শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

কৃষি ব্যাংক পরিদর্শকদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায়

| প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পদ বিলুপ্ত হলেও পদোন্নতি নেই সিবিএ নেতাদের বাধায় দাবি নিয়ে কথা বলতে পারছে না
হাসান সোহেল : অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ১২শ’ কর্মচারীর ভবিষ্যত। দীর্ঘদিন পরিদর্শক পদে কাজ করলেও অফিসার পদে পদোন্নতি পাচ্ছেন না এসব কর্মচারীরা। অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত ২০১৪ সালের অর্গানোগ্রামে পদটি বিলুপ্ত করা হয়। ওই সময়ে ব্যাংকটির দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালাম সরকার অনুমোদিত অর্গানোগ্রাম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চাকুরী প্রবিধানমালাতে (এসএসআর) পরিদর্শকদের পদোন্নতি ৫ বছরের স্থলে ৩ বছর করে ২০১৬ সালের মধ্যে পদটি বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেন। পরবর্তীতে তিনি জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হয়ে চলে যান। এরপর আর বিষয়টি আলোর মুখ দেখেনি। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) ইতোমধ্যে তাদের পরিদর্শকদের পদোন্নতি দিয়েছেন। অথচ কৃষি ব্যাংকের পরিদর্শকরা মাঝে মধ্যে আলোচনার জন্য ব্যাংকের উধ্বর্তনদের সাথে বসতে চাইলেও কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) নেতাদের বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। পদোন্নতির বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সিবিএ নেতারা পরিদর্শকদের বদলিসহ বিভিন্ন ধরনের হয়রানি করছেন। এমনকি প্রাণ নাশের হুমকিও দিচ্ছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান।  
সূত্র মতে, অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত ২০১৪ সালের অর্গানোগ্রামে ব্যাংকটিকে অফিসার ভিত্তিক তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্যে নির্দেশ প্রদান করে। পাশাপাশি পরিদর্শক পদটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ওই সময়ে ব্যাংকে পরিদর্শক হিসেবে কাজ করছিলেন ১১শ’ ৯২ জন পরিদর্শক। একই সঙ্গে পদোন্নতি বঞ্চিত রয়েছেন পূর্বের প্রায় আরো প্রায় ২শ’ পরিদর্শক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) নেতাদের কাছে জিম্মি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। বিশেষায়িত এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সিবিএ নেতারা বদলি বাণিজ্য, কর্মচারীদের হাউস লোন এবং বিভিন্ন লোনে কমিশন নেয়াসহ বিভিন্নভাবে অনিয়ম করে ব্যাংকের মধ্যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছে।
সূত্র মতে, কর্মচারীদের স্বার্থ রক্ষা করা মূল উদ্দেশ্য হলেও তারা নিজেদের সুবিধা নিয়ে ব্যস্ত। এদিকে নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ বিএনপি তথা শ্রমিক দলের নেতা। যারা ক্ষমতার পালাবদলে ভোল পাল্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের কথা বলে ব্যাংকে বিভিন্ন অনিয়ম করে যাচ্ছেন।
পরিদর্শক পদে কর্মরতরা জানান, সিবিএ নেতারা কর্মচারীদের পদোন্নতি আটকে রেখে বছরের পর বছর নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চাচ্ছে। একই সঙ্গে কর্মচারীদের ভবিষ্যত ধ্বংসের মুখে ফেলছেন।
সূত্র জানায়, সারা দেশে কৃষি ব্যাংকের বর্তমানে ১০৩০টি শাখা আছে। যার মধ্যে গ্রামীণ শাখাই ৯০ শতাংশ। অনুমোদিত ১৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলে ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে ব্যাংকটির। যাদের মধ্যে আবার পদোন্নতি বঞ্চিত প্রায় ১৫শ’ কর্মচারীর মধ্যে আস্থার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এসব কর্মচারীরা স্বাভাবিকভাবে ব্যাংকে ভূমিকা রাখতে পারছেন না।  
কৃষি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা অবশ্য জানান, তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিদর্শকদের পদোন্নতি ৫ বছরের স্থলে ৩ বছর করার সুপারশি করলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। আর যে কারণে পরিদর্শকরা সার্ভিস রুল অনুযায়ীই পদোন্নতি পাচ্ছেন না। তবে পদোন্নতির বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ঠাকুর দাস কুন্ড ইনকিলাবকে বলেন, অনেকের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই এসব কর্মচারীদের পদোন্নতি হয়ে যাবে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনাও হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
SWAPNIL ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৫:১৫ পিএম says : 0
The authority should promote the supervisor very soon. Because the supervisor are the soul of Bangladesh Krishibank. The higher authority should take proper step to demolish the activities of CBA and save the the supervisors future.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন