মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মারধর, ফোন ছিনিয়ে নেয়া ও জোরপূর্বক ভিডিও ধারণের অভিযোগ

শাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০২২, ৯:৫৮ পিএম

আধিপত্য বিস্তার ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গত রোববার দিবাগত রাত আনুমানিক রাত ১২ টায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধর, মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া এবং ‘জোরপূর্বক মিথ্যা স্বীকারোক্তি’র ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষার্থী এসএম সাখাওয়াত হোসেন সাকিব নিলয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২য় বর্ষের এবং শাহপরান হলের ৪২১ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। এছাড়াও ওই ভিডিয়োকে ভিত্তি করে তারা আরও তিন শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করতে গেলে সেদিন হলে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়।

নিলয় বলেন, “গত রোববার দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টা। এমন সময় কয়েকজন আচমকা আমার রুমে ঢুকে লোকপ্রশাসন বিভাগের আমিনুল ইসলাম তামিমের নির্দেশে আমাকে ৪১৮ নম্বর রুমে নিয়ে বলে, ‘তুই কি শুরু করছোস, তোর সমস্যাটা কি? তুই কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাস? এগুলো বলে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং মারধর শুরু করে।”

তিনি আরও বলেন, “একপর্যায়ে আমার মোবাইল ফোন ওরা ছিনিয়ে নেয়। যা এখনো আমি ফেরত পাইনি।” এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই শিক্ষার্থী নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক এবং শাহপরান হল প্রভোস্ট বরাবর আজ বুধবার আবেদন পত্র দিয়েছেন। সেখানে তাকে মারধর, তার মোবাইল ফোন (রচযড়হব-ঢ) ছিনিয়ে নেওয়া এবং জোরপূর্বক ভিডিও ধারণের অভিযোগ উল্লেখ করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, এ সময় সেখানে পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের তানভীর হাসান তামিম, শাকিল হাওলাদার, লোকপ্রশাসন বিভাগের হাবিবুর রহমান আসিফ, সাখাওয়াত হোসাইন রাকিব, শিমুল, সাব্বির হোসেন এবং তারেকসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। ওরা সবাই ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমিনের সমর্থক ছিলেন এবং বর্তমানে তারেক হালিমি-সুমন সরকার এ গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নিলয় নিজেও তাদেরই অনুসারী।

ভিডিও ধারণের প্রসঙ্গ নিয়ে ওই শিক্ষার্থী বলেন, “তারা আমাকে শিখিয়ে দেওয়া মিথ্যা এবং বানোয়াট কথা ‘ছাত্রলীগের আরেক গ্রুপের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাই। এই গ্রুপের ক্ষতি করে আবু হাসান রাফি, শামসেদ সিদ্দিকী সুমন ভাইদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাই।’ জোরপূর্বক এগুলো বলিয়ে নিয়ে ভিডিও ধারণ করে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি ফোন ফেরত না পেয়ে বিষয়টি প্রভোস্ট স্যারকে জানালে তিনি আমাকে বড় ভাইদের সাথে কথা বলে বিষয়টা সহজে সমাধান করা যায় কি না দেখতে বলেন এবং তারপর পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান এবং ফোন ছিনিয়ে নেয়ার সাথে জড়িতদের তথ্য নিয়েছেন।” এবিষয়ে প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান বলেন, “অভিযোগপত্র পেয়েছি। আমরা হলের প্রভোস্ট বডি একসাথে বসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবো।”

এদিকে নিলয়ের কাছ থেকে জোরপূর্বক নেয়া ভিডিওকে প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে একই গ্রুপের শিক্ষার্থী আবু হাসান রাফি এবং শামসেদ সিদ্দিকী সুমন ও শুভকে বিদ্রোহী বলে দাবি করে হল থেকে বের করে দিতে যায় তারেক হালিমি-সুমন সরকারের অনুসারীরা। শামসেদ সিদ্দিকী সুমন বলেন, “আমরা সবাই সাবেক সভাপতি রুহুল আমিনের অনুসারী ছিলাম। আমরা জাতীয় প্রোগ্রামে নিয়মিত অংশগ্রহণ করি। কিন্তু তাদের সঙ্গে অন্যান্য প্রোগ্রামে না যাওয়ায় তারা আমাদের বের করতে চাচ্ছে।”

সুমন সরকার মারধরের কথা অস্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রথমে একজন তার কাছ থেকে দেখার জন্য ফোন নিয়ে একটু পরে দিয়ে দেয়। কিন্তু পরে সে বলে ফোন পায়নি। এটা তার ভিন্ন পরিকল্পনা হতে পারে। এদিকে জোরপূর্বক ভিডিও ধারণের বিষয়ে তিনি বলেন, সে রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। তার বন্ধু এবং সিনিয়ররা তাকে কিছু বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছে।”

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন বলেন, অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি তার সাথে কথা বলব। তবে প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাঈলকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তার নাম্বার ব্যস্ত পাওয়া যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন