নওগাঁর বদলগাছীতে একজন তরুণী আত্মহত্যা করবার ১৪ বছর পর আদালত বকুল হোসেন (৩৮) নামে এক যুবককে প্ররোচনা দেবার অভিযোগে সাত বছর সশ্রম কারাদ- দেন। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের বিনা শ্রম কারাদ-ের আদেশ দেন আদালত।
মঙ্গলবার নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এই রায় দেন। রায়ের সময় আসামি বকুল হোসেন আদালতে হাজির ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৭ জুন বদলগাছী উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা ও গোবর চাপা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমা আক্তারকে (১৭) বাড়ির পাশে আম বাগানে একা পেয়ে একই গ্রামের বাসিন্দা বকুল হোসেন শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। ওই ঘটনার তিন দিন পর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে নাজমা বিষপানে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৫ জুন নাজমার বড় ভাই আমেদুল ইসলাম বকুল হোসেন, তাঁর বাবা মকবুল হোসেন, মা জান্নাতুন নেছা ও পিন্টু মিয়া নামে অপর এক যুবকের বিরদ্ধে আদালতে মামলার আর্জি করেন। আদালত আর্জিটি আমলে নিয়ে বদলগাছী থানা পুলিশকে অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে বকুল হোসেনের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৯ সালের ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ৯ (ক) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগ গঠনের মতো পর্যাপ্ত উপাদান বিদ্যমান না থাকায় বকুলের বাবা মকবুল, মা জান্নাতুন নেছা ও পিন্টু মিয়াকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় নারী ও শিশুনির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ৯ (ক) এর ৩০ ধারায় আসামি বকুল হোসেনকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদ- দেন আদালত। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তাঁকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- ভোগ করতে হবে।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নওগাঁ নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর সরকারি কৌঁসুলি মকবুল হোসেন।
অন্যদিকে রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসামি পক্ষের আইনজীবী প্রকাশ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘এই রায়ে যুক্তির চেয়ে আবেগকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আমার মক্কেল সঠিক বিচার পাননি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন