ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ আদম তমিজি হক বলেছেন, রাজনীতির মাঠকে গরম করার চেষ্টা করছে বিএনপি। একের পর হুমকি-ধমকিতে তা-ই প্রমাণিত হচ্ছে। এ অবস্থায় ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে মনে করার সুযোগ আছে।
এক নিবন্ধে তিনি এসব কথা বলেন। নিবন্ধটি তুলে ধরা হল: এই সভার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সম্মেলন, প্রতিপক্ষ মোকাবিলা ও জাতীয় নির্বাচন এর প্রস্তুতি ইস্যুতে নেতাদের মধ্যকার অর্থবহ আলোচনার মাধ্যমে দাঁড় করানো হয়েছে রাজনৈতিক রুপরেখা। আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হবে।
দলের সাধারণ সম্পাদক কে হতে পারেন--- তা নিয়ে আলোচনা রয়েছে। ওবায়দুল কাদের নাকি অন্য কেউ? জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, ড. আবদুর রাজ্জাক, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবুল আলম হানিফদের মত জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্য থেকেও বেছে নেয়া হতে পারে আগামী দিনের সাধারণ সম্পাদক কে ? ওবায়দুল কাদেরও থেকে যেতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ ওই পদে কিংবা শেখ হাসিনার সমর্থন নিয়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে আসতে পারেন অন্য কেউ। জাতীয় নির্বাচনের এখনও এক বছরের বেশি সময় বাকি। তাছাড়া বিএনপি এখন যে সব কর্মসূচি পালন করছে, তা তাদের চূড়ান্ত কর্মসূচিও নয়। ফলে এখনই পালটাপালটি কর্মসূচি দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার নীতিতে নেই আওয়ামী লীগ। বিএনপি চূড়ান্ত আন্দোলনে গেলে বা ‘সহিংস কর্মকাণ্ড’ শুরু করলে তখন মাঠে পালটা কর্মসূচির ঘোষণা এসেছে ও আসবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। তার আগে, বিএনপির উসকানিতে পা না দিয়ে সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশনাও এসেছে উক্ত সভায়। ইতোমধ্যে ৪ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা চিটাগাং এর জনসভায় যোগ দিবেন বলে চাউর রয়েছে। এদিকে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় বিএনপি উন্মাদ হয়ে গেছে। তারা দেশকে আবার অস্থিতিশীল করতে চায়। কিন্তু এদেশের মহান স্বাধীনতা থেকে সব অর্জন-উন্নয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই হয়েছে। কাজেই আমাদের অনেক ধৈর্যের সঙ্গে এগোতে হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।এ কথা তো সত্য, বিএনপি কখনোই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তাদের একমাত্র লক্ষ্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা। তাদের এই ষড়যন্ত্র সব সময়ই চলে। এখন তারা আবার ১০ ডিসেম্বর নিয়ে হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।আওয়ামী লীগ নিশ্চয় বিএনপির পাতা ফাঁদে পা দেবে না। সামনে আমাদের জাতীয় সম্মেলন। এরপর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জনগণকে নিয়ে কেউ খেলতে চাইলে, তাদের ফাঁদে ফেলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইলে, সেটা কি আমরা মেনে নেব? সহ্য করব? জনস্বার্থেই আমাদের তাদের রুখতে হবে।আমরাও চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। সে কারণেই জাতীয় নির্বাচনের আগে দলটিকে মাঠের কর্মসূচিতে ‘কঠোরভাবে বাধা দেওয়া হবে না’। তবে আবার একেবারে মাঠ ছেড়েও দেওয়া হবে না।২৮ গণভবনে অনুষ্ঠেয় ওই সভায় দলটির জাতীয় সম্মেলনের রোডম্যাপ চূড়ান্ত হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর হতে যাচ্ছে দলটির সম্মেলন। এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনের বিষয়েও নির্দেশনা এসেছে। পাশাপাশি আগামী দিনের দিবসভিত্তিক কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। জানা যায়, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত আওয়ামী লীগ বেশকিছু দিবস পালন করবে। এগুলো হলো: ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবস, ১০ নভেম্বর শহিদ নূর হোসেন দিবস, ২৭ নভেম্বর শহিদ ডা. মিলন দিবস, ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী, ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস।আওয়ামী লীগ সর্বোচ্চ গণতান্ত্রিক একটি দল। আওয়ামী লীগ এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করুক। একবার নয়, দুইবার নয়, বারবার ক্ষমতায় আসুক আওয়ামী লীগ। এই আশাবাদ জাগিয়ে রেখেই চলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হয়ে রাজনৈতিক অপশক্তি মোকাবিলায় সেরাটা দেয়ার প্রাণান্ত চেষ্টায় থাকব। আওয়ামী লীগ অতি অবশ্যই নিজেদের জনপ্রিয়তা প্রদর্শন করেই প্রমান করতে যাচ্ছে যে, দলটি জনস্বার্থ সংরক্ষণে দেশের শ্রেষ্ঠ দলও বটে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন