বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দক্ষিণাঞ্চলে করোনার দাপট কমলেও ডায়রিয়ার সাথে ডেঙ্গুও চোখ রাঙাচ্ছে মৃত্যু ৬জনের

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৫৮ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন কিছুটা কমে আসলেও ডায়রিয়ার দাপট অব্যাহত থাকার মধ্যেই নতুন করে ডেঙ্গু চোখ রাঙাচ্ছে। বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্রই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়লেও প্রতিরোধ কার্যকব্রম খুবই দূর্বল। ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬ জেনর । যার সবই বরিশালে। প্রতিদিন গড়ে ৮০ জনেরও বেশী ডেঙ্গু রোগী দুটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ সরকারী হসপাতালগুলোতে আসছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে।

করোনার মত বরিশাল মহানগরীতেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এখনো সর্বাধিক। মহানগরীর শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুধবার সকাল পর্যন্ত ৭ শতাধিক ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন। গত ২১ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত ১২ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৩২ জন। এপর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। শুধুমাত্র সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আগত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাই স্বাস্থ্য বিভাগ নথিভ’ক্ত করে থাকে।
বুধবার সকাাল পর্যন্ত বরিশারে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৭৯ জন, জেলা হাসপাতালে ১৫২ জন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৩১ জন, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে আরো ৪২ জন, ভোলা জেলা ও উপজেলা হাসপাাতালগুলোতে ১১৮ জন, পিরোজপুরে ৩১৩ জন, বরগুনায় ২৭৩ জন ও ঝালকাঠীতে ৬০ জন ডেঙ্গু রোগী সরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এরমধ্যে বুধবার সকালে এ অঞ্চলের ৬ জেলায় হাসপাতালে ১৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তবে ডেঙ্গুর এ দাপটের মধ্যেই বরিশাল সিটি করপোরেশন সহ অন্যান জেলা ও ও উপজেলা সদরগুলোর পৌরসভার পাক্ষ থেকে মশক নিধনে খুব যোড়াল তৎপড়তা লক্ষনীয় নয়। খোদ বরিশাল মহানগরীর ডেপনগুলোর তিন-চতুর্থাংশ ভড়াট হয়ে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা রুদ্ধ হবার পাশাপাশি মশকের বংশের বিস্তার ঘটছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ৩০ টি ওয়ার্ডে মশা নিধনে নগর ভবনের কাছে মাত্র ১২টি ফগার মেশিন সহ কিছু হ্যান্ড স্প্রে মেশিন থাকলেও ওষুধ সংকট সহ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের উদাশীনতা ও অবহেলায় মশক নিধন অভিযান খুব যোড়াল নয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অপরদিকে গত মাসে আরো প্রায় ৩ হাজার ডায়রিয়া রোগী দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। ফলে গত মার্চ থেকে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত দক্ষিনাঞ্চলের ৬টি জেলার সরকারী হাসপাতালে আগত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬১ হাজারে পৌছেছে। নদী বেষ্টি দ্বীপজেলা ভোলার সরকারী হাসপালে এবার ১৪ হাজার ৩৫৩ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে। পিরোজপুরে আক্রান্ত ১২ হাজার ৬৩৬,পাটুয়াখালীতে ১৪ হাজার ৩৫৩,বরিশালে ১০ হাজার ২৫১, বরগুনাতে ৭ হাজার ৪ জন এবং ঝালকাঠীতে ৬ হাজার ৩৪৭ জন ডায়রিয়া রোগী গত কয়েক মাসে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে।
ডায়রিয়া চিকিৎসায় দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলার ৪২ উপজেলায় ১ হাজার সিসির প্রায় ৬০ হাজার ব্যাগ এবং ৪৫ হাজার ব্যাগ ৫শ সিসি আইভি স্যালাইন ছাড়াও এন্টিবায়োটিক সব ধরনের ওষুধের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা শনাক্তের সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে গত মাসে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৮৫ জন। তবে আগষ্টে এ অঞ্চলের ৪২ উপজেলায় যেখানে ১০৮ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছিল, সেখানে সেপ্টেম্বরে সংখ্যাটা দ্বিগুনেরও বেশী বেড়ে দাড়িয়েছিল ২৭৩ জনে। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেব অনুযায়ী ১ নভেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে সর্বমোট করেনা শনাক্তের সংখ্য ছিল ৫৪ হাজারেরও বেশী । মারা গেছেন ৬৯৩ জন। তবে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৩ হাজার ১৭৩ জন। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও করেনা শনাক্ত রোগী নেই বলে জানা গেছে।
সর্বশেষ হিসেবে বরিশালে করোনা আক্রান্ত ২২ হাজার ৪০ রোগীর মধ্যে মারা গেছেন ২৩৭ জন। পটুয়াখালীতে আক্রান্ত ৭ হাজার ১৮১ জনের মধ্যে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভোলাতে আক্রান্ত ৮ হাজার ৫২ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৯২ জন। পিারোজপুরে ৬ হাজার ৪৪২ জন করোনা রোগীর মধ্যে মারা গেছেন ৮৩ জন। অপরদিকে সর্বাধিক মত্যুহারের বরগুনাতে ৪ হাজার ৭৮০ জন করোনা রোগীর মধ্যে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীতে আক্রান্ত ৫ হাজার ৭৪৪ জন করেনা রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের। ২-১১-২০২২.

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন