বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নর্থ সাউথের চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

৩০৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০১ এএম

তিনশ’ ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান, চার সদস্যসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার পরিচালক ফরিদ আহম্মেদ পাটোয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
সংস্থার সচিব মো: মাহবুব হোসেন চার্জশিট দাখিলের বিষয়ে বলেন, চলতি বছর ৫ মে দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ মামলাটি দায়ের করা হয়। এজাহারে ৬ জনকে আসামি করা হলেও চার্জশিটে জড়িত আরো ৩ জনকে অন্তর্ভুক্ত করে কমিশন চার্জশিটের অনুমোদন দেয়।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো: হিলালী। তদন্তে বেরিয়ে আসা আসামিরা হলেন, আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, পরিচালক আনোয়ার বেগম ও সৈয়দ এ কে কামরুজ্জামান।

দুদক সচিব জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হচ্ছে ট্রাস্টি বোর্ড। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
কিন্তু নর্থসাউথের ট্রাস্টিবোর্ডের কতিপয় সদস্য বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকারের অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৭ ডেসিমেল জমি কেনেন। এ ক্ষেত্রে জমির মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত দেখানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্তে¡ও বেশি নাম দেখিয়ে আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।

আসামিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্তে¡ও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা দেন। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। পরে নিজেরা এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। আসামিরা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেরা অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন। এ বেআইনি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে কমিশন বা ঘুষের আদান-প্রদান করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

আত্মসাতের অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দÐবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ ক ধারা এবং ১৯৪৭ সনের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এফডিআর করার নামে প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাটের অভিযোগ ছিল আসামিদের বিরুদ্ধে। স্ত্রী-স্বজনদের চাকরি প্রদানের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, সরকারি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গাড়ি ক্রয় ও অবৈধভাবে বিলাসবহুল বাড়ি ব্যবহার এবং বিভিন্ন অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা নেয়ার অভিযোগও ছিল। অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সত্যতা খুঁজে পাওয়ার প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের করে দুদক।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন