মেঘনায় মা-ইলিশ রক্ষা নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ায় জেলে অধ্যুষিত ভোলার দৌলতখানের মেঘনা পাড়ে জেলে পল্লীর জেলেদের মাঝে বিরাজ করছে খুশির আমেজ। আজ ২৮ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ভোলার দৌলতখানের জেলেরা ইলিশ শিকারে ছুটবেন মেঘনায়। বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে কয়েক শত ট্রলার। ঘাটে ট্রলার গুলোকে সারিবদ্ধ ভাবে সুসজ্জিত করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুক্রবার বিকালে দৌলতখানের পাতার খাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহনে প্রয়োজনীয় রশদ, চাল, ডাল, জ্বালানিতেল, গ্যাস সংগ্রহ করলেও মহা সংকটে পড়েছেন জেলেরা বরফ সংকটে। সিত্রাংয়ের বিরুপ প্রভাবে ঝড়ের কবলে গোটা উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ায় বরফ কল গুলোতে বরফ উৎপাদন বন্ধ থাকায় এসংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে জেলেরা জানিয়েছেন। মা- ইলিশ রক্ষা অভিযানে ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার রাতের প্রথম প্রহর ১২টা ১ মিনিট থেকে ইলিশ শিকার শুরু হবে। মেঘনায় ও সাগরে যাওয়ার জন্য জেলেরা জাল বুনন, ট্রলার মেরামত ও পুরাতন জাল সেলাই, রিপুসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘ অলস সময় পার করে শেষ মুহুর্তে আনন্দে মুখরিত জেলে পল্লীর জেলেরা।
সরেজমিন, উপজেলার পাতার খাল, মেদুয়া মাছ ঘাট, ঘোষেরহাট, মাঝির হাট, এছহাক মোড়সহ মেঘনা পাড়ের বেশকিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মাছ শিকারে প্রস্তুতি নিতে জেলেদের ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। নদীর তীর এলাকায় রাখা হয়েছে সারি সারি নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে এখন নদীতে নামার অপেক্ষায় জেলেরা। জেলেদের পদচারণায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে জেলে পল্লীগুলোতে। জেলে পরিবারগুলো স্বপ্নে বিভোর ইলিশ শিকারে। মাছ শিকারে তাদের অভাব দূর হবে। ফিরে আসবে স্বচ্ছলতা।
উপজেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর ছিদ্দিক মিয়া জানান, বরফ সংকট ও পর্যাপ্ত বরফ না পাওয়া যাওয়ায় সাগর পানে ট্রলার ছুটতে আরও দুই, এক দিন সময় লাগতে পারে। ইলিশ শিকারে সাগরে একটি ট্রলার পাঠাতে ৪ লাখ টাকা খরচ গুণতে হচ্ছে।
নুর নবী মাঝি ও আলাউদ্দিন মাঝি বলেন, টানা ২২ দিন নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ধার দেনা করে দিন পার করেছি। আজ মধ্যরাত থেকে পুনরায় মাছ শিকার শুরু হবে। মৎস্য ব্যবসায়ী হাজী কামাল বলেন, জেলেরা জাল নৌকা প্রস্তুত করে রেখেছে। রাত পোহালেই চকচকে রুপালী ইলিশ নিয়ে ঘাটে ভিরবে নৌকাগুলো। সরগরম হয়ে উঠবে মাছঘাট। দৌলতখান উপজেলা মৎস্য অফিসার মাহফুজুল হাসনাইন ইনকিলাবকে বলেন, এবছর মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞার সময় বেশির ভাগ জেলে আইন মান্য করে মাছ ধরা থেকে বিরত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন