ওলি-আউলিয়াগণের কারামতসমূহ নিঃসন্দহে আল্লাহর তরফ থেকে সাধারণ মানুষের জন্য শিক্ষাস্বরূপ। এসব কারামত তাদের হক্কানিয়াতের সত্যতা প্রমাণ করে। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো মুখাপেক্ষী হওয়া যাবে না। আল্লাহকে পেতে হলে ওলি-আউলিয়াগণের সোহবতে থাকতে হবে। ওলি-আউলিয়াগণ যে পথ অনুসরণ করে আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করেছেন আমাদেরও ওই পথে অগ্রসর হয়ে আল্লাহর রহমত লাভ করতে হবে। আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে খতিব এসব কথা বলেন।
নগরীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজম কমপ্লেক্সের খতিব মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক আজ জুমার বয়ানে বলেন, বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) ইসলাম সম্প্রসারণে অবিস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। তাঁর কারামতসমূহ দেখে বহু মানুষ ইসলামের প্রতি ধাবিত হয়েছেন। এসব ওলি-আউলিয়াগণের প্রতি আনুগত্য পোষণ করতে হবে। খতিব বলেন, ওলি-আউলিয়াগণের কারামতসমূহ নিঃসন্দহে আল্লাহর তরফ থেকে সাধারণ মানুষের জন্য শিক্ষাস্বরূপ। এবসব কারামত তাদের হক্কানিয়াতের সত্যতা প্রমাণ করে। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো মুখাপেক্ষী হওয়া যাবে না। আল্লাহকে পেতে হলে ওলি-আউলিয়াগণের সোহবতে থাকতে হবে এবং তাদের নিদের্শিত পথ ও মত অনুসরণ করতে হবে। খতিব বলেন, বিভিন্ন বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, আগামীতে দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা রয়েছে। অঘোষিত এই দুর্ভিক্ষ থেকে নিজেদেরকে হেফাজতের লক্ষ্যে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে হবে। আল্লাহ চাইলে শুষ্ক মরুরবুকে সবুজ শষ্যভা-ার গড়তে পারেন। আবার তিনিই পারেন মাটির উর্ব্বরত কেঁড়ে নিতে। খতিব বলেন, ওলি-আউলিয়াগণ যে পথ অনুসরণ করে আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করেছেন আমাদেরও ওই পথে অগ্রসর হয়ে আল্লাহর রহমত লাভ করতে হবে।
খতিব মুফতি রুহুল আমিন আজ জুমার বয়ানে বলেন, মহান আল্লাহর হুকুম পালনে পরিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ঘুষ দেয়া এবং নেয়া উভয়ই গুনার কাজ। যত পাবো তত খাবো এ নীতি থেকে সরে আসতে হবে। জনগণের রক্ত শোষণ করে অর্থ কামাইয়ের প্রতিযোগিতা পরিহার করতে হবে। খতিব বলেন, খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সৃষ্টি জগতের এমন কোনো মাখলুখ নেই যাদের খাবারের দায়িত্ব আল্লাহ নেননি। রিযিকের একমাত্র মালিক মহান আল্লাহ। রিযিকের অপচয় রোধে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। খতিব বলেন, যদি ঈমান থাকে যে আমরা নিশ্চিত আল্লাহর কাছে ধরা খাবো তা’হলে ক্ষমার আশায় গুনার কাজে লিপ্ত হওয়া যাবে না। আল্লাহ ভীতি থাকলে পিতা-মাতার হক, স্ত্রীর হক প্রতিবেশির যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। নবী (সা.) এর আদর্শ বিশ্ববাসীর জন্য কল্যাণকর। সমাজ রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্যই আল্লাহর হুকুম পালন এবং নবী (সা.) আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহপাক নবী (সা.) এর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন জালেমের দিকে একটুও ঝুকা যাবে না। হারাম হালালের বিষয়গুলো মাথায় রেখে জালেমদের দিকে সামান্য একটিু ঝুকা হলেও জাহান্নামের আগুন থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না। খতিব বলেন, দুনিয়াটা পরীক্ষার জায়গা। স্বাধীনতার মানে এমনটা নয়; যে আমরা ইসলামের হুকুমতকে পাশ কাটিয়ে বেদীন হয়ে যাবো। তিনি বলেন, যার যতবড় দায়িত্ব তার পুরষ্কারও ততবড়। তিরষ্কারও ততবড়। মানবজাতির হেদায়েতের জন্য আল্লাহপাক পবিত্র কোরআন নাযিল করেছেন। তিনি বলেন, আজ সব আছে কিন্ত আমল নেই। পবিত্র কোরআনের শিক্ষা গ্রহণ করে আমলের পরিমাণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন খতিব।
মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, মুমিন হওয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান আনা। কেউ যদি রাসূল (সা.) এর প্রতি ঈমান না আনে, সে মুমিন নয়। তাই আল্লাহর প্রতি যেমন ঈমান আনতে হবে, ঠিক তেমনই রাসূল (সা.) এর প্রতিও ঈমান আনতে হবে। রাসূলের সা. প্রতি ঈমান আনার অর্থ হল, তিনি আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ নবী ও রাসূল। এটা বিশ্বাস করা এবং সাক্ষ্য দেয়া। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, মুহাম্মাদ তোমাদের কোনো পুরুষের পিতা নন; তবে তিনি আল্লাহর রাসূল এবং নবীগণের মধ্যে সর্বশেষ। আল্লাহ সর্ববিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞাত। (সূরা আহযাব-৪০)। স্বয়ং রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি সর্বশেষ নবী। আমার পর কোনো নবী নেই। (বুখারী, হাদীস নং- ৩৫৩৫)। সুতরাং রাসূলুল্লাহর পর কেউ যদি নিজেকে নবী দাবি করে, সে মিথ্যাবাদী এবং কাফের। তেমনিভাবে যারা এই মিথ্যানবীকে নবী বা মুজাদ্দিদ, মাহদী বা মাসীহ কিংবা তার অনুরূপ, অথবা ঈমানদার নেককার মনে করবে তারাও কাফের। মুমিনের দায়িত্ব হচ্ছে, নবীজির প্রতি পূর্ণ আস্থা ও ভালোবাসা রাখা। তার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা। অবমাননা তো দূরের কথা; শুধু তার সামান্য অসম্মান বা কষ্টের কারণ হয়, এমন সব কথা ও আচরণ থেকে বিরত থাকা। তার প্রতি অবতীর্ণ কোরআনকে সর্বশেষ ওহী-গ্রন্থ হিসাবে মেনে নেয়া। তার শরীয়তকে আল্লাহ প্রদত্ত সর্বশেষ ইসলামী শরীয়ত হিসাবে গ্রহণ করা।
খতিব আরও বলেন, রাসূলের প্রতি ঈমান আনার অর্থ এটাও বিশ্বাস করা যে, রাসূল (সা.) কে আল্লাহ তায়ালা যেসকল দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছেন সেগুলোর প্রত্যেকটি তিনি যথাযথ আদায় করেছেন। তার সে দায়িত্বগুলোর বিবরণ কোরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে বর্ণিত হয়েছে। এই সকল দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি যা করেছেন এবং যা বলেছেন সবকিছু বিশ্বাস করা এবং মনেপ্রাণে মেনে নেয়া তার প্রতি ঈমানের অংশ। তিনি আল্লাহ প্রদত্ত এইসব দায়িত্ব পালনার্থে যা বলেছেন বা করেছেন সেটাই হাদীস ও সুন্নাহ। কোরআনের ভাষায় ‘হিকমাহ’ ও ‘উসওয়ায়ে হাসানাহ’। সেটা গ্রহণ ও অনুসরণ করাকে কোরআন ফরজ করেছে এবং মান্য করাকে ঈমানের শর্ত সাব্যস্ত করেছে। সুতরাং যদি কেউ বলে, কোরআন মানি, হাদীস মানি না, তবে সে ঈমানের গ-ির বাইরে চলে যাবে। কারণ হাদীস অস্বীকারের অর্থই হচ্ছে নবীজী (সা.) কে অবমাননা করা। হাদীস অস্বীকারকারী এসব নব্য আহলে কোরআনের প্রতারণার ব্যাপারে হুঁশিয়ার থাকতে হবে। তাদের কুফরী চিন্তা-ধারার প্রচার-প্রসার এখন আমাদের দেশে, এমনকি আমাদের রাজধানীতেই চলছে। এটা রুখতে প্রয়োজন সতর্কতা ও বিচক্ষণতা। মুমিনের জন্য ঈমান সবচেয়ে বড় সম্পদ। এই সম্পদ হেফাজত করা ফরজ। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন, আমীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন