খুন, ধর্ষণ, মাদক কারবারিসহ যেসব সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি সম্প্রতি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন, তাঁদের ভাড়াটে সৈন্য হিসেবে ইউক্রেনে পাঠাচ্ছে রাশিয়া। সম্প্রতি দেশটির রিজার্ভ সৈন্যদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে এমন সাজাপ্রাপ্তদের ইউক্রেনে যুদ্ধে পাঠানোর জন্য সেনাবাহিনীতে ভর্তি করতে আইনও সংশোধন করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে খুন, শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের মতো বিষয়ে জড়িত থাকাদের ভর্তি করা হতো না। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো আংশিক মোবিলাইজেশনের পর রাশিয়ার তরফ থেকে সদ্য সাজা থেকে মুক্ত হওয়া ব্যক্তিদেরও রিজার্ভ সৈন্য হিসেবে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘের নিযুক্ত দ্য ইনডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি অন ইউক্রেন গত সেপ্টেম্বরে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, কিছু রুশ সৈন্য ইউক্রেনে ব্যাপক হারে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা, যৌন নির্যাতনসহ নানা ধরনের অপরাধে যুক্ত হয়েছে। তবে ইউক্রেনের দাবি, রুশ সৈন্যরা এমন কয়েক হাজার অপরাধ সংঘটিত করেছে।
জাতিসংঘের তদন্ত এবং ইউক্রেনের দাবির পরও রাশিয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিক হত্যার বিষয়টি রাশিয়া কোনোভাবেই স্বীকার করেনি। উল্টো রাশিয়া অভিযোগ করেছে, ইউক্রেনের সৈন্যরাই রুশনিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে কামান হামলার মাধ্যমে নির্বিচারে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করছে। তবে ইউক্রেন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এদিকে জাতিসংঘের কমিশন জানিয়েছে, তাঁরা ইউক্রেনীয় সৈন্য কর্তৃক রুশ সৈন্যদের ওপর বাজে আচরণের প্রমাণ পেয়েছে। তবে রাশিয়ার সৈন্যদের অপরাধের তালিকা অনেক বেশি দীর্ঘ। কমিশনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওয়েগনার মার্সেনারি গ্রুপ নামে একটি গোষ্ঠী সাজাপ্রাপ্তদের সাজা কমানোর লক্ষ্যে রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য ভাড়াটে সৈন্য হিসেবে নিযুক্ত করছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রাশিয়ার আইনে মার্সেনারি হিসেবে কাজ করার বিনিময়ে সাজা কমানোর কোনো সুযোগ নেই। তবে ওয়েগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বলেছেন, যারা তার প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করে তাদের কেউ কারাগারে ফিরে যায় না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন