আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশে দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আপনারা দলটাকে বাঁচান। টাকাপয়সার লেনদেন এগুলো বন্ধ করেন। কমিটি করতে টাকা লাগবে, এটা বিএনপির হতে পারে, আওয়ামী লীগ এ চর্চা করতে পারে না।
টাকাপয়সা নিয়ে মনোনয়ন, টাকা পয়সা নিয়ে কমিটি গঠন এ চর্চা চিরতরে বন্ধ করতে হবে। এটা শেখ হাসিনার নির্দেশ। নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বন্ধ করতে হবে। একজনের বিরুদ্ধে আরেকজনের নামে দুর্নাম বন্ধ করতে হবে। গতকাল রাজধানীর খিলগাঁওয়ে খিলগাঁও থানা ও ১, ২, ৩ ও ৭৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এসময় মহানগর দায়িত্বশীল নেতাদের সম্মেলন শেষে দ্রুত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দু’তিনটা সমাবেশ করে ফখরুলের ভাবখানা এমন যে, ক্ষমতায় এসেই গেছে। এত সোজা না, এত সোজা না, খেলা হবে। রাজপথে খেলা হবে। আন্দোলনে খেলা হবে। ডিসেম্বরে বিজয়ের মাসে খেলা হবে। আগামী নির্বাচনে খেলা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। লুটপাটের বিরুদ্ধে, ভোটচুরি বিরুদ্ধে, ভুয়া ভোটার তালিকার বিরুদ্ধে খেলা হবে।
তিনি বলেন, কথায় কথায় শুধু ঢল নামে। জনস্রোত এখনও দেখেননি। ডিসেম্বরে সমুদ্রের গর্জন শুনতে পাবেন। একটু অপেক্ষা করুন। লোকের ঢল কাকে বলে দেখবেন।
এসময় বিএনপি নেতাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত মাথা থেকে নামানোর পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই ভূত বাংলার মানুষ নিষিদ্ধ করেছে। উচ্চ আদালত নিষিদ্ধ করেছে। আর তত্ত্বাবধায়ক চিন্তা করে লাভ নেই। ফখরুল ক্ষমতার রঙিন খোয়াব দেখছেন। এখনও দেখেননি কত ধানে কত চাল। সময় আসছে বুঝিয়ে দেব।
রিজার্ভ নিয়ে বিএনপির মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে কাদের বলেন, তারা কোন মুখে রিজার্ভের কথা বলে। রিজার্ভ আমরা ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গেছি। এখন বৈশ্বিক সংকটের কারণে ৩৬ বিলিয়ন ডলার। বিএনপির রিজার্ভ কতো ছিল? বিএনপির সময়ে ৪.৮ অর্থাৎ ৫ বিলিয়নও ছিল না।
সংবিধানের কোনও পরিবর্তন হবে না জানিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন সংবিধান পরিবর্তন করবে। ডিসেম্বরে বুঝিয়ে দেব সংবিধান পরিবর্তনের দুঃসাহস কী করে হলো। মাথা থেকে নামাতে হবে। এই পবিত্র সংবিধান লাখো শহীদের রক্তে মাখা...অনেক কচুকাটা করেছেন। সংবিধানকে আর বাংলার জনগণ কচুকাটা করতে দেবে না।
বিএনপি লন্ডনের রিমোট কন্ট্রোলে চলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ওখান থেকে ফরমায়েশ করে আর এখানে ফখরুল নাচে। যেমনি নাচায় তেমনি নাচে। পুতুলের মতো। পুতুলের কী দোষ। ফখরুল সাহেব নাচানাচি করছেন, আন্দোলনের নেতা কে? নির্বাচনের নেতা কে? দণ্ডিত আসামি যে মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি করবে না বলে বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছে ২০০৮ সালে। এই নেতা কি মেনে নেবে বাংলাদেশের জনগণ? শেখ হাসিনার মতো যোগ্যতা, সততা, দক্ষতা আর কারও আছে এদেশের?
বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশের বাজারে দ্রব্যমূল্যসহ বিভিন্ন কারণে জনগণের কষ্টের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ কষ্টে আছে আমরা বুঝি। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। মানুষের কষ্টও বেড়েছে। গরীব মানুষের কষ্ট, নিম্ন মধ্যবিত্ত স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এ কষ্টের কথা আমরা জানি, বুঝি। শেখ হাসিনা বোঝেন। তার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায় আপনাদের কষ্টের কথা চিন্তা করে। আজকের এই সংকট উত্তরণের জন্য তিনি দিবারাত্র পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, চেষ্টা করছেন। একটু ধৈর্য ধরেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন