বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

নীলফামারীর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো পরিবহন

সৈয়দপুর (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০২২, ৩:২২ পিএম

রংপুর পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘটে অচল উত্তরের জেলা নীলফামারী। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ জনগণ। (২৮ অক্টোবর) শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে এই পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। মহাসড়কে নসিমন, করিমন, থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ এবং রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কে ‘প্রশাসনিক হয়রানি’ বন্ধের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহনের এই সংগঠন।

শুক্রবার সকালে সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, পরিবহন বন্ধ থাকায় দূর-দূরান্তের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ছেড়ে যাচ্ছে না কোনো বাস। সাধারণ যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেছে, শনিবার রংপুরে বিএনপির মহাসমাবেশ বানচাল করতে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে জনগণকে জিম্মি করা হয়েছে। আমরা রাজনীতি করি না, তাহলে কেন এই দুর্ভোগ? অন্যদিকে বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেছেন, পরিবহন ধর্মঘট ডেকে সব বাহন বন্ধ করে দিলেও শনিবারের বিভাগীয় গণসমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেবে। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, পরিবহন ধর্মঘট মালিকদের ব্যাপার, আওয়ামী লীগের নয়।

সৈয়দপুর বাস টার্মিনালে আসা ঠাকুরগাঁওয়ের দম্পতি আরিফুল ইসলাম ও সাবিয়া আকতার বলেন, জরুরি কাজ থাকায় ঢাকাগামী একটি কোচে রাতে সৈয়দপুরে এসেছি। এখন ফিরে যেতে হবে ঠাকুরগাঁওয়ে। কিন্তু টার্মিনালে এসে দেখি বাস চলছে না। এটা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাস ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। বেশি ভাড়া দেওয়ার শর্তে বিকল্প পন্থায় যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেড এলাকার আনিছুর রহমান বলেন, বড় বোন রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে এখন ইজিবাইকে যেতে হবে। এতে ১০০ টাকার ভাড়ার স্থলে আমার ২৫০ টাকা মাশুল গুনতে হবে। আমার যত কষ্টই হোক যেতে হবে। তিনি বলেন, যে দাবি নিয়ে পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে সংগঠনটি, তা শুধু এই অঞ্চলে কেন? সারা দেশে একযোগে ডাক দিতে পারত। অথচ অন্য কোথাও পরিবহন ধর্মঘট নেই। তাই নিশ্চিত, রাজনৈতিক কারণে বাস ধর্মঘট ডেকে যাত্রীদের হয়রানি করা হচ্ছে।

নীলফামারী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি শাহনেওয়াজ শানু বলেন, রংপুর পরিবহন মালিক সমিতির ডাকে এ ধর্মঘট চলছে। তবে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়, মহাসড়কে নসিমন, করিমন ও থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যান চলাচলের প্রতিবাদে ধর্মঘট। এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো মানা না হলে প্রয়োজনে আরও সময় বাড়তে পারে। তা ছাড়া পরিবহনের শ্রমিকেরা এই ধর্মঘটের সমর্থন দিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে পরিবহন বন্ধ রেখেছে। তিনি দাবি করেন, তাদের ডাকা ধর্মঘটের সঙ্গে বিএনপির গণসমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা শাখার আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার বলেন, শনিবার আমাদের রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ। এই সমাবেশ যেন নেতা-কর্মীরা কোনোক্রমেই উপস্থিত হতে না পারে; এ কারণে সমাবেশের দুই দিন আগে থেকেই পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। বিএনপি কোনো সমাবেশের ডাক দিলেই আওয়ামী সরকার সব সময় এমনটাই করে থাকে। তিনি আরও বলেন, সব বাধাবিঘ্ন উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করা হবে। রংপুরের গণসমাবেশ হবে জনসমুদ্র।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মো. মোখছেদুল মোমিন জানান, বিভিন্ন দাবি নিয়ে পরিবহন মালিকেরা ধর্মঘট ডেকেছেন। এটা পরিবহনসংশ্লিষ্ট সংগঠনের ব্যাপার, আওয়ামী লীগের নয়। বিএনপির নেতারা প্রতিটি সমাবেশে মনগড়া বক্তব্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন