‘দুর্দিনের জন্য কিছু সঞ্চয় করে রেখো’, এমন একটি প্রবাদতুল্য কথা আমাদের দেশে প্রচলিত আছে। কথাটির তাৎপর্য গভীর। মানুষের সবদিন সমান যায় না। সুখ যেমন চিরস্থায়ী নয়, দুঃখও চিরস্থায়ী নয়। সুখের দিনেই দুঃখের দিন সামাল দেয়ার সঞ্চয় রাখতে হয়। তাহলে, দুঃখ খুব বেশি কাবু করতে পারে না। সমস্যা হচ্ছে, সুখের সময় মানুষ দুঃখ আসতে পারে, এ কথা ভাবতেই পারে না। অনেকে বর্তমান সুখকে উপভোগ করাকেই স্থায়ী সুখ বলে মনে করে। ‘খাও, দাও, ফূর্তি করো, আগামীকাল বাঁচবে কিনা বলতে পারো’, এমন নীতি নিয়ে বর্তমান সুখের সময়কে উপভোগ করে যায়। তবে যারা সচেতন, তারা সুখের সময়টাকে যেমন পরিমিতিবোধের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে, তেমনি দুঃখের সময় আসতে পারে এ শঙ্কায় তা সামাল দেয়ার ব্যবস্থাও করে রাখে। এ শ্রেণীর মানুষই সুষমভাবে জীবন অতিবাহিত করতে পারে। আমাদের দেশে বিগত এক যুগের অধিক সময় ধরে সরকারের তরফ থেকে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে, সেই সরকারই এখন বলছে, সামনে দুর্দিন। শুধু দুর্দিন নয়, দুর্ভিক্ষের কথাও বলছে। প্রশ্ন এসে যায়, তাহলে বিগত একযুগে আমরা কি উন্নতি করলাম যে, দুর্ভিক্ষে পড়তে হবে? এটা কি ধরনের উন্নয়ন হলো? সরকার ঘোষিত বিশ্বে দেশ কি ধরনের ‘উন্নয়নের রোল মডেল হলো?’ উন্নতির টেকসই ও স্থায়িত্ব কোথায়?
দুই.
সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে এমনই বিমোহিত করে রাখা হয়েছিল যে, দুর্দিন আসতে পারে, এ কথাটি কেউ চিন্তার মধ্যেই আনেনি। সরকার ‘খাও, দাও, ফূর্তি করো’ নীতির মধ্য দিয়ে গিয়েছে। যখনেরটা তখন খেয়ে ফেলেছে। ফলে দুর্দিন এসে পড়ায় এখন আর দিশা পাচ্ছে না। তখন যদি কিছু সঞ্চয় করে বা যে উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে, তার ভিত্তিটি শক্ত করে গড়ে তোলা হতো, তাহলে বর্তমান ও আগত দুর্দিনে এত সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না। অনেকটাই সমাল দেয়া যেত এবং প্রকৃত অর্থেই বলা যেত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দুর্ভিক্ষাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা থাকলেও আমাদের দেশে সেরকম অবস্থার সৃষ্টি হবে না। সরকার সে ব্যবস্থা করেনি। দেশে টাকা উৎপাদিত হয়েছে এবং তা খরচ করেছে। ‘হ্যান্ড টু মাউথ’ বা দিন আনে দিন খাওয়ার মতো। সঞ্চয়ের ভাণ্ডারটি শক্ত করেনি। এর মধ্যে যারা সচেতন ও ধূর্ত তারা কিন্তু ঠিকই সঞ্চয় করেছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে সেখানে জমিয়েছে। কতবার যে এ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তার কোনো হিসাব নেই। বছরে লাখ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, বিগত দশ বছরে দশ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছেÑ এমন সব পরিসংখ্যান ও তথ্য দেয়া সত্ত্বেও সরকার আমলে নেয়নি। পাচারও ঠেকায়নি এবং সচেতন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি। সরকার মনে করেছে, দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে, এমন পাচার-টাচার হবেই। টাকার ভাণ্ডার ফুরাবে না। এখন বিশ্ব অর্থনীতি যখন মন্দাবস্থার মধ্যে পড়েছে, তখন হুঁশ হয়েছে। দেশে টাকা নেই এমন অবস্থার মধ্যে সরকার বলতে বাধ্য হচ্ছে, আগামী বছর দুর্ভিক্ষের মধ্যে দেশ পড়তে পারে। সাধারণ মানুষকে কৃচ্ছ্রসাধন কিংবা মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। এমন সময়ে এসব কথা বলছে, যখন অনেক আগে থেকেই সাধারণ মানুষ তাদের সঞ্চয় ভেঙে খেয়ে ফেলেছে। এখন ধার-দেনা করে চলছে। তিনবেলার খাবার দুইবেলায় নামিয়ে এনেছে। খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। অথচ জনগণের টাকা যে বিদেশে দুর্নীতিবাজরা নিয়ে গিয়েছে, সে ব্যাপারে কোনো কথা নেই। সেসব টাকা ফিরিয়ে আনারও কোনো উদ্যোগ নেই। কেবল সাধারণ মানুষকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। সরকারের এ প্রবণতা নতুন নয়। যখনই সরকার বিপদে পড়েছে কিংবা তার টাকার প্রয়োজন পড়েছে, তখনই সাধারণ মানুষের পকেটে হাত দিয়েছে। নানা উছিলায় পকেট থেকে টাকা বের করে নিয়েছে। সাধারণ মানুষের বলার কিছু ছিল না, এখনও নেই। আর সরকার মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে এ অজুহাত দেখিয়েছে। অথচ, তখনও দেশে দরিদ্র ও অতিদারিদ্র্য নির্মূল হয়নি। এসব রেখেই মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ নানা সূচক দেখিয়ে উন্নয়নের এক হুলুস্থুল পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই পরিবেশের মধ্যেই করোনা এসে বিরাট ধাক্কা দেয়। সরকার দাবী করেছে, ভালোভাবে এ ধাক্কা সামাল দিয়েছে। এর পরপরই ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা। এতেই উন্নয়ন এখন কাত হয়ে পড়ে যাওয়ার দশা হয়েছে। এমন পর্যায়ে যে, মাটিতে মিশে যাওয়ার উপক্রম। অনেকে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির সাথে তুলনা করছেন। কেউ কেউ বলছেন, ভেতরে ভেতরে দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে। বিদেশি ঋণের টাকা পুরোদমে পরিশোধ করা শুরু হলে তা প্রকাশ হয়ে পড়বে। এর আলামত দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়নে নেমেছে। কেউ কেউ বলেন, এটা সরকারি হিসাব। বাস্তবে রিজার্ভ আরও কম। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) বলেছে, ৫০-এর অধিক দেশ সবচেয়ে নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে বা খাদ্যসংকটে দুর্ভিক্ষের শিকার হতে পারে। এসব দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। এখানেই প্রশ্ন এসে যায়, আমরা যদি এতই উন্নতি করি এবং বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হই, তাহলে সবচেয়ে নাজুক ৫০ দেশের তালিকায় থাকব কেন? আমাদের তো এ তালিকার বাইরে থাকার কথা। দুর্ভিক্ষের মধ্যেই যদি পড়তে হয়, তাহলে কি উন্নতি করলাম? সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা তো এই কিছুদিন আগেও বলেছে, আমরা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াকেও ছাড়িয়ে গিয়েছি। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। যদি তাই হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন এত দুর্বিষহ হয়ে পড়বে কেন? খাদ্যসংকট দেখা দেবে কেন? লাখ লাখ টন খাদ্য আমদানি করতে হবে কেন? সাধারণ মানুষ এসব প্রশ্ন করতেই পারে।
তিন.
বিগত কয়েক মাস ধরে দেশে এমন কোনো পণ্য নেই, যার দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। নিত্যপণ্যের মূল্যে আগুন লেগে আছে। প্রতিদিনই এই আগুন তীব্র হয়ে উঠছে। সাধারণ মানুষ সে আগুনে পুড়ছে। খাবার কমিয়ে দিয়েছে। তিনবেলার জায়গায় দুইবেলা খাচ্ছে। দুইবেলার মধ্যেও পুষ্টিকর খাবার বাদ দিতে হচ্ছে। মাছ-গোশত তাদের কাছে স্বপ্নে পরিণত হচ্ছে। যত দিন যাবে, এ স্বপ্নও উধাও হয়ে যাবে। কারণ, সরকারই বলেছে দুর্ভিক্ষ ধেয়ে আসছে। তখন ডাল-ভাত খাওয়াই সাধারণ মানুষের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। এমনিতেই দেশের অর্ধেক মানুষ দরিদ্র হয়ে গেছে। দুর্ভিক্ষ লাগলে তখন তাদের কী অবস্থা হবে, তা কল্পনাও করা যায় না। যেখানে বেঁচে থাকার উপকরণ খাদ্যসংকট তীব্র হয়ে উঠবে, সেখানে সন্তানদের শিক্ষা খরচ, চিকিৎসা খরচ কীভাবে জোগাবে? এ মাসের মাঝামাঝি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওএফপি) এক জরিপভিত্তিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের শতকরা ৬৮ ভাগ মানুষ খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। ৮৮ শতাংশ মানুষ খাবারের চড়া দামকে তাদের জন্য বড় আঘাত হিসেবে বলেছে। এছাড়া রোগ ও চিকিৎসা ব্যয়, তেলের দাম ও পরিবহন ভাড়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের আঘাত করছে। অথচ গত সপ্তাহে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্ববাজারের তুলনায় নাকি জিনিসপত্রের দাম তেমন বাড়েনি। সাধারণ মানুষের সাথে এর চেয়ে বড় তামাশা আর কী হতে পারে! মন্ত্রী-এমপি, আমলারা জনগণের সেবা করার জন্য হলেও তারা যে শানশওকতে জীবনযাপন করে, তাতে কে বলবে তারা জনগণের সেবক? উল্টো তাদের জীবনযাপন ও লাইফস্টাইল দেখলে সহজেই বলা যায়, জনগণই তাদের সেবক। জনগণই তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। জনগণের অর্থে তাদের বেতন-ভাতা ও নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়। জনগণের পকেটের টাকা দিয়েই তারা আলিশান জীবনযাপন করছে। মন্ত্রী-আমলারা প্রগতির তৈরি বা বিদেশি যেসব পাজেরো গাড়িতে চড়েন তার একেকটির দাম গড়ে ৭০-৭৫ লাখ টাকা। অথচ চিত্র হওয়ার কথা উল্টো। সেবকদের সেবায় জনগণ চড়বে উন্নত গণপরিবহনে, আর তারা চড়বে তার সমান বা সাধারণ প্রাইভেট কারে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের মতো ক্ষমতাধর ও উন্নত দেশের শাসকদের দেখা গেছে, ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর চাকরি খুঁজতে কিংবা বাস-ট্রেনে চড়তে। আমরা দেখেছি, বারাক ওবামা ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর চাকরি খুঁজতে বের হয়েছেন। তার দুই মেয়ে সুপার শপে কাজ খুঁজতে গিয়েছে। যুক্তরাজ্য ও ইরানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ট্রেনে ও বাসে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের সাথে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। এমন আরও অনেক দেশের সরকার প্রধান রয়েছেন, যারা ক্ষমতায় থাকতে এবং ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করেছেন। নিজেরা সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করেছেন। খুব বেশি দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, পার্শ্ববর্তী ভারতে এমন অনেক মন্ত্রী-এমপি আছে, যারা সাধারণ মানুষের চেয়েও অতি সাধারণ জীবনযাপন করে। অথচ, দেশের এই দুঃসময়ের মধ্যেই খবর বের হয়েছে, শীর্ষ দুই আমলার জন্য ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এক সুইমিং পুলের ব্যয়ই নাকি ৬ কোটি টাকা। প্রশ্ন হচ্ছে, জনগণ কি এই বাড়িতে ঢুকতে পারবে কিংবা সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে পারবে? জনগণকে কষ্টে রেখে সেবকদের এমন ‘রাজারহাল’ বিশ্বের আর কোথাও কি আছে? যে দেশে জনগণের সেবকরাই রাজার মতো জীবনযাপন করে, সেদেশে দুর্ভিক্ষ লাগবে নাতো কী লাগবে? যে দেশে মন্ত্রী-এমপি হওয়া এবং সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়াকে জনসেবার পরিবর্তে নিজের জীবনের উন্নতির ‘আলাদিনের চেরাগ’ হাতে পাওয়ার মানসিকতা পোষণ করা হয়, সেদেশের জনগণের কপালে দুর্ভোগ ছাড়া আর কি থাকতে পারে? যে দেশে উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি ও লুটপাট এবং লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার হয় এবং উন্নয়নের ধোঁয়া তুলে জনগণকে গোলক ধাঁধায় ফেলা হয়, সে দেশ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি না হয়ে কি উপায় আছে? অথচ, সরকার গত ১৫ বছরে যতটুকু উন্নয়ন করেছে, তা যদি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে পারত, কঠোরভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ, অর্থপাচার, অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্পের নামে অর্থ লুটপাট ঠেকাতে পারত, তাহলে বড় ধরনের দুর্যোগেও তা সহজে টলে যেত না। সব উন্নয়ন যেন করোনার ধাক্কায় দুর্বল এবং ইউক্রেন যুদ্ধের ছয় মাসের মধ্যে হুড়মুড়িয়ে ধসে গেছে। করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের পিরিয়ড যদি তিন বছরও ধরি, তাহলে বাকি ১২ বছরে সরকার কি উন্নয়ন করল? দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা নিয়ে সরকারের এত গর্ব, সেই বিদ্যুতের এখন কী এক অসহায় পরিস্থিতি! বিদ্যুতের জন্য সাধারণ মানুষ তো বটেই, শিল্প-ব্যবসায়ীরাও হায়হায় করছে। তারা বলেছে, বিদ্যুতের অভাবে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শিল্পোৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। বিদ্যুতের এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে হাজার হাজার শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এতে ৪৫ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা অসহায় হয়ে বলছেন, দিনের বেলা বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধই করে দিতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে এলএনজি গ্যাস আমদানি করতে হয়, তা সর্বনিম্ন দামেও কেনার মতো রিজার্ভের সক্ষমতা নেই। অর্থাৎ দেশের অর্থভান্ডার ঋণাত্মক পরিস্থিতিতে চলে গেছে। সরাসরি বললে ফোকলা হয়ে গেছে।
চার.
দেশের আজকের যে পরিস্থিতি, তার জন্য সাধারণ মানুষ সরকারকেই দায়ী করবে এবং করছে। সরকার তাদের জীবনমানের টেকসই উন্নয়ন করতে পারেনি। সে শুধু সরকারি লোকজন ও তার ঘনিষ্ট শ্রেণির উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়েছে। একেকটি প্রকল্প করা হয়েছে তাদের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য। প্রকল্পের নামে সীমাহীন অর্থের লুটপাট ও অপচয় হয়েছে। এমন অনেক অপ্রয়োজনীয় ও কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নেয়া হয়েছে, যেগুলোর প্রয়োজন ছিল না। এগুলোর অনেকগুলোর কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে এগুলোর মাধ্যমে যা অর্থ লুটপাট করার কথা, তা হয়ে গেছে। এটা কল্পনাও করা যায় না, ঢাকা ওয়াসার চার প্রকল্পে ৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে! এমন আরও কত প্রকল্পে যে লুটপাট হয়েছে, তার কোনো হিসাব নেই। জনগণের এই অর্থ লুটপাটের দায় কি সরকারের নয়? যদি সরকার সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ হয়ে সেবকের ভূমিকা পালন করত, তাহলে কি আজ দুর্ভিক্ষের কথা বলতে পারত? দুর্ভিক্ষ বা দুঃসময় আসতেই পারে, তবে তার জন্য যে সবসময় প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন, তা কি সরকার নিয়েছিল? দুর্দিনের জন্য কি কিছু সঞ্চয় করে রেখেছিল? রাখেনি বলেই আজ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে।
darpan.journalist@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন