সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মায়ের চিকিৎসার জন্য নিজেকে বিক্রির ঘোষণা দেয়ার পর বান্দরবানবাসীর বটবৃক্ষ ও দানবীর পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি ক্যান্সার আক্রান্ত কলেজ পড়ুয়া মামুনুর মায়ের চিকিৎসার জন্য নগদ ৬ লক্ষ টাকা প্রদান করেন ।
পার্বত্য মন্ত্রীর বাসভবনে ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসা সহয়তা পেতে ১০ বছরের জন্য নিজেক বিক্রি করার ঘোষণা দেওয়ার পর পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি ৬ লক্ষ টাকা দেন মামুনের হাতে ।
নিজের শেষ বিন্দু দিয়ে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত মাকে বাচাঁতে চায় মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম মামুন। গেলো ৪ মাস ধরে মাকে বান্দরবান ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে অর্থ সংকটে পরেন মামুন। এহেন পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে শ্রমিক হিসেবে ১০ বছরের জন্য বিক্রির ঘোষণা দেন মামুন।
জানা যায়, বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ নুরুল ইসলামের (৬০) একমাত্র পুত্র মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম মামুন।
তিনি বান্দরবান সরকারী কলেজের অর্নাস ৩য় বর্ষের ছাত্র। উন্নত শিক্ষার জন্য সূদুর আলীকদম থেকে বান্দরবান পৌরসভার নিউগুলশান এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। লেখাপড়া শেষে বান্দরবানে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে পার্ট টাইম চাকুরি করতো। কিন্তুু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে হঠাৎ করে মামুনের মায়ের শরীরে দেখা দেয় নানা অসুখের উপসর্গ সহ ক্যান্সার। আর তাই দেরি না করেই সব ছেড়ে মাকে নিয়ে ছুটে যায় চট্টগ্রামের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে।
মামুন জানান, মার জরায়ু ক্যান্সার শনাক্ত হয় গেলো চারমাস আগে। তখন থেকে চিকিৎসা চালাচ্ছি, জরায়ুতে স্টেজ ফোর, শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে, কিডনিত ছুয়েছে, বাম পাশের কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে, ডান পাশেরটা চলমান রাখার জন্য অপারেশনের মধ্য দিয়ে পাইপ বসানো হয়েছে। বর্তমানে টাইফয়েড শনাক্ত হয়েছে, কেমোথেরাপিও চলমান।
মামুন আরো জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ সহ বিভিন্ন হাসপাতাল তার মায়ের চিকিৎসা করিয়েছেন। চিকিৎসাবাবদ খরচ হয়েছে চৌদ্দ লাখ টাকা। এরমধ্যে আট লাখ টাকা নিজেদের আর বাকিটা ধার নেওয়া।
নিজেকে বিক্রির বিষয়ে মামুন বলেন, মায়ের জন্য আমি সব করতে পারি, তাই মাকে বাঁচাতে সামাজিকমাধ্যমে নিজেকে ১০ বছরের জন্য শ্রমিক/কামলা হিসেবে বিক্রি করতে ঘোষণা দিয়েছি। আমি বৈধ যেকোনো কাজ করতে পারবো। আমার সঙ্গে এখনো কাজের সন্ধান দিয়ে কেউ যোগাযোগ করেনি তবে কাজ পেলে আমি যোগ দেব এবং সেই অর্থ দিয়ে মায়ের চিকিৎসা চালিয়ে যাব।
এদিকে সামাজিকমাধ্যমে নিজেকে বিক্রি করে মায়ের চিকিৎসার ঘোষণার পর থেকে অনেকেই তার এই ঘোষণাকে সাধুবাদ জানিয়েছে। একইসঙ্গে অনেকেই নিজ নিজ নাস্তার অর্থ ও অপ্রয়োজনে খরচ করা অর্থ মামুনকে প্রদানের জন্য আহবান জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কাজল কান্তি দাশ,(আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য) লক্ষী পদ দাশ, জেলা পরিষদের সদস্য) মোজাম্মেল হক বাহাদুর, জেলা পরিষদের সদস্য) পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের ইউনিট প্রকৌশলী ইয়াছিন আরাফাত, আরও উপস্থিত বিভিন্ন ব্যবসায়ী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন