শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

জনসমাগম কাকে বলে বিএনপিকে বুঝিয়ে দেবে আওয়ামী লীগ

সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনসমাগম কাকে বলে, আওয়ামী লীগ তা শনিবার থেকে বিএনপিকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। গতকাল নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি এ ঘোষণা দেন।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে আগে যেখানে বাণিজ্য মেলা হতো, সেই মাঠে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন আজ শনিবার। আগে এ সম্মেলন ঢাকা শহরে হতো না। বিএনপির ধারাবাহিক সমাবেশের পাল্টা জবাব দিতেই এ সম্মেলন ঢাকায় হচ্ছে। সেখানে ব্যাপক জনসমাগম করার প্রস্তুতি চলছে।
বিএনপির তিনটি সমাবেশ দেখেই সরকারের কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে সরকারের কাঁপাকাঁপির কী আছে? কোনো কোনো সমাবেশে ১০ লাখের টার্গেট করেও ১ লাখ হয়নি, আবার কোথাও ৫ লাখ টার্গেট করে ১ লাখের অর্ধেকও হয়নি। এটাই তো বিএনপির সমাবেশের চেহারা।

ওবায়দুল কাদের আরো চ্যালেঞ্জ করে বলেন, আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরীতে ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলনে কত হাজার লোক হয়েছে, তা দেখুন; যা পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খেলা হবে বলা প্রসঙ্গে বলেন, যারা ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে বলেছি। খেলা হবে হাওয়া ভবন, লুটপাট, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে; খেলা হবে দুর্নীতি, বিদ্যুৎবিহীন খাম্বার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, খেলা হবে সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার সৃষ্টিকারী, ভোট চুরি আর জালিয়াতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে দেশের উন্নয়নবিরোধীদের বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির লালন ও পালনকারীদের বিরুদ্ধে। খেলা হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে না, তাদের বিরুদ্ধে।

নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা না দিলে কোনো নির্বাচন হবে না বিএনপির মহাসচিবের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাদের দৃষ্টিতে নিরপেক্ষতার মানদণ্ড কী, সেটার প্রমাণ তো আপনারা ক্ষমতাসীন হয়ে বারবার দেখিয়েছেন।
বিএনপির নেত্রীই তো একসময় বলেছিলেন পাগল আর শিশু ছাড়া কেউই নিরপেক্ষ নন, তাহলে আপনারা কি পাগল ও শিশু দ্বারা পরিচালিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন চান? তিনি বলেন, ক্ষমতার মোহে অন্ধ বিএনপির নেতারা সেটাই চাইতে পারেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ দেশে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন রয়েছে, যার অধীন যথা সময়ে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সরকার শুধু নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেবে। নির্বাচন কোনো ব্যক্তিবিশেষ বা কোনো দলের খেয়ালখুশিমতো হবে না, এমনটা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, একইভাবে বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে।

দেশের রিজার্ভ নিয়ে বিএনপি কথা বলে কোন মুখে, এটা জনগণের প্রশ্ন, এমন দাবি করে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘রিজার্ভের টাকা সরকার গিলে ফেলেছে নাকি আমদানি ব্যয়ে দেশের উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণে ব্যয় করেছে? রিজার্ভের টাকা তো গিলে ফেলেছে ফখরুল সাহেবরা। রিজার্ভ কত রেখে গিয়েছিলেন মনে আছে? যখন ক্ষমতা ছেড়েছেন, তখন যা রেখে গিয়েছিলেন, তা পাঁচ বিলিয়নেরও কম।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আমলে রিজার্ভ তো শূন্যই ছিল, সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ৪৮ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আমাদের রিজার্ভ উঠেছিল। এখন বৈশ্বিক সংকটের কারণে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে ৩৬ বিলিয়নে এসে ঠেকেছে। এ সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়, দুনিয়ার সব উন্নত দেশ হিমশিম অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে যে রিজার্ভ রয়েছে, তা দিয়ে আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাস সরকার আমদানি করতে পারবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরিবহন ধর্মঘটের জন্য মালিক শ্রমিকদের প্রতি উপদেশ বর্ষণ করছেন বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০১৩-১৪ সালে যখন শত শত গাড়ি বিএনপি ভাঙচুর করেছিল, পেট্রল নিক্ষেপ করে গাড়ি ও পরিবহনশ্রমিকদের পুড়িয়ে মেরেছিল, পরিবহন শ্রমিকদের রিজিকের ওপর হাত দিয়েছিল এবং মালিক শ্রমিক পরিবারকে নিঃস্ব করেছিল, তারা সেটা এখনো ভুলে যায়নি। ভুলে যায়নি বিএনপির সেই আগুনসন্ত্রাস ও জ্বালাও পোড়াও রাজনীতি। পরিবহনমালিক শ্রমিক নির্দিষ্ট কোনো দলের নন, এখানে সব দলেরই লোক আছে।

ওবায়দুল কাদের বিএনপির নেতাদের স্মরণ করে দিয়ে বলেন, পরিবহনমালিক সংগঠনের সভাপতি আওয়ামী লীগের, সাধারণ সম্পাদক বাসদের, বিএনপির বড় নেতা শিমুল বিশ্বাসও বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাঁকেই জিজ্ঞেস করুন, কেন ধর্মঘট করেছেন?

তিনি আরো বলেন, সব দলের সমন্বয়ে মালিক সমিতি। সেখানেও প্রেসিডেন্ট হচ্ছে জাতীয় পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি আওয়ামী লীগের, অন্যান্য সকল দলেরই প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। বিএনপি নেতাদের তাঁদের সঙ্গে কথা বলার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের জিজ্ঞেস করুন, কেন তারা আপনাদের ভয় পায়, কেন ২০১৩-১৪ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেনি, তাদের জিজ্ঞেস করুন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন