীর ফয়সালের অনুসারীরা শহীদ মসিয়ুর রহমান হলে এসে অবস্থান নেয়।
পরবর্তীতে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে সভাপতি সোহলে রানার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা হলে প্রবেশ করলে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্য শিহাব উদ্দিন সরকারকে মারধর করে তার মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। শিহাবকে মারধর করে ছাত্রলীগকর্মী পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান রহমান রাব্বি, রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের জুবায়ের, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের বাহার, একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুর আলম, চতুর্থ বর্ষের সৌমিক, স্নাতকোত্তরের উত্তম, ফাইনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের বেলাল হোসেন, একাউন্ট এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আকিব ইবনে সাইদসহ অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগকর্মী।
যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল দাবি করেছেন, কোন অস্ত্রের মহড়া হয়নি। বিষয়টি ভুল বোঝবুঝি ছিল। আমরা সভাপতি-সম্পাদক বসে বিষয়টি সমাধান করেছি। আর সাংবাদিকের মারপিটের ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি।
এ বিষয়ে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, নিজেরা বসে বিষয়টি সমাধান করেছি।
যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাটি শোনার পর আমি হল পরিদর্শন করেছি। কিন্তু কোন পক্ষই অভিযোগ করেনি। হল প্রভোস্টকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলেছি। ক্যাম্পাসে কোন বিশৃঙ্খলা হতে দেয়া হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন