গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় দুই গুরুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ইউপি সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার সকালে উপজেলার রাধাগঞ্জ বাস্ট্যান্ডে দুই গুরুপের মধ্যে থেমে থেমে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত এবং কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাংচুর করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উপজেলার দিঘলীয়া গ্রামের ইলিয়াস শেখের সঙ্গে একই গ্রামের মামুন শেখের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চেলে আসছিলো। এঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে মামুন শেখের লোকজন ইলিয়াসের সমর্থক স্থানীয় ইউপি সদস্য মারুফ শেখসহ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করে। গুরুতর অবস্থায় মারুফ শেখকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মারুফ শেখকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুই পক্ষের লোকজন আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ইলিয়াস গুরুপের ইউপি সদস্য মারুফ শেখ,(৩২) সোহাগ শেখ, (২৮) এনাযেত শেখ,(৪০) সিদ্দিক শেখ (৫০) জাকাত শেখ (২৮) অপর পক্ষের বাবুল ফকির (৫০) শেরজন শেখ(৫০) ইউসুফ শেখ (৪০) শেফালী বেগম (৩০)সহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। আহতদের কোটালীপাড়া সহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইলিয়াস শেখ বলেন, ‘মামুন শেখের লোকজন অন্যায়ভাবে পিটিয়ে ইউপি সদস্য মারুফ শেখের হাত-পা ভেঙে দিয়েছে। মামুন শেখ ও তাঁর লোকজন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের অত্যাচারে আমরা এলাকায় বসবাস করতে পারছি না। আমরা মামুন শেখ ও তাঁর লোকজনের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
অপরদিকে মামুন শেখ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন ইউপি সদস্য মারুফ শেখের ওপর কারা হামলা করেছে তা আমার জানা নেই।’তবে ইলিয়াস শেখের লোকজন আমাদের বেশ কয়েকটি বসত বাড়িতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যপক ভাংচুর করে লুটপাট চালিয়েছে। সামিরা বেগম বলেন ইলিয়াস শেখের লোকজন আজ পস্চিমকান্দি মহিলাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে, আহতদের হাসপাতালে ও নিতে দিচ্ছেননা এবং আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর করে লুটপাট চালিয়েছে। মনিরা বেগম ও শেখ দেলোয়ার হোসেন বলেন আজ শনিবার সকালে মিটুল শেখের নেতৃত্বে ইলিয়াস শেখের ২০/২৫ জন লোকএসে ইশ্রাফিল শেখ এর বসত ঘর,রান্না ঘর,ভাংচুর করে,এবং সাইদুর রহমানের পাকা ভবনের জানালা দরজা রান্নাঘর ভাংচুর করে লুটপাট চালায়, শেখ দেলোয়ার হোসেন আরো বলেন আজ শনিবার সকালে আমি একাবাড়িতে অবস্হান করছিলাম এসময় দেখি ইলিয়াস শেখের লোকজন রামদা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে ইশ্রাফিল শেখ, মামুন শেখ ও সাইদুরের বাড়িঘর ভাংচুর করে লুটপাট করে।
এছাড়াও তারা মুন্না শেখের মুন্না রেস্টুরেন্ট,সিরাজ শেখের চায়ের দোকানে, আলমগীর শেখের চায়ের দোকানে, সাইফুল শেখের চায়ের দোকান ও সান্টু ফকিরের চায়ের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, মারপিটের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন