ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সোমবার রাতে ঝোড়ো হাওয়ায় কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ঘরের উপর গাছ পড়ে একই পরিবারের তিন জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এদিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়ায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কুমিল্লার বিদ্যুৎ সংযোগ। এতে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর থেকে পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান মেহেবুব তিনজন নিহতের তথ্য দৈনিক ইনকিলাবকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সোমবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার হেসাখাল গ্রামের একটি ঘরে বড় গাছে ভেঙে পড়ে। এতে বাবা, মা ও মেয়ে গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতেরা হলেন নিজাম উদ্দিন (২৮) তাঁর স্ত্রী সাথী আক্তার (২৪) ও মেয়ে লিজা (৪)।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গাছ পালা ও ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। লালমাই উপজেলার আশকামতা গ্রামে ঘরে গাছ পড়ে একই পরিবারের চার জন আহত হয়েছে। এদিকে সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের হাসানপুর, বানিয়াপাড়া, আমিরাবাদ, বেলতলী, চান্দিনা, কালাকচুয়াসহ বেশ কিছু স্থানে ঝড়ো হাওয়ায় গাছে ভেঙে সড়কে পড়ে। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
ঢাকা থেকে অফিসের গাড়িতে কুমিল্লায় ফেরা বাখরাবাদ গ্যাসের ডিজিএম (প্রশাসন) নাহিদ বানী ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, দাউদকান্দি টোল প্লাজা পার হয়ে এমন ভয়াবহ অবস্থায় পড়তে যাব ভাবিনি। ঝড়ো হাওয়ায় প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় আটকে থেকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাস্তা সচল হয়।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে রাত ৯টায় পর্যন্ত মহাসড়কের ১০ থেকে ১২টি স্থানে গাছ ভেঙে পড়ে। এর মধ্যে দাউদকান্দির ছয়টি স্থানে গাছে ভেঙে পড়ে। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সাথে নিয়ে গাছে সরিয়েছি। রাত ১১টার দিকে যানবাহন চলাচল সচল হয়।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ফলে যেকোনো ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে খবর নেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন