চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং পুনরায় দেশের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়েছেন। এটা তার তৃতীয় মেয়াদের যাত্রা। এই পথে তার প্রথম যাত্রা শুরু হয় ২০১২ সালে। তখন তিনি প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। আগামী মার্চে তিনি তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট হবেন তা নিশ্চিত। ইতোপূর্বে দেশটির কমিউনিস্ট বিপ্লবের নায়ক মাও সেতুং ছাড়া অন্য কেউই পরপর তিনবার ক্ষমতার শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত হতে পারেননি। এ ব্যাপারে বিধান ছিল সর্বোচ্চ দুই বারের। কিন্তু শি সে বিধান বাতিল করেন ২০১৮ সালে। ফলে তৃতীয় মেয়াদে তার শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। চীনের একটিমাত্র রাজনৈতিক দল চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) শাসিত। পার্টির সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই সবকিছু চলে, যার সর্বোচ্চ ক্ষমতাস্তর তিনটি। প্রথম জেনারেল সেক্রেটারি, দ্বিতীয় সশস্ত্র বাহিনীর চেয়ারম্যান ও তৃতীয় প্রেসিডেন্ট। এই তিনটি স্তরেরই প্রধান শি। গত ১৬-২২ অক্টোবর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী ২০তম জাতীয় কংগ্রেসে তাকে এসব পদের অধিকারী করা হয়েছে। এ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় রাজধানী বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে। দেশটির জাতীয় কংগ্রেস ও নেতা নির্বাচিত হয় ৫ বছর পর পর। এবারের অত্যন্ত সফলভাবে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসে সিসিপির কেন্দ্রীয় সব স্তরের নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছে। তাতে শির ভক্তরাই বেশি নির্বাচিত হয়েছেন। তবে, নতুন পলিটব্যুরোর সদস্যদের মধ্যে কোন নারী নেই। কংগ্রেসে সকল বক্তাই তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিষয়ে চীন কোন ছাড় দেবে না এবং দৃঢ়ভাবে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করা, দৃঢ়ভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সাহায্য করার বিষয়ে দৃঢ় মত ব্যক্ত করেছেন। কংগ্রেস দ্বারা অনুমোদিত একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, শি’র নেতৃত্ব চীনা জাতির পুনরুজ্জীবনকে একটি অপরিবর্তনীয় ঐতিহাসিক পথে স্থাপন করেছে।
চীন বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ। উপরন্তু দেশটি এখন বিশ্বের দ্বিতীয় পরাশক্তি। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ প্রধান পরাশক্তিতে পরিণত হবে বলে বিশ্ব পণ্ডিত ও সংস্থাগুলোর অভিমত। চীনের এই শক্তি আর্থিক, সামরিক, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিল্প, সাহিত্য তথা আধুনিক বিশ্বের চাহিদাসম্পন্ন সব ক্ষেত্রেই। তার শক্তি শুধুমাত্র এই ধরিত্রীতেই নয়, বিস্তৃত হয়েছে মহাবিশ্বে পর্যন্ত। যেমন: চীন মহাবিশ্বে নিজস্ব মহাকাশ ষ্টেশন নির্মাণ করছে, যা অচিরেই সম্পন্ন হবে। এছাড়া, দেশটি কৃত্রিম সূর্য ও কৃত্রিম চাঁদ তৈরি করেছে। একদা আফিম খেয়ে বুঁদ হয়ে থাকা জাতির এই উন্নতি বিশ্বের সর্বাধিক বিস্ময়করের অন্যতম। ১৯৪৯ সালে মাও সেতুংয়ের নেতৃত্বে কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর থেকেই তার যাত্রা শুরু। তবে, উন্নতি বেগবান হয়েছে ১৯৭৬ সালে বর্ষীয়ান কমিউনিস্ট নেতা দেং পিয়াং দেশটির ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে। দেং নেতৃত্ব পেয়েই বিশ্বখ্যাত থিউরী দেন, বিড়াল সাদা না কালো তা দেখার বিষয় নয়, সে ইঁদুর ধরে কি-না সেটাই দেখার বিষয়। অর্থাৎ সিপিসির সদস্য না হলে কেউ কোন কাজের সুযোগ পাবে না নীতির পরিবর্তন করেন। ফলে দেশটির বদ্ধ দুয়ার খুলে যায়। দল-মত নির্বিশেষে সকলেই কাজ করার অবাধ সুযোগ পেয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। উপরন্তু বিদেশি বিনিয়োগের পথ উন্মুক্ত হয়। চীনও বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ শুরু করে। এর ফলে বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রকল্প বিআরআই। চীনের জাতীয় উন্নয়ন কমিশনের মুখপাত্র মেং ওয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর বলেন, চীন এখন পর্যন্ত বিআরআইয়ের আওতায় ১৪৫টি দেশ ও ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চীনেও বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ব্যাপক। আঙ্কটাডের তথ্য মতে, ২০২০ সালে এফডিআই এসেছে যুক্তরাষ্ট্রে ১৩৪ বিলিয়ন ডলার আর চীনে ১৬৩ বিলিয়ন ডলার। অথচ, ২০১৯ সালেও এফডিআই ছিল যুক্তরাষ্ট্রে ২৫১ বিলিয়ন ডলার আর চীনে ১৪০ বিলিয়ন ডলার। সর্বোপরি বিশ্বব্যাপী করোনার ভ্যাকসিন দিয়ে সর্বাধিক সহায়তা করেছে চীন। দেশটির বিস্ময়কর উন্নতির দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, ১৯৭৮ সাল থেকে এক সন্তান নীতি চালু। এটা না হলে এতোদিনে দেশটির জনসংখ্যা বর্তমানের প্রায় দ্বিগুণ হতো। ফলে সব উন্নতির সক্ষমতা অধিক জনসংখ্যার গহ্বরে চলে যেত। অবশ্য, ২০১৫ সাল থেকে চীন দুই সন্তান নীতি চালু করেছে। বয়স্ক লোকের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি ও কম বয়সী মানুষের সংখ্যা অনেক কমে যাওয়ায় কাজের লোকের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাই দুই সন্তান নীতি চালু করেছে দেশটি। সর্বোপরি দেশটির মানুষ কর্মঠ, নিষ্ঠাবান, শৃঙ্খলাবদ্ধ। সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণেই চীন আজ আধুনিক বিশ্বের দ্বিতীয় পরাশক্তিতে পরিণত হয়েছে। আর সেই চীনের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হচ্ছেন শি। তাই তিনি এখন চীনের নতুন আইকন বলে খ্যাত হয়েছেন দেশটিতে। এর আগে মাও সেতুং দেশটির আইকন বলে খ্যাত ছিলেন। উপরন্তু শি বর্তমান বিশ্বেরও শ্রেষ্ঠ নেতা বলে খ্যাত হচ্ছেন। ইতোপূর্বেও তিনি কয়েকবার বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসাবে মনোনীত হয়েছেন বিশ্বখ্যাত সংস্থার মাধ্যমে।
চীন বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হয়েও তেমন কোন যুদ্ধ-সংঘাতে সংশ্লিষ্ট হয় না। এমনকি কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়েও জড়ায় না। আগে বিভিন্ন দেশে বিপ্লব রফতানি করলেও তা বন্ধ করে দিয়েছে অনেক দিন থেকেই। দেশটির উপ-প্রচার মন্ত্রী সুন ইয়ে গত ২৪ অক্টোবর বলেন, ‘চীন নিজের বৈশিষ্ট্য রপ্তানি করে না, অন্য দেশকে চীনের বৈশিষ্ট্য অনুসরণ করার দাবিও জানায় না’। চীনারা সদা মশগুল দেশের সার্বিক উন্নতি এবং বিশ্বে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি নিয়ে। তবুও আমেরিকা দেশটিকে প্রধান শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। দেশটিকে পঙ্গু করার লক্ষ্যে বহু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সর্বোপরি তাইওয়ান নিয়ে যুদ্ধ বাধানোর পাঁয়তারা করছে। অথচ তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রায় সকলেই মানে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র আর এক শক্তিশালী দেশ রাশিয়াকেও চরম শত্রু বলে ঘোষণা করেছে, অনেক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাই শত্রুর শত্রু হিসেবে চীন ও রাশিয়ার সম্পর্ক মধুর হয়েছে। সে সাথে আরো কিছু দেশেরও। আমেরিকার এসব অপকর্মে সহায়তা করছে তার মিত্ররা। তাতে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা করছে তাদের মিডিয়া, বিশেষ করে পশ্চিমা মিডিয়াগুলো। তারা অনবরত নেতিবাচক খবর প্রকাশ করছে চীন-রাশিয়া বলয়ের বিরুদ্ধে। শির তৃতীয় মেয়াদের দায়িত্ব প্রাপ্তিতেও নানা নেতিবাচক খবর প্রকাশ করছে। তাই পাশ্চাত্যের গণমাধ্যমগুলোর আধিপত্যকামী নীতি রুখতে এশিয়ার গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম বলে জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অফ এশিয়া-প্যাসিফিক নিউজ এজেন্সি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইরান সন্মলনে।আমেরিকা ও তার মিত্ররা বৈশ্বিক কর্তৃত্ব হারানোর ভয়েই এসব করছে। তাদের দ্বিতীয় লক্ষ্য হচ্ছে, অস্ত্র ব্যবসা অটুট রাখা। তারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার আড়ালে বর্ণবাদও চাঙ্গা করছে। অপরদিকে, চীন-রাশিয়া বলয়ের লক্ষ্য হচ্ছে, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, বহুপক্ষীয় বিশ্ব, সকলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তথা শান্তি ও উন্নতি। তাই বিশ্ববাসী তাদের দিকেই ঝুঁকছে। মুসলিম দেশগুলোও ঝুঁকে পড়েছে এদিকে।ওআইসির মহাসচিব গত ২৪ অক্টোবর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, রাশিয়াকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে ঘোষণা করেছে ওআইসি। চীনেরও সাথে একই অবস্থা চলছে। ফলে, চীন-রাশিয়া বলয়ের শক্তি ও সমর্থন বাড়ছে। আর মার্কিন বলয়ের শক্তি ও সমর্থন হ্রাস পাচ্ছে।
যা’হোক, শির তৃতীয় মেয়াদে চীনের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার বিষয়টি এখন টক অব দ্যা ওয়ার্ল্ড-এ পরিণত হয়েছে। বহু দেশের রাষ্ট্রনায়ক ও বিশিষ্ট ব্যক্তি তাকে অভিনন্দন জানিয়ে তার সাফল্য কামনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বাংলাদেশ, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, কিউবা, ভিয়েতনাম, লাওস, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ফিলিস্তিন, সার্বিয়া,চেক প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তার অভিনন্দন বার্তায় বলেছেন, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে একটি ব্যাপক অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অব্যাহত রাখতে তিনি উন্মুখ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিঃসন্দেহে পুনর্নির্বাচন আপনার নেতৃত্ব, সাফল্য ও দৃষ্টিভঙ্গির ওপর চীন এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের আস্থার একটি উপযুক্ত স্বীকৃতি। থাইল্যান্ড কংগ্রেসের চেয়ারম্যান চুয়ান বলেছেন, চীনের সর্বোচ্চ নেতা স্পষ্টভাবে বুঝেছেন, সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য বহুপক্ষবাদ প্রয়োজন।
উল্লেখ্য যে, চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নের পথের যাত্রা শুরু করেন মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী।তিনি ১৯৬৩, ১৯৬৪ ও ১৯৬৬ সালে চীন সফর করেন। তৎপ্রেক্ষিতে মাও সেতুং বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ ১৯৬৭ সালে একটি ট্রাক্টর উপহার দেন বাংলাদেশকে, যা এখন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। ভাসানী সৃষ্ট এই সম্পর্ককে আরো গভীর করেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সে সম্পর্ক এখনো বিদ্যমান আছে। ফলে, চীন আজ বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার ও অকৃত্রিম বন্ধুতে পরিণত হয়েছে।
শি জিন পিং বড় হয়েছেন বেইজিংয়ে। তার বাবা শি ঝং জুন একজন বিপ্লবী নায়ক তথা সিপিসির ভাইস প্রিমিয়ার ও উপ প্রধামন্ত্রী ছিলেন। তাই কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর তিনি থাকতেন বেইজিংয়ে কমিউনিস্ট নেতাদের জন্য তৈরি সুরক্ষিত আবাসিক কমপ্লেক্সে। সেখানেই বড় হন শি। কিন্তু মাও এর সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় ১৩ বছর বয়সে স্কুলের শিক্ষা বন্ধ করে তিনি কৃষি কাজে সম্পৃক্ত হতে বাধ্য হন। তখন কোদাল দিয়ে তার মাটি কাটার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি। তাতে প্রকাশ, শি সেখানে বছরের পর বছর কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। তখন তাঁকে গুহায় ঘুমাতে হতো। এ বিষয়ে শি ১৯৯২ সালে ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘কাজের চাপে আমি মানসিকভাবে বড় ধাক্কা খেয়েছিলাম। ২০১৬ সালে এএফপির প্রতিনিধি ওই গুহায় গিয়ে এক স্থানীয় ব্যক্তির কাছে জানতে পারেন, শি কঠোর পরিশ্রম করতেন তখন। এর মধ্যেই যখন বিরতি পেতেন, তখন বই পড়তেন। পার্টির প্রাথমিক সদস্যপদ পেতে বড় কষ্ট হয়েছিল শির। বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন নাছোড়বান্দা। গ্রামের রাজনীতি দিয়েই তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু। তারপর পর্যায়ক্রমে উপরে উঠার পালা। যেমন: ১৯৭৪ সালে গ্রামের দল প্রধান, ১৯৯৯ সালে ফুজিয়ানের গভর্নর, ২০০২ সালে ঝেজিয়াং প্রদেশের পার্টি প্রধান এবং ২০০৭ সালে সাংহাইয়ের পার্টি প্রধান ও একই বছর পলিটব্যুরোর স্থায়ী কমিটির সদস্য হন। তবে বাবার সুবাদে পার্টিতে তার খুব দ্রুত উন্নতি হয়। শির ব্যাপারে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অভিমত: প্রতিভা ও মানুষকে রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত করার দক্ষতার দিকে শি অতুলনীয়। তার লক্ষ্য চীনকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করা। তিনি খুব নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করেন এবং দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলস প্রচেষ্টা চালান। তিনি খুবই স্বল্পভাষী,অত্যন্ত গম্ভীর প্রকৃতির ও প্রচার বিমুখ। তাই স্বজনদের সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। অর্থাৎ ত্যাগ, নিষ্ঠা এবং সুদক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণেই শি আজ আধুনিক চীনের মাও সেতুং বলে খ্যাত হয়েছেন। কংগ্রেসের অনুষ্ঠান শেষে শি বলেন, আমাদের ওপর জনগণ যে আস্থা রেখেছে তার জন্য আমি পুরো পার্টিকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। কমিউনিস্ট পার্টি এবং মানুষ যে আস্থা রেখেছে তা প্রমাণ করার জন্য দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাব। বর্তমানকালে চীনকে বিশ্বের খুব প্রয়োজন। বিশ্বকেও চীনের প্রয়োজন। ইতোপূর্বে তিনি গত ৩-৪ ডিসেম্বর বেইজিংয়ে চীনের জাতীয় ধর্মীয় কর্মসভা অনুষ্ঠানে সমাজতন্ত্রের সঙ্গে স্বাধীন ধর্মের সঙ্গতি বেগবান করার নির্দেশনা দেন। শি জি পিংয়ের দক্ষ নেতৃত্বে চীন ও বিশ্বের সার্বিক উন্নতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক, সেটিই কাম্য।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
sardarsiraj1955@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন